Aparajito Movie: অনীক দত্তের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রাজের, ‘রাজনৈতিক অভিসন্ধি’র সন্দেহ পরিচালকের

Aparajito Movie: অভিনেতা জিতু কামালকে নিয়ে 'অপরাজিত' করছেন পরিচালক। শনিবারই প্রকাশ পেয়েছে ওই ছবির লোগো। প্রকাশ্যে এনেছেন পরিচালক নিজেই।

Aparajito Movie: অনীক দত্তের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রাজের, 'রাজনৈতিক অভিসন্ধি'র সন্দেহ পরিচালকের
গ্রাফিক- অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 27, 2022 | 9:51 PM

একটি লোগো, আর তা নিয়েই আপাতত তোলপাড় টলিপাড়ার অন্দর। পরিচালক অনীক দত্তের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন গ্রাফিক ডিজাইনার রাজ কমল। অন্যদিকে অনীক দত্ত মনে করছেন গোটা ঘটনার নেপথ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধি হলেও হতে পারে। ঠিক কী নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত?

অভিনেতা জিতু কামালকে নিয়ে ‘অপরাজিত’ করছেন পরিচালক। শনিবারই প্রকাশ পেয়েছে ওই ছবির লোগো। প্রকাশ্যে এনেছেন পরিচালক নিজেই। যদিও সেই পোস্টে কোনও ক্যাপশন দেননি তিনি। উল্লেখ ছিল না গ্রাফিক ডিজাইনারের নামও। আর তাতেই অসন্তুষ্ট রাজ। তাঁর দাবি টাইটেলে যে ক্যালিগ্র্যাফি ব্যবহৃত হয়েছে তাতে অপু-দুর্গার অবয়ব আদপে তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত হলেও তাঁকে প্রাপ্য মর্যাদা দেননি পরিচালক। দাবি করেছেন ভাবনা তাঁর নিজস্ব। অন্যদিকে অনীকের পাল্টা যুক্তি, বিভিন্ন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি স্পষ্টতই জানিয়েছে ‘ফাইনাল টাচ’ দিয়েছেন রাজই।

ঘটনা জানতে টিভিনাইন বাংলা যোগাযোগ করেছিল রাজ ও অনীক– দুজনেই সঙ্গেই। রাজের বক্তব্য, “অনীক দত্ত আমাকে ফোন করে বলেন, তোমাকে ক্রেডিট দেব, ডিজাইনটা করবে। আমি পরিষ্কার বলি, আমার ক্রেডিট চাই না পারিশ্রমিকটা চাই। উনি আমাকে বলেন মানিকবাবুর কাজ তো, অনেক ডিজাইনার ফ্রিতে বসে আসছে কাজটা করার জন্য। আমি বলি তাঁদের দিয়ে করান, আমি কাজটা করতে পারব না, ফোন রেখে দিই”।

রাজ আরও বলেন, “কিছুক্ষণ পর আবার আমাকে ফোন করে বলেন, ‘ও তুমি সমীর আইচের ছেলে…’।” রাজ জানান, অনীক দত্তের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে থাকার কারণেই নির্ধারিত পারিশ্রমিকের অনেক কম টাকায় তিনি কাজ করতে রাজি হন। তিনি যোগ করেন, প্রথমে পঁচিশ হাজার টাকা চাইলেও কুড়ি হাজারেই রাজি হতে হয় তাঁকে। ঠিক হয়, লোগোটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে ৫ হাজার ও মেন লোগো হিসেবে ব্যবহার করলে ২০ হাজার দেওয়া হবে তাঁকে। যদিও রাজ দাবি করেছেন এখনও পর্যন্ত তাঁকে আড়াই হাজারের বেশি টাকা দেওয়া হয়নি। জানানো হয়েছে দেওয়া হবে।

অভিযোগের এখানেই ইতি নয়। রাজের বক্তব্য, “আমি ওঁকে বেশি কিছু টাইটেল নিজের মতো টাইপোগ্রাফি করে পাঠাই। সেখানে অপু দুর্গার অবয়ব, ট্রেনের ওই টাইপোগ্রাফি সবই আমার আইডিয়া। আমি পাঠানোর পরেই উনি আমাকে এক ছবি পাঠিয়ে বলেন, এরকম ভাবনা ওঁর টিমও নাকি ভেবেছিলেন। সত্যিই কি তাই? প্রমাণ কে দেবে?”

তবে অনীক দত্তের বক্তব্য ট্রেন থেকে যে ধোঁয়া বের হচ্ছে সেটা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। ভাবনা প্রায় এক বছরেরও পুরনো।  তাঁর কথায়, “হঠাৎ কেন এমন বলছে জানি না। শুনেছে হয়তো সমালোচনা করলে ভাল মাইলেজ পাওয়া যায়। তিনি যোগ করেন,

“এক বছর আগে একটা টাইপোগ্রাফি যেটা সত্যজিৎবাবুর আদলের প্রায় কাছাকাছি প্রায় রাতারাতি ফাইনাল করে বের করা  হয় কারণ প্রযোজনা সংস্থা ২মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে সংবাদমাধ্যমে ছবিটির ঘোষণা করতে চায়। ট্রেনের ধোঁয়ার আইডিয়া তখনই এসে গিয়েছে। এক বছর আগেই ট্রেনের আইডিয়া যে করা হয়েছে সে প্রমাণ তো সংবাদপত্রেই রয়েছে। মাস দুই তিন আগে আমি আবার ভাবলাম হুবহু সত্যজিৎ রায়ের ক্যালিগ্রাফি ব্যবহার করব।” তাঁর আরও বক্তব্য, “এরপর আমার সোশ্যাল মিডিয়া যে হ্যান্ডেল করে সেই নীলাদ্রি তাকে আমি মেসেজ করি মহাপুরুষ কাপুরুষে যে টাইটেল সিকুয়েন্স রয়েছে সেটা ব্যবহার করা যায় কিনা। হুবহু সেই লেটারিংটাই কিন্তু লোগো হিসেবে ফাইনাল করা হয় তখনই। ইংরাজিতে টাইটেলটা করা হয় রে রোম্যানে। এর মধ্যে রাজ ছিলই না। রাজের সঙ্গে আলাপ আমার এই মাস খানেক। ফেসবুকে ওর কাজ দেখে আমার ভাল লাগে। সেই কারণেই যোগাযোগ করি। বেসিক লেটারিংটা আমার বহু আগে করা ছিল। ওর উপর রাজ কাজ করেছে।”

যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ রাজ। তিনি বলেন, “অপু দুর্গার মুখ থেকে শুরু করে রেলগাড়ি, ক্যামেরার পজিশন…এমনকি দুর্গার চুল বাঁধা থাকবে সেটাও আমি ঠিক করি, ‘অ’-এ।।অথচ পরে যখন কথা হয়েছে উনি বলেছেন দুর্গার চুলের আইডিয়া নাকি ওঁর।” অনীক যদিও বলছেন, “তাহলেই ভাবুন ছোটখাটো একটা ব্যাপার নিয়েও এমন শুরু করেছে। কালও যখন কথা হল একবারের জন্যও কিছু বলেনি, অত্যন্ত মধুর ব্যবহার ছিল ওর। আমার সঙ্গে যে ছেলেটি কাজ করে তাকে আমি বলেছিলাম যে দুর্গার চুল তো খোঁপাই থাকবে হয়তো রাজও একই কথা বলতে পারে, এটা নিয়েও যে ইস্যু হতে পারে জানি না”।

অনীকের দাবি আইডিয়া বহুদিনের প্রায় এক বছর আগে যে সময় আবির চট্টোপাধ্যায়ের অপরাজিততে অভিনয় করার কথা ছিল, রাজ তাতে যোগ করেছেন নিজস্ব ভাবনা। অন্যদিকে রাজের দাবি গ্রাফিক ডিজাইনারকে প্রাপ্য স্বীকৃতি দেননি পরিচালক, মেটাননি পারিশ্রমিকও। পরিচালক প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক অভিসন্ধির সন্দেহ, অন্যদিকের রাজের দাবি, প্রাপ্য স্বীকৃতি পেতেই তাঁর এই প্রতিবাদ। ফুটেজ, মাইলেজ কিছুই দরকার নেই তাঁর। ফেসবুকেও সরাসরি অনীক দত্তকে নিয়ে পোস্ট করেছেন রাজ। অনীক প্রকাশ করেছেন বিস্ময়। সব মিলিয়ে চলছে জোর তরজা।

 

আরও পড়ুন- ‘পিছন থেকে কাউকে ছুরি মারেনি, দুইজনেই ছিল ভীষণ আবেগি’, স্মৃতিচারণায় তাপস-পত্নী নন্দিনী