PCOS: ওভারিতে সিস্ট থাকা মানেই পিসিওএস নয়! জেনে নিন পিসিওএসের আসল কারণগুলি কী কী
ওজন কমালেই যে পিসিওএস-এর সমস্যা কমে যায় এই ধারণাটা ভুল। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরি।
পিসিওএস বিষয়টি বর্তমান জীবনধারার একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সম্পর্কে কম বেশি অনেকেই সচেতন। কিন্তু মানুষের মধ্যে পিসিওএস সম্পর্কে ভুল চিন্তা ভাবনাও রয়েছে। যার প্রভাব পড়ে পিসিওএস-এর চিকিৎসার ওপর। তাই আজকের এই নিবন্ধে আমরা আলোচনা করব সেই সব মিথ বা ধারণা সম্পর্কে যা পিসিওএস-এর সাথে সম্পর্কিত নয়।
বেশির ভাগ মানুষের ধারণা যে, ওভারিতে সিস্ট থাকলে তবেই পিসিওএস হবে। এই ধারণা আংশিক ভাবে ভুল। আপনার মনে প্রশ্ন উঠতে পারে যে আংশিক কেন! পিসিওএস-এর পিছনে আসল কারণ এখনও জানা যায়নি। কিন্তু একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে পিসিওএসের পিছনে কয়েকটা কারণ দায়ী। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, এন্ড্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি, বংশগত এবং ওভারিতে সিস্ট। অর্থাৎ এমন কোনও কারণ নেই যে আপনি পিসিওএসের শিকার মানেই আপনার ওভারিতে সিস্ট রয়েছে। ওভারিতে সিস্ট ছাড়াও আপনি পিসিওএসে ভুক্তভুক্তি হতে পারেন।
অনেক মানুষেরা ধারণা যে পিসিওএস হলে আপনার ওজন অত্যাধিক বেড়ে যায়। কথাটা ঠিক কিন্তু ওজন কমালেই যে পিসিওএস-এর সমস্যা কমে যায় এই ধারণাটা ভুল। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ব্যায়াম করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যায়াম বা যোগা করলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকে। আর পিসিওএসের ক্ষেত্রে এন্ড্রোজেনের ভারসাম্য ঠিক থাকা খুব জরুরি। তবে এটাও সত্যি যে অত্যাধিক ওজন যে সব মহিলার তাদের মধ্যে পিসিওএসের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
হরমোনের ভারসাম্যই পিসিওএসের একটি বিশাল বড় কারণ। আর এই সমস্যা ১০ শতাংশ মহিলার মধ্যে ছোট বয়সেই দেখা দেয়। অর্ধেকের কম মহিলