শ্রীময়ী গাড়ির দরজা আটকাল, আমার বাচ্চাটা তখন কাটা ছাগলের মতো ভয়ে কাঁপছে: পিঙ্কি

সম্পর্ক উথালপাথাল, প্রকাশ্যে এসেছে তিক্ততা। স্বামী কাঞ্চন মল্লিক এবং স্বামীর 'বিশেষ বন্ধু' ও পাল্টে যাওয়া সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে মুখ খুললেন পিঙ্কি।

শ্রীময়ী গাড়ির দরজা আটকাল, আমার বাচ্চাটা তখন কাটা ছাগলের মতো ভয়ে কাঁপছে: পিঙ্কি
গ্রাফিক- অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2021 | 8:01 PM

হঠাৎ করেই ব্যক্তিগত জীবনের পর্দা উড়ে গিয়েছে কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়ায়। ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি থেকে সম্পর্কের সমীকরণ, বদলাতে শুরু করেছে ক্রমশ। বৈবাহিক জীবনে তৃতীয় ব্যক্তির আগমনের অভিযোগে উত্তাল কাঞ্চন-পিঙ্কির সংসার। এরই মধ্যে হুমকি এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে থানায় কাঞ্চন এবং শ্রীময়ীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পিঙ্কি…কেন উঠল ঝড়? কী হয়েছিল শনিবার রাতে? TV9 বাংলা পিঙ্কিকে ফোন করতেই কেঁদে ফেলেন তিনি…রইল তাঁর বয়ানে সেদিনের ঘটনার বিবরণ…

মিডিয়ার দৌলতেই আমি জেনেছিলাম কাঞ্চা এবং শ্রীময়ীর সম্পর্কের কথা। এত দিনের বিবাহিত জীবনে ওঁর অভিনয়ের জন্য, কাজের জন্য কত মেয়ে এসে গালে চুমু খেয়েছে, আই লাভ ইউ বলেছে…কখনও খারাপ লাগেনি। কিন্তু এই খবরে অবাক হয়েছিলাম। আরও অবাক হয়েছিলাম যখন শ্রীময়ী মিডিয়ায় বলে বেরাচ্ছিল আমার সঙ্গে ওঁর নাকি ভীষণ ভাল সম্পর্ক। কই, আমার মা হাসপাতালে থাকতে ও তো একবারও খোঁজ নেয়নি, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে একবারও ফোন করে জানতে চায়নি, পিঙ্কিদি বাচ্চাটা কেমন আছে? কাঞ্চন ধরে নিল মিডিয়াকে আমি জানিয়েছি ওঁর আর শ্রীময়ীর অ্যাফেয়ারের কথা। শনিবার আমাকে হঠাৎই দুজনে মিলে ফোন করতে শুরু করে। আমার ঠাকুমা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ৮৩ বছর বয়স ওই অনবরত ফোনে ভয় পেয়ে যান। আমি তখন আমার চেতলার বাড়িতে। নিউ আলিপুরে আমার আরও এক বাড়ি আসে। ঠাকুমা সেখানেই। আমি চেতলার বাড়ি থেকে নিউ আলিপুরে চলে আসি। কাঞ্চন আমায় ফোন করতে থাকে এখুনি দেখা করতে হবে। শ্রীময়ী ফোন করেছিল, আমি ধরিনি। আমাকে ভয়েস মেসেজ পাঠাল, তুমি রেডি থাক, আসছি।

আমার মনে হল আমার বাবা-মা চেতলার বাড়িতে। আমার বাচ্চাটাও ওখানে। আবারও গাড়ি নিয়ে ব্যাক করলাম ওই বাড়ি। ভাবলাম বাচ্চাটাকে নিয়ে নিউ আলিপুর চলে আসব। বাচ্চাটাকে নিয়ে যখন আমি বেরিয়েছি সবে, বসুধা বিয়েবাড়ি পার করেছি, পথ আটকে দাঁড়াল ওঁরা। শুরু হল হেনস্থা। গাড়ি আটকানোর চেষ্টা। শ্রীময়ী চট্টরাজ গাড়ির দরজা আটকে রেখেছিল। কাঞ্চন মল্লিক আমাকে গাড়ি থেকে নামানোর চেষ্টা করছিল। আমার আট বছরের বাচ্চাটা তখন কাটা ছাগলের মতো ভয়ে কাঁপছে। থানা-পুলিশ করতে আমি চাইনি। কিন্তু কালকের পর থেকে আমি যে আর পারছিলাম না।

