সন্তানের বাবা হতে না পারা নিয়ে TV9 বাংলার কাছে মুখ খুললেন অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়
Subhashish Mukhopadhyay Secrets: অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের জীবনে অপূর্ণতা আছে। অপূর্ণতা এটাই--তিনি সন্তানের পিতা হতে পারেননি। এই নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন অভিনেতা। ৩৮ বছরের দাম্পত্য তাঁর। সেই দাম্পত্য কেমন, জানালেন TV9 বাংলাকে।
স্নেহা সেনগুপ্ত
ফোনের ওপারে কণ্ঠে আনন্দ ঝরে পড়ছিল মানুষটার। দূর থেকে শোনা যাচ্ছিল বাউলের টুংটাং। ‘হ্যালো’, বলতেই বোঝা গেল ‘হলি ডে’ মুডে আছেন অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। কলকাতায় একটা বাড়ি, বোলপুর-শান্তিনিকেতনে আর-একটা বাড়ি অভিনেতার। ২৫ মার্চ রঙের উৎসব দোল। আর প্রতিবছরই শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবের দিকে চাতকপাখির মতো চেয়ে থাকেন তিনি। এই সময়টায় সেখানে ভিড় হয় খুবই। কিন্তু নিজস্ব কেনা বাড়ি থাকায় কোনও ঝামেলাই পোহাতে হয় না শুভাশিস এবং তাঁর স্ত্রী ঈশিতা মুখোপাধ্যায়কে।
ঈশিতা মুখোপাধ্যায়। বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলা নাট্যজগৎকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন তিনি। লাইমলাইটে থাকেন না। শুভাশিসের সঙ্গে আলাপও এই নাটকের জন্যই। বসন্তের দখিনা বাতাসে নিজের প্রেয়সীকে আরও কাছে পাওয়ার সময়। শুভাশিসের মনেও সেই রং ধরেছে বোঝা গেল। মৃদু হাসিতে বোঝালেন, “আমি তো বোলপুরে একা আসিনি। তিনি থাকতে একা আসব কেন? তাঁকে ছাড়া কি চলা যায়?” বলাই বাহুল্য, এই ‘তিনি’ হলেন শুভাশিসের স্ত্রী ঈশিতা। তাঁর মা, অর্থাৎ শুভাশিসের শাশুড়িমায়ের জন্মদিন দোলে। ফলে তাঁকে বিশেষ আনন্দ দিতে লাল মাটির দেশে চলে এসেছেন প্রেম-প্রেম সময়টায়।
শুভাশিস তখন হঠাৎই হাঁটতে শুরু করলেন স্মৃতির সরণী দিয়ে। ঈশিতার সঙ্গে তাঁর আলাপ, প্রেম–৩৮ বছর আগেকার কথা। ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেছিলেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায় এবং ঈশিতা মুখোপাধ্য়ায়। আলাপ এবং প্রেমপর্ব মিলিয়ে প্রায় ৪ দশকের সম্পর্ক। আসন্ন ৬ মে বিবাহবার্ষিকী দম্পতির। বললেন, “কলকাতার ম্যাক্সমুলার ভবনে একটা নাটক করতে গিয়ে ঈশিতার সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। তারপর বন্ধুত্ব এবং প্রেম। বিয়েটাও করলাম আমরা।” স্ত্রী সম্পর্কে উচ্চপ্রশংসা করলেন। বললেন, “ওর মতো মেয়ে হয় না। আমি ওকে পেয়ে সত্যিই নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করি।”
একদিকে বাণিজ্যিক ছবিতে হাস্যরসে ভরা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুভাশিস। অন্যদিকে ‘হারবার্ট’-এর মতো ছবিতেও তাঁকে দেখা যায় সিরিয়াস মেথড অভিনয় করতে। ‘মহালয়া’ ছবিতে শুভাশিস লাজবাব। সিরিয়ালেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। কিন্তু তাঁকে সবচেয়ে বেশি দর্শক মনে রেখেছেন কমিক চরিত্রের জন্য। লোককে হাসাতে থাকা অভিনেতার জীবনে একটুখানি বিষণ্ণতাও আছে হয়তো। সেই বিষণ্ণতা কিংবা পূর্ণতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে নিজের দুঃখটাকে ঢেকে রাখার চেষ্টাই করেন অভিনেতা। সন্তানের পিতা হতে পারেননি তিনি। বললেন, “আমি সন্তানের বাবা হতে পারিনি তো কী আছে! এই নিয়ে আমার কোনও দুঃখ নেই। দিব্যি আছি আমি আর ঈশিতা।”
শুভাশিস মনে করেন একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী থাকা খুব দরকার। তাঁর সেই আদর্শজীবন সঙ্গী হলেন স্ত্রী ঈশিতা। সুন্দরী স্ত্রী সম্পর্কে প্রশংসা করা হলে আজও ঠোঁটের কোণে হাসি মাখিয়ে শুভাশিস বলেন, “হা হা, থ্যাঙ্ক ইউ, ঈশিতাকে বলে দেব আমি কথাটা। ওর ভাল লাগবে।”