একটি মেয়ের জীবনের প্রথম হিরো কে? কে কন্যাকে রাজকন্যার মতো যত্ন করেন? এক কথায় উত্তর – বাবা। মা যতই আপন হোন না কেন, বাবার জায়গা কেউ নিতে পারেন না। বাবা হারিয়ে গেলে মেয়েরা স্তব্ধ হয়ে যায়। প্রথম হিরো… অনেক ক্ষেত্রে জীবনের শেষ হিরো এই মানুষটাই। হিরো হারিয়ে গেলে আকাশ ভেঙে পড়ে। হিরোহীন জীবন বড়ই কঠিন। তবুও জীবন এগিয়ে যায় নিজ ছন্দে। তিনিও তো হিরো। পর্দায় ও জীবনে। মেয়ে সাইনার কাছেও তিনি হিরো। বাবাকে সদ্য হারিয়েছে মেয়েটা। হারিয়েছে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাকে। প্রিয় বন্ধুকে। এখনও ধাতস্থ হতে পারেনি। নানাভাবে তাকে বুঝিয়ে রাখা হয়েছে বাবা আছেন, কোথাও ছেড়ে যাননি তাকে। বাবাকে মেয়েটা মিস করছে। বার বার কেঁদে ফেলছে। সেই বাবা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। সেই মেয়ে তাঁর নয়নের মণি ডল। ভাল নাম সাইনা। আগে এরকমটা কোনওদিন হয়নি – মেয়ে স্কুলে গেছে আর বাবা নেই পাশে। আজ সেটাই হল। সাইনা স্কুলে গেল। কিন্তু বাবাকে ছাড়া। বাবার বিশাল বড় ছবিটাকে জড়িয়ে ধরে আদর করল সে। সেই দৃশ্য দেখলে আপনার চোখ ভিজবে। কান্না পাবে। ছবিটি অভিষেকের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে শেয়ার করেছেন তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা। ডলের হয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন –
“আমার প্রিয় বাবা,
ক্লাস সেভেনে আজ আমার প্রথম দিন। তোমার উপস্থিতি ও আশীর্বাদ চাই। আমি জানি তুমি আমার সঙ্গেই আছ।
তোমার আদরের,
ডল।“
তারপর সংযুক্তা লিখেছেন, “আমাদের মেয়েকে আশীর্বাদ করুন আপনারা। ওর আজকে ক্লাস সেভেনে প্রথম দিন।”
আজ (০৭.০৪.২০২২) স্কুলে গেল সাইনা। দক্ষিণ কলকাতারই একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ে সে। মেয়ের স্কুলের শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছেন সংযুক্তা। শিক্ষিকাকে তিনি অনুরোধ করেছেন, কেউ যেন মেয়েকে সমবেদনা না জানাতে আসে। TV9 বাংলাকে সংযুক্তা বলেছেন, “আমি বলেছি ও স্কুলে যাবে। ওকে যেন কেউ সমবেদনা জানাতে না আসে। তা হলেই ডল আপসেট হয়ে পড়বে। এটা আমি ওঁর টিচারকে বলে দিয়েছি।”
বাবার মতো সাইনাও অভিনয় করতে চায়। মেয়ে বড় অভিনেত্রী হবে, অভিষেকও তাই চাইতেন। সাইনা আগেই TV9 বাংলাকে বলেছে, “আমি অভিনয় করতে পারি। আমি অভিনেত্রী হতে চাই। কিন্তু আমার কাছে এখনও কোনও সুযোগ আসেনি।”
বাবার মতো মেয়েও অভিনয় করতে চায়, এই প্রসঙ্গে অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা বলেছেন, “ডলের অভিনয় করারই ইচ্ছে। অভিষেকও তা-ই চাইত। আমি মনে করি, ডল যা চায়, তা-ই যেন হয়। তবে ছোটবেলা থেকেই মেয়ের অভিনয়ের উপরই ন্যাক।”