আরও পড়ুন-আমি তো একজন স্বতন্ত্র মানুষ, উনি তো কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী হয়ে বাঁচেন: শ্রীময়ী চট্টরাজ

১৫০০টাকার তাঁতের শাড়ি পরে আমার আর কাঞ্চার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর ২২ দিনের বাচ্চাকে নিয়ে বাবা-মা’র কাছে চলে আসি আমি। অনেক কারণ ছিল। আমি ওয়ার্কিং মাদার। শ্বশুর-শাশুড়ি অসুস্থ, বাচ্চাকে কে দেখবে এই ভেবে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলাম আট বছর আগে। কিন্তু দু’বাড়িতেই দু’জনের যাতায়াত ছিল। প্রেম ছিল, রাগারাগি ছিল, অভিমানও ছিল। এই লকডাউনে দেখলাম আট বছরের বাচ্চা কী দিয়ে খাচ্ছে একবারও ফোনেও জানতে চাইল না। তখনই বুঝলাম সম্পর্কটা একেবারে কেটে দিয়েছে।

একটা কথা বলি, শুধুই কি বাচ্চাকে কে দেখবে সেই কারণে ২২ দিনের বাচ্চাকে নিয়ে একটা মেয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে? কাঞ্চন মল্লিক ‘ডক্টর জ্যাকেল মিস্টার হাইড।’ অনেকেই বলতে পারেন, এত দিন কেন বলেননি? কেন চুপ ছিলেন? শুনুন, কাঞ্চনের বিরুদ্ধে যদি বলার হতো তাহলে অনেকদিন আগেই আমি বলতাম। কথা বললে পুরো ইমেজটা চলে যাবে ওঁর, অনেক কষ্ট করে দাঁড় করিয়েছে নিজেকে সে জন্য চুপ ছিলাম। এ বারেও তো কিছু বলিনি আমি। সম্পর্কের তাল কাটছে বুঝেও একটা কথাও বলিনি, অথচ কাঞ্চা ভাবল, আমি সব মিডিয়াকে বলেছি। আমি নাকি ইচ্ছে করে এগুলো করেছি। কাল যখন একের পর এক ঘটনাগুলো ঘটছে, আমি বুঝতে পারছিলাম না কী করব। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি আমি। কাল সারারাত আমার বাচ্চাটা পাশে শুয়ে বলেছে, “, ‘ মাম্মাম বাবা তোমায় কিছু করবে না তো? দাদুকে ফোন করে বলছে, “তুমি বাবাকে আর শ্রীময়ী আন্টি এলে দরজা খুলবে না…। ওর অবস্থাটা ভাবুন তো একবার।

আরও পড়ুন :শ্রীময়ী-কাঞ্চনের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ পিঙ্কি, ‘…হারাতে চাই না’, ভেঙে পড়লেন কান্নায়

খুব সুখে ছিলাম আমি। হ্যাঁ, হয়তো বড় গাড়ি-বাড়ি কিছুই আমার নেই। তবু ছিল অনেক কিছুই। ছেলের সঙ্গে হেঁটে হেঁটে বাজারে যাওয়া, ছেলে আমার ব্যাগ বয়ে আনছে, ছোট হাতে পারছে না, তাও আনছে,। একসঙ্গে আকাশের তারা গোনা… সব কিছু ছিল। আগামী কী হতে চলেছে আমি সত্যিই জানি না। অনেক হিসেব মিলছে না কিছুতেই…।

।। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে TV9 বাংলার তরফে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।।