মিথ্যা বলে শ্বশুরবাড়ির লোক, পরে সবাই জানতে পারে আমি রেলে চাকরি করি না: রূপঙ্কর বাগচী

EXCLUSIVE Rupankar Bagchi: বিয়ের সময় কোন মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন রূপঙ্করের শালাবাবু? বিয়ের ২৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রথম মুখ খুললেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। স্ত্রীর প্রতি প্রেম জাহির করলেন অকপট।

মিথ্যা বলে শ্বশুরবাড়ির লোক, পরে সবাই জানতে পারে আমি রেলে চাকরি করি না: রূপঙ্কর বাগচী
চৈতালী এবং রূপঙ্কর।
Follow Us:
| Updated on: Jun 29, 2024 | 12:56 PM

দেখতে-দেখতে একসঙ্গে ২৬টি বসন্ত পার করলেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালী বাগচী। ২৭ জুন ছিল তাঁদের ২৫তম বিবাহবার্ষিকী। বিয়ের আগে একবছর ছিল তাঁদের প্রেমপর্ব। বিয়ের সময়কার কিছু ঘটনা TV9 বাংলা ডিজিটালকে শেয়ার করেছেন রূপঙ্কর। প্রথম জানালেন পাত্র হিসেবে তাঁকে পছন্দ করেননি চৈতালীর বাড়ির লোকজন। এখন যখন সম্পর্ক ভঙ্গুর অনেকক্ষেত্রেই, কোন মন্ত্রবলে ২৬টা বছর একে-অপরের সঙ্গে কাটিয়ে দিলেন রূপঙ্কর-চৈতালী, মনের ঝাঁপি খুললেন গায়ক।

পাত্র হিসেবে আমি খুব খারাপ ছিলাম

আমার এবং চৈতালীর থিয়েটারের প্রেম। আমরা নাটক করতাম নান্দিপঠ দলে। আমাদের আলাপ হয় সেখানেই। প্রথমে আমরা খুব ভাল বন্ধু ছিলাম। তারপর সেখান থেকে প্রেমের সূত্রপাত। বিয়ের ২৫ বছর এবং প্রেমের এক বছর মিলিয়ে আমার আর চৈতালীর পথচলা ২৬ বছরের। দেখা-সাক্ষাৎ এবং প্রেমের এক বছরের মাথাতেই আমাদের বিষয়টা ছাদনাতলায় পৌঁছায়। আমার বাড়ি ছিল উদার। চৈতালীকে সঙ্গে-সঙ্গে মেনে নিয়েছিল। কিন্তু চৈতালীর পরিবার আমাদের সম্পর্ক মানতে চাইছিল না। কারণ ছিলাম আমি। এখন তো আমার একটু নাম হয়েছে। তখন আমি স্ট্রাগল করি। কেউ চিনত না আমায়। অনিশ্চয়তার জীবন ছিল। তাই ওর বাড়িতে পাত্র হিসেবে আমি খুবই খারাপ ছিলাম।

মিথ্যার আশ্রয় নেন চৈতালীর দাদা

স্ট্রাগল করছিলাম মাত্র। চাকরি-বাকরিও করি না। এমন এক পাত্রর হাতে কোন বাড়ির লোকে মেয়ে তুলে দেবে। চৈতালীর দাদারা ছিলেন খুবই খুঁতখুঁতে। সে যাই হোক, আমার কাছে মেয়েকে শেষমেশ তুলে দিলেন তাঁরা। এবং এক অদ্ভুত কাণ্ড ঘটে গেল বিয়ের দিন। আজও ঘটনাটা মনে পড়লে হাসি পায়। নাটক-গানবাজনা করা এক ছেলের হাতে কন্যাকে তুলে দিচ্ছেন পাত্রীপক্ষ, এই সত্য লুকনোর জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন চৈতালীর দাদা। তাঁর অফিসের লোকজনকে বলা হয়, আমি নাকি রেলে সরকারী চাকরি করি, ভাবুন!

ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসে সত্য

তবে সত্য কি চাপা থাকে! কোনও না-কোনওদিন বেরিয়ে আসেই। আমি যখন গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাই, চৈতালীর দাদার অফিসের লোকজন বলতে শুরু করেন, “ও মা, ও তো, রেলে চাকরি করত। এখন করে না?” চৈতালীর বাড়ির লোকই ভুল ভাঙিয়ে বলেছিলেন, “ও তো কস্মিনকালেও চাকরি করত না। তোমাদের মিথ্যা বলা হয়েছিল।” তবে এখন পরিস্থিতি পুরো পাল্টে গিয়েছে। চৈতালীর বাড়ির কাছে আমি ওদেরই ছেলে। শালাবাবুদের কাছে আমি ইয়ার-দোস্ত। সময় সব পাল্টে দেয়।

আমাদের সম্পর্কের ইউএসপি বন্ধুত্ব

পাত্র খারাপ হতে পারি, কিন্তু চৈতালীর হাতটা আমি ছাড়িনি। সেই কারণেই আমাদের বিয়েটা হয়েছিল এবং আজও আমরা সংসার করছি। আমার কাছে চৈতালী একজন বন্ধু। আমাদের সম্পর্কের সেটাই ইউএসপি। আমরা কেউ কারও থেকে কিচ্ছু লুকাই না। আমরা একে-অপরের কাছে কাঁচের মতো স্বচ্ছ। এখনকার দিনে সম্পর্কে নিষ্ঠা ব্যাপারটা খুব বেশি দেখতে পাই না। গোপনীয়তা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই ডিভোর্সের সংখ্যাও বেড়েছে। আমরা লাকি যে, আমাদের সম্পর্কে বন্ধুত্বের জায়গাটা কোনওকালে নষ্ট হয়নি।

চৈতালীর জন্য ছোট্ট বার্তা

চৈতালীকে একটাই কথা আমার বলার আছে–লক্ষ্মীটি নিজের শরীরে খেয়াল রাখো। একটু হাঁটাহাঁটি করে, এক্সারসাইজ় করো। তোমার কাছে আমার একটাই একমাত্র চাওয়া। তোমার শরীর সুস্থ থাকলেই আমি শান্তি পাই।