সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়
অভিষেকের চলে যাওয়ার শোক আমাদের জর্জরিত করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেকটাই নিজেকে বিরত রেখেছিলাম। কিন্তু অনেক কিছুই কানে আসছিল। ওই শোকের মধ্যেও শুনতে পারছিলাম, অনেকে বলাবলি করছিল, তাঁরাও শুনতে পাচ্ছিলেন, ‘সো অ্যান্ড সো অ্যাক্টর’, যাঁকে নিয়ে অভিষেক নিজে খুশি ছিল না, সে নাকি ১০ লাখ টাকা দিয়েছে। সে সব শুনে আমি চুপ ছিলাম। তারপর কানে এল একজন অভিনেত্রী—যাঁর সঙ্গে অভিষেকের কোনও ঘনিষ্ঠতা ছিল না, বরং ওঁর কেরিয়ার নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যা-যা করার করেছে যে সময় অভিষেক কেরিয়ারে পিকে ছিল, সে সময় ২২টা ছবি থেকে অভিষেককে হটিয়ে দিয়েছিল—নাকি ৫ লাখ টাকা দিয়েছে। আমি তখনও চুপ ছিলাম।
তৃতীয়ত আমি শুনলাম, কোনও এক ক্রিকেটার নাকি আমার-অভিষেকের কন্যা ডলের পুরো দায়িত্ব নিয়েছে। এত কিছু শুনে আমি সত্যিই খুবই মর্মাহত হয়েছি। শুনেছিলাম অভিষেক নাকি আর্থিক সমস্যায় ছিল। মনে হল, এবার সময় এসেছে। চুপ করে থাকলে একেবারেই চলবে না। বার বার মনে হল, এ সব শুনলে অভিষেকের আত্মা কোনওদিনই শান্তি পাবে না। মানসিকভাবে মনে হচ্ছিল অভিষেকই আমাকে বলছে যে, ‘তুমি ল্যাপটপটা ধরো, শুরু করে দাও…’।
তখন আমি সব লিখলাম। আমি নিজে একটি ইউকে বেসড সংস্থায় চাকরি করি। আজ যদি অভিষেক কাজ না-ও করত, আমাদের কিন্তু চলে যেত। আমার আয় সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট। ও প্যাশনের জন্যই অভিনয় করত। তা হলে আমরা কেন কারও কাছে হাত পাতব? অভিষেক দারুণ অভিনেতা। ওর কাজ দারুণ ভাল। টাকা-পয়সার জন্য চিন্তিত হওয়ার তো কোনও কারণই নেই। এই বাড়িটা আমাদের। আমাদের নিজেদের গাড়ি আছে। সব কিছু আমাদের নিজের আয়ে কেনা। কারও কাছে আমাদের কোনও ধারও নেই। অভিষেক কিন্তু আমাকে আর ডলকে খুবই সুরক্ষিত রেখে গিয়েছে। এসব কানে আসার পর আমার মনে হল লেখাটা খুব দরকার।
অভিষেক আর নেই। ওর অভাব সারাজীবন থাকবে। আমি সত্যি জানি না ওকে ছেড়ে কীভাবে বাঁচব। কিন্তু মনকে এই ভেবে শক্ত করছি, ও কেবলই নিজের শরীরটা ত্যাগ করেছে। কিন্তু ও মানসিকভাবে আমার সঙ্গে রয়েছে। এই কাজগুলো মনে হচ্ছে অভিষেকই আমাকে করিয়ে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: Rituparna Sengupta: এবার প্রিয়জন হারা হলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সময়টা সত্যিই ভাল যাচ্ছে না টলি কুইনের