Aindrila Sharma: ‘মা’ ঐন্দ্রিলার দুই সন্তানের খোঁজ নিতে আজ তাদের কাছে যাবেন মৃত অভিনেত্রীর বান্ধবী

Aindrila Sharma Pets: কথা বলতে না-পারা ‘পাগ’ প্রজাতির নিষ্পাপ দুই পোষ্য আকুল হয়ে খুঁজছে ঐন্দ্রিলাকে, খুঁজছে সেই চেনা স্পর্শ, চেনা ডাক, চেনা গন্ধ। 'মা'-এর মৃত্যুর পর এখন কী করছে বোজ়ো আর তোজো?

Aindrila Sharma: 'মা' ঐন্দ্রিলার দুই সন্তানের খোঁজ নিতে আজ তাদের কাছে যাবেন মৃত অভিনেত্রীর বান্ধবী
ঐন্দ্রিলা শর্মা এবং তাঁর ব্রজ এবং তোজো...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 22, 2022 | 1:56 PM

স্নেহা সেনগুপ্ত

ওরা নির্বাক। ভাষার মধ্যে আছে শুধুমাত্র ভীষণ চেনা ‘ঘেউ’ ডাকটাই। ওরা কথা বলতে পারে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে পারে না। জাহির করতে পারে না যন্ত্রণা। কিন্তু অফুরাণ ভালবেসে যেতে পারে। পায়ের কাছে লুটিয়ে কাঁদতে পারে। ওরা অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার দুই পোষ্য—ওদের নাম বোজ়ো এবং তোজো। সারাক্ষণই ওরা অভিনেত্রীর পায়ে-পায়ে ঘুরে বেড়াত। ওদের ক্যান্সারজয়ী ‘মা’ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার, ২০ নভেম্বর চিরতরে ঘুমিয়ে পড়েছেন। অভিনেত্রীকে আর দেখতে পাবে না বোজ়ো আর তোজো। কথা বলতে না-পারা ‘পাগ’ প্রজাতির নিষ্পাপ দুই পোষ্য আকুল হয়ে খুঁজছে ঐন্দ্রিলাকে, খুঁজছে সেই চেনা স্পর্শ, চেনা ডাক, চেনা গন্ধ। খুঁজছে তাদের ‘মা’কে। ‘মা’-এর মৃত্যুর পর এখন কী করছে বোজ়ো আর তোজো? কেমন আছে তারা? খোঁজ নিল TV9 বাংলা…

TV9 বাংলার তরফে ফোন করা হয়েছিল পারমিতা সেনগুপ্তকে। তিনি পেশায় একজন চিত্রনাট্যকার। ঐন্দ্রিলা শর্মার সহকর্মী এবং অত্যন্ত প্রাণের বন্ধু। অভিনেত্রীর কেমোথেরাপির সময় নিজের সমস্ত চুল কেটে ‘ন্যাড়া’ হয়ে বন্ধুকে মনবল জোগানো সেই পারমিতা কথা বলতে-বলতে কেঁদে ফেললেন সোমবার দুপুরে। তাঁর সঙ্গেই কথা হয় বোজ়ো-তোজোকে নিয়ে। বললেন, “আমরা মানুষ। কথা বলতে পারি। এই যেমন আপনার সঙ্গে কথা বলছি। কিন্তু বোজ়ো-তোজো… ওরা তো পারে না। ওদের জন্য়ে আমাদের প্রাণ ফেটে যাচ্ছে…”

পোষ্যদের মধ্যে ব্রজই ছিল ঐন্দ্রিলার বেশি আপন। তোজো তুলনায় বেশি কাছের ঐন্দ্রিলার দিদি ঐশ্বর্যর। বোজ়ো অফ-হোয়াইট পাগ। তিন বছর বয়স ব্রজর। তোজো কালো পাগ। বোজ়োর চেয়ে তোজো খানিকটা ছোট। হয়তো সেই কারণেই শূন্যতা টের পেলেও বোজ়োর মতো ভেঙে পড়েনি। পারমিতা বলেছেন, “২০ নভেম্বর বোজ়ো-তোজো কোনও কারণে টের পায়, ওদের মা বাড়িতে আসছে। এ দিকে, গোটা দুনিয়ার কাছে ততক্ষণে খবর চলে গিয়েছে, ঐন্দ্রিলা আর ফিরবেন না। কিন্তু বোজ়ো-তোজো কি তা বুঝতে পেরেছিল? তারা তো জানে মা ফিরছে। কিন্তু এই ফেরা যে আর শেষমেশ না-ফেরায় বদলে যাচ্ছে, সেটা বুঝতেও ওদের বেশি সময় লাগেনি।”

এরপর বাড়ির দীর্ঘদিনের পরিচারিকার কোলে মুখ গুঁজে কাঁদতে শুরু করে বোজ়ো-তোজো। তারপর দরজায় টোকা পড়তে ছুট্টে চলে যায় সেদিকে। ১ নভেম্বর থেকে ঐন্দ্রিলা হাসপাতালে ভর্তি। পারমিতার কথায়, “বোজ়ো তো ওর খুব ন্যাওটা। তাই-ই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দিন থেকেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ হয়ে দিয়েছিল সে। সারাক্ষণ ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকত। গতকাল (রবিবার, ২০ নভেম্বর) যখন ঐন্দ্রিলাকে শেষবারের মতো বাড়িতে নিয়ে আসা হয়, ওর উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বোজ়ো। অনেক কষ্টে ওকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।” তিনি আরও জানিয়েছেন, আজ, সোমবার সন্ধ্যায় বোজ়ো-তোজের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন তাঁরা। কান্না ভেজা গলায় পারমিতার সংযোজন, “গিয়ে দেখছি কী করা যায়। দেখি যদি ভুলিয়ে-ভালিয়ে খাওয়ানো যায় কি না। খুব কষ্ট পাচ্ছে জানেন তো…” দুই ‘মূক’ জীবের অব্যক্ত যন্ত্রণার কথা শেয়ার করতে-করতে এরপর গলা ধরে আসে পারমিতার।