Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Tolly Inside: পক্সের ভয় নেই, আমাদের মেয়েকে কোলে তুলে নিল বুম্বা: লিখছেন তাপস-পত্নী নন্দিনী

Tolly Inside: আজ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন। গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ছিল তাপস পালের জন্মদিন। দুই তারকার বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ তাপস-পত্নী নন্দিনী পালের। উঠে এল নানা অজানা কথা। সেই সব কথা শুনল টিভিনাইন বাংলা।

Tolly Inside: পক্সের ভয় নেই, আমাদের মেয়েকে কোলে তুলে নিল বুম্বা: লিখছেন তাপস-পত্নী নন্দিনী
স্মৃতিচারণ তাপস-পত্নী নন্দিনী পালের। উঠে এল নানা অজানা কথা।
Follow Us:
| Updated on: Sep 30, 2023 | 3:06 PM

বর্ষা আমার ভাল লাগে। কিন্তু এই এক নাগাড়ে বৃষ্টি। গলাটা ধরেছে। আসলে ওয়েদারটা এমন। কাল তাপসের (পাল) জন্মদিন ছিল। পরশু রঞ্জিতদার (রঞ্জিত মল্লিক) আর আজ বুম্বার (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়)। তিন দিন পর পর ইন্ডাস্ট্রির তিন রত্নের জন্মদিন। মনটা ভাল নেই জানেন। আগে এই তিন ধরে কত কিছু হতো। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া। উৎসব লেগেই থাকত। নিজের হাতে রান্না করে বুম্বাকে পাঠাতাম। কাল আমি আর দোলন (মেয়ে) মিলে তাপসের পছন্দের খাবার রেঁধেছিলাম। ঘি দিয়ে সোনামুগ ডালের খিচুড়ি, ডিম, দই… ৫০ জন বাচ্চাকে নিজেরাই গিয়ে দিয়ে এসেছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সব দিতে ভাল লাগে না। তাপস বলত, “কাউকে কিছু যদি ডান হাত দিয়ে দাও, বাঁ হাতও যেন না জানতে পারে।”

আজ বুম্বার জন্মদিন। ওদের দু’জনের মধ্যে এক অদ্ভুত বন্ডিং ছিল। দেখা হতো প্রত্যেক দিন এমনটা না। তবু এক অনুচ্চারিত বন্ধুত্ব ছিল দু’জনের। তখন আমার মেয়ে খুব ছোট। ‘আপন আমার আপন’-এর শুটিং চলছে। আমিও গিয়েছি শুটিংয়ে। দেখছি, মেয়ের গায়ে পক্সের মতো গোটা বেরিয়েছে। খুব ভয় পেয়ে যাই। তাপসকে বলি, ও কোলে নিতে যাওয়ার আগেই বুম্বা এসে কোলে নিয়ে বলে, ‘হ্যাঁ, মনে হচ্ছে পক্সই হয়েছে। এক্ষুণি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে”। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তাপস তো বাবা, তাই মেয়ের পক্স বা যে কোনও রোগই হোক না কেন, ও ছোঁয়াচে হওয়ার ভয় করবে না। কিন্তু বুম্বা? ওর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক নেই। অথচ ছোঁয়াচে রোগ, ইত্যাদির ভয় না করেই কোলে নিয়ে নিল আমায় মেয়েটাকে।

বুম্বার মা বলতেন, আমার দুই ছেলে। তাপস আর বুম্বা। তাই উনি মারা গেলে দু’জনে মিলেই শেষ কাজ করেছিল, এ খবর হয়তো অনেকেই জানেন না। প্রতিবার তাপসের জন্মদিনের বুম্বা ফুলের তোড়া পাঠাত। তাপস নেই , কিন্তু ফুল আজও আসে, কালও এসেছিল। এই রীতি এখন অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। আজ সকালেও বুম্বাকে আমি উইশ করেছি। কিছু কিছু সম্পর্ককে মাপা যায় না। সম্পর্কগুলোকে লালন করতে হয়। যেমন ওরা করেছে। এখনকার ছেলে মেয়েরা বড় অভাগা। ইন্ডাস্ট্রির বন্ডিং, ভালবাসা, হই হুল্লোড় ওরা দেখতে পেল না। দেখতে পেল না, প্রথম সারির দুই অভিনেতার নিখাদ বন্ধুত্ব। মনে জমা থাকা মেঘ আজ মনে করিয়ে দিচ্ছে অনেক কিছু। তবে ওই যে, কষ্ট দেখাতে পারি না। তাপস যেদিন মারা গেল আমি, আমার মেয়ে সকলের সঙ্গে হেসে কথা বলেছিলাম। আড়ালে ওরা বলেছিল, “বাবা! কষ্টও হয় না এঁদের।” সব মিটে গেলে ঘর আর বালিশ জেনেছিল আমার মনের অবস্থা। যাক গে, আকাশ মেঘলা হলেও ক্যালেন্ডার জানিয়ে দিচ্ছে আজ বুম্বা বিশেষ দিনের কথা। শুভ জন্মদিন, বুম্বা। শুভেচ্ছা আর পুরনো দিনের অনেক স্মৃতি পাঠালাম। আগলে রেখো। ভাল থেকো।”

(অনুলিখন- বিহঙ্গী বিশ্বাস)