Abhishek Chattopadhaya Demise: এখন সেই বাবা-কাকার চরিত্রই পাব… শুধু নিজের মেয়েটার জন্যই বাঁচা, চুমকি চৌধুরীকে বলেছিলেন অভিষেক
হীরক জয়ন্তী, গীত সঙ্গীত, মেজবউ তাঁর ঝুলিতে ছবির সংখ্যা অগুনতি। তিনি চুমকি চৌধুরি। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর অবশ্য আরও একটা পরিচয় আছে। তিনি অঞ্জন চৌধুরির বড় মেয়ে। অনেকগুলো বছর নিজেকে বড় পর্দা থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। প্রায় ১৭-১৮ বছর পর খলনায়িকা হয়ে পর্দায় ফিরছেন অভিনেত্রী। টিভিনাইন বাংলার মুখোমুখি চুমকি চৌধুরি।
৯০-এর দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী আপনি। মাঝে অনেকদিনের বিরতি। এখনও কি সেই বিরতি-পর্বই চলছে?
হ্যাঁ, সত্যি কথা বিরতিতেই আছি। বাবা চলে যাওয়ার পর মন থেকে কিছুতেই আর স্টুডিওতে ঢুকতে ভাল লাগে না। মন থেকে আর সেই ইচ্ছে আসে না। বাবার হাত ধরেই তো এই স্টুডিওপাড়ায় পরিচিতি আমার। বাবা চলে গিয়েছেন প্রায় ১৫ বছর। তারপর ১২ বছর তো কাজ একদমই করিনি। পরে অনেকে অনুরোধ করায় ধারাবাহিকে অভিনয় করি। ছবির কামব্যাক যদি বলেন, তাহলে ‘কুলপি’। প্রায় ১৭ বছর পর আবারও বড়পর্দায় ফেরা। তা-ও আবার খলনায়িকার চরিত্রে।
প্রায় একযুগেরও বেশি সময় পার। ফ্লোরে ফিরে মানিয়ে নিতে অসুবিধে হয়নি?
না, সেই সব কিছু মনেই হয়নি। আসলে আমরা তো শিল্পী, তা-ই হয়তো এইসব কথা মাথায় আসে না। ধারাবাহিকের জন্য ক্যামেরার সামনে তো আসতেই হয়। কবে বাবার কথা বারবার মনে হচ্ছিল। মনে পড়ছিল বাবার সঙ্গে আসতাম ফ্লোরে। বাবার ইউনিট, সবাই চেনা ছিল। তবে এই ইউনিটেরও সবাই খুব ভাল ছিল।
এত বছর পর কী-কী পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন?
টেকনিক্যালি সবকিছুর পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আমরা যেমন ভাবে কাজ করতাম, তেমনভাবে আর কাজ হয় না। মেক-আপ থেকে শুরু করে জামাকাপড়, সবক্ষেত্রেই এসেছে আমূল পরিবর্তন। অভিনয় প্রক্রিয়ারও পরিবর্তন এসেছে। সেটা একটু বুঝতে সময় লেগেছিল। কিন্তু ঠিক আছে মানিয়ে নিয়েছি।
আপনি যে সময় অভিনয় করেছেন, আপনার মনে হয় কি বাবা ছাড়া বাকি পরিচালকদেরও আপনাকে আরও কিছুটা প্রাধান্য দেওয়া উচিৎ ছিল?
আসলে আমি না তেমনভাবে ভাবি না। আমার জীবনের চাওয়া-পাওয়াগুলো খুব কম। তাই আমি বিচার করি না। আমাকে বেশি দেওয়ার ছিল কী কম দেওয়ার ছিল। আমি যতটুকু পাই, তাতেই খুশি থাকি।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায় আপনার বহু ছবির নায়ক, এই মুহূর্তে তাঁর কোন স্মৃতি আপনার মনে আসছে?
অভিষেকদার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। বাবা খুবই ভালবাসতেন। আমার দাদার মতো ছিলেন। সেই মানুষটা যে আজ আর নেই আমি সেটা ভাবতেই পারছি না।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায় আপনার বহু ছবির নায়ক, এই মুহূর্তে তাঁর কোন স্মৃতি আপনার মনে আসছে?
অভিষেকদার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। বাবা খুবই ভালবাসতেন। আমার দাদার মতো ছিলেন। ছ’মাস আগে আমরা চন্দননগরে একটা ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। সেখানে ক্যাম্প হয়ে যাওয়ার পর আমদের ওনারা পিতলের হাঁড়ি উপহার দেন। অভিষেকদা সেই হাঁড়ি পেয়ে খুব খুশি। আমাকে বললেন, ‘এই পিতলের হাঁড়িগুলোর জন্যই এখানে আসি।’ আমি বলি, দাদা আপনার এত মিষ্টি খাওয়া ঠিক নয়, মোটা হয়ে যাচ্ছেন। ওনার উত্তর ছিল, ‘আর কী হবে, এখন তো সেই বাবা, কাকার চরিত্রই পাব। এখন শুধু আমার নিজের মেয়েটার জন্যই বাঁচা।’
আপনার সমসাময়িক অভিনেতারা অনেক বেশি চর্চায়। আপনি লাইমলাইটের থেকে এত দূরে কেন?
না, দর্শকের দোষ নয়। আসলে আমি নিজেই চর্চায় থাকতে ভালবাসি না। আমি কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে একদম পছন্দ করি না। ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যক্তিগত রাখতেই ভালবাসি। নিজেকে আড়ালেই রাখতে চাই লাইমলাইট থেকে।
এত বছরে অপ্রাপ্তি কিছু আছে?
না, কোনও অপ্রাপ্তি নেই। আমি প্রয়োজনের তুলনায় দর্শকের থেকে অনেক বেশি ভালবাসা পেয়েছি। হয়তো আমার সেই ভালবাসা পাওয়ার যোগ্যতাই নেই। সবটাই দর্শকের আশীর্বাদ।
আরও পড়ুন: Rachana Banerjee: ঝুমঝুম থেকে রচনা, নাম দিলেন সুখেন দাশ, তাঁকে মনে রেখেছেন রচনা?