AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Arpita Mukherjee: যার হাত ধরে টলিউডে উত্থান, তাঁকেই জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলেন ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ অর্পিতা!

Tollywood: কে সেই ব্যক্তি? তিনি প্রযোজক গৌতম সাহা। সুন্দরী অর্পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন নায়িকা হওয়ার।

Arpita Mukherjee: যার হাত ধরে টলিউডে উত্থান, তাঁকেই জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলেন 'উচ্চাকাঙ্ক্ষী' অর্পিতা!
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
| Edited By: | Updated on: Jul 29, 2022 | 4:50 PM
Share

‘লাইটস… সাউন্ড… ক্যামেরা… অ্যাকশন…’—দুরন্ত গতিতে ‘অ্যাকশন’ শুরুর পর যে হঠাৎ এভাবে ‘কাট’ শুনতে হবে, তা হয়তো আঁচ করতে পারেননি কেউই। এসএসসি নিয়োগ-দুর্নীতিতে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার-মানানো যে রুদ্ধশ্বাস ইডি-অভিযান গত কয়েকদিন ধরে গোগ্রাসে গিলেছে বঙ্গবাসী, তার অন্যতম ‘নায়িকা’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এবার মুখ খুললেন টলিউডের এক প্রযোজক। যিনি নাকি বেলঘরিয়ার নিতান্ত সাধারণ তরুণী অর্পিতার ‘হিরোইন’ হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার সেই প্রযোজকই এবার TV9 বাংলার কাছে প্রকাশ করলেন তাঁর বিস্ময়, ‘‘ভাবতেই পারছি না।’’ অর্পিতাকে টলিউডে প্রথম বড় ব্রেক দিয়েছিলেন যে মানুষটি, উচ্চাকাঙ্ক্ষার মোহে আটকা পড়ে তাঁকেই নাকি জীবন থেকে পরবর্তীকালে একবারে সরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের অপসারিত মন্ত্রী তথা সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়-‘ঘনিষ্ঠ’ এই বান্ধবী। ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী’ অর্পিতার সিনেমার থেকেও রঙিন জীবন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় যে আচমকা এভাবে ‘কাট’ হয়ে যাবে, সে সম্পর্কে TV9 বাংলার কাছে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ওই প্রযোজক।

কে সেই ব্যক্তি? তিনি প্রযোজক গৌতম সাহা। সুন্দরী অর্পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন নায়িকা হওয়ার। কাজ শুরু করেছেন ১৭-১৮ বছর থেকেই। শুরুর সেই দিনগুলোয় বেলঘরিয়া থেকে টালিগঞ্জ ট্যাক্সি চেপেই যেতেন তিনি—TV9 বাংলাকে এ কথা আগেই জানিয়েছেন অর্পিতার আর এক পরিচালক সংঘমিত্রা চৌধুরী। টালিগঞ্জে অর্পিতা কাজের সুযোগও পেয়েছিলেন বেশ কয়েকটা। জিৎ-প্রসেনজিৎ-স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু নায়কের বোন, অভিনেত্রীর বন্ধুর চরিত্র পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছিল তাঁকে। নায়িকা হওয়া স্বপ্ন থেকে যাচ্ছিল তাঁর অধরাই। ২০১১-য় অর্পিতার জীবনে ঘটে যায় এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। TV9 বাংলার কাছে প্রযোজক গৌতম সাহার দাবি, তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি, অভিনেত্রীকে নায়িকা হওয়ার প্রথম সুযোগ করে দেন। ঘটনার বিশদে বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি যোগ করেন, এক সঙ্গীত পরিচালকের মাধ্যমে অর্পিতার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সে সময় ‘হৃদয়ে লেখো নাম’ নামক এক ছবির জন্য এক নবাগতার খোঁজ করছিলেন গৌতমবাবু। ব্যস, দুইয়ে দুইয়ে হয়ে যায় চার। ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে অর্পিতারও। গৌতম সাহার প্রযোজনাতেই প্রথমবার ও শেষবার টলিউডে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেন অর্পিতা। ২০১২ সালে মুক্তি পায় ‘হৃদয়ে লেখো নাম’। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘ওর মধ্যে একটা চটকদারি ছিল। বেশ লম্বা-ফর্সা, পাবলিক যাকে নেবে। নায়িকা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা ওর ছিল।’’ গৌতমবাবুর আরও সংযোজন, ‘‘ভালই অভিনয় করেছিল অর্পিতা। সময় জ্ঞান খুব ভাল ছিল ওর। বড় হওয়ার চেষ্টা ছিল। খুব খোলামেলা ছিল ও।’’

তবে আজও অর্পিতাকে নিয়ে আক্ষেপ যায়নি গৌতমবাবুর। তাঁর দাবি, ছবি মুক্তির পরই প্রচারের আলোয় চলে আসেন অর্পিতা। পরিচিতি বাড়তে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে ওঠা বসা শুরু করেন অর্পিতা। প্রসঙ্গত, এ প্রসঙ্গে TV9 বাংলাকে সংঘমিত্রাও বলেছিলেন, ‘‘২০১৩-র পর থেকে পুরোপুরিই ছবি থেকে সরে আসে অর্পিতা। ছবির দিকে আর কোনও মনোযোগই ছিল না ওর। নিতান্ত সাধারণ জীবনযাত্রার মেয়েটা ধীরে-ধীরে পার্টিতে যাওয়া শুরু করল। শুধুই যেন সোশ্যালাইজ়িংয়ের উপর জোর দিল।’’ এখানেই শেষ নয়, গৌতমবাবুর বিস্ফোরক অভিযোগ, ছবি মুক্তির পরে নাকি ফোন করে প্রযোজকের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন অর্পিতা। আকাশ ছুঁতে চাওয়ার স্বপ্ন দেখা মফঃস্বলের মেয়েটির মনে হয়েছিল ছবিতে তাঁকে নয়—বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মনিকা বেদীকেই।

অর্পিতাকে যারাই কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁদের প্রায় সকলেরই দাবি প্রচণ্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন তিনি। ব্যতিক্রমী চিন্তা নয় গৌতমবাবুরও। তাঁর কথায়, ‘‘নিজের শখ পূরণ এবং বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য অভিনয় ছেড়ে এই পথ বেছে নেবে! ভাবতেই পারছিনা।’’

গৌতমবাবুর আক্ষেপ, ‘‘মন খারাপ হয়েছিল। আমার হাত ধরেই অর্পিতা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। গ্রাম বাংলায় বেশ ভাল চলেছিল ছবিটা। আর সেটাই ওর জীবনে কাল হয়ে গিয়েছিল। আমি ওঁকে সযোগ দিয়ে ভুল করিনি। কিন্তু মনিকা বেদীকে নিয়ে দ্বন্দ্বের জন্যই আমার থেকে দূরে সরে গেল। মন্ত্রী-টন্ত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ওর। বেশ ভালই লেগেছিল আমার। ওঁকে নিয়ে গর্ববোধ হয়েছিল।’’ গৌতমবাবু জানিয়েছেন, সেকেন্ড হ্যান্ড এক চার চাকার গাড়ি ছিল অর্পিতার। ‘হৃদয়ে লেখো নাম’ ছবির জন্য অর্পিতা পারিশ্রমিক খুব একটা নেননি। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘সবকিছু (খাওয়া-দাওয়া, লজিং) মিলিয়ে মাত্র পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছিল ও। তখন কিন্তু খুব বেশি ডিম্যান্ড করেনি। ওর খালি একটাই ইচ্ছে ছিল যে ও নায়িকা হবে।’’