সৌমিত্রর জন্য একটা সিনেমা ছেড়ে দিয়েছিলেন উত্তম, আসল কারণটা জানলে বুঝবেন কেন তিনি মহানায়ক!
সময়টা সাতের দশক। একের পর এক ছবি করছেন উত্তম। একের পর এক ব্লকবাস্টার। সিনেমা হলে উত্তমের ছবি মুক্তি পেলেই, রাতারাতি তা হাউজফুল। ঠিক এই সময়ই, নতুন ছবির শুটিংয়ের ডেট নিতে উত্তমের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন পরিচালক পার্থপ্রতীম চৌধুরী ও তাঁর সহকারী বিমল দে।

নিজের ইমেজ নিয়ে বরাবরই সচেতন থাকতেন উত্তম কুমার। দর্শকদের কী ভাল লাগবে, কী মন্দ লাগবে, তা জানার জন্য নানা চেষ্টাও করতেন। সেই সময়কার ফিল্ম বোদ্ধা, ফিল্ম সমালোচকদের লেখায় বার বার উঠে এসেছে সাক্ষাৎকারের মাঝে মাঝেই সাংবাদিকদের সঙ্গে ফিল্ম ট্রেন্ড নিয়ে বিস্তর আলোচনা করতেন উত্তম। শুধু নিজের সিনেমা নয়, উত্তম নাকি যথেষ্ট ওয়াকিবহল ছিলেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়েও। সেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং নিজের ইমেজের কথা মাথায় রেখেই উত্তম একবার পছন্দের চিত্রনাট্য পেয়েও, ছবিটি ছেড়ে দিয়েছিলেন। প্রযোজককে স্পষ্ট বলেছিলেন, আমাকে নয়, এই ছবিতে সৌমিত্রকে নায়ক করুন!
সময়টা সাতের দশক। একের পর এক ছবি করছেন উত্তম। একের পর এক ব্লকবাস্টার। সিনেমা হলে উত্তমের ছবি মুক্তি পেলেই, রাতারাতি তা হাউজফুল। ঠিক এই সময়ই, নতুন ছবির শুটিংয়ের ডেট নিতে উত্তমের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন পরিচালক পার্থপ্রতীম চৌধুরী ও তাঁর সহকারী বিমল দে। দুই পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার মাঝেই উত্তম জানতে পারেন, এক প্রযোজক তাঁর কাছে এসেছেন নতুন চিত্রনাট্য নিয়ে। উত্তম, পার্থ প্রতীম ও বিমল দে যে ঘরে বসেছিলেন, প্রযোজক এলেন সেই ঘরেই।
প্রযোজকের মুখে ছবির গল্প শুনে উত্তমের যে পছন্দ হয়েছিল তা স্পষ্টই জানিয়ে ছিলেন। তবুও প্রযোজককে উত্তম বলেছিলেন, এই চরিত্রে আমাকে মানাবে না। বরং আপনি সৌমিত্রকে অফারটা দিন। সৌমিত্রকেই ভাল মানাবে। উত্তমের মুখে একথা শুনে প্রযোজক তো নাছোড়বান্দা। উত্তম না হলে নাকি ছবির ডিস্ট্রিবিউটারই জুটবে না। সেদিন প্রযোজকের কোনও অনুরোধই শোনেননি উত্তম। ছবিটি ছেড়েই দেন।
সেদিন উত্তমের এমন আচরণে বেশ অবাকই হন পরিচালক পার্থপ্রতীম ও বিমল দে। আর তা মহানায়ক নিজেও বুঝতেই পেরেছিলেন। দুই পরিচালককে সেদিন উত্তম এক গাল হেসে বলেছিলেন, ”দেখো, সবাইকেই তো কিছু কিছু কাজ করতে হবে। কোনও হলে ছবি রিলিজ হলেই সেখানে উত্তম কুমারের মুখ। আমার মুখ দেখতে দেখতে দর্শক ক্লান্ত হয়ে পড়বে। অন্যদেরও তো কিছু কাজ পাওয়া দরকার। শুধু নিজের জন্য নয়। এটা ইন্ডাস্ট্রির জন্যই ভাল।” জানা যায়, পরে অবশ্য ছবিটি তৈরিই হয়নি।
তথ্য সূত্র : মহানায়ক, লেখক-অশোক বসু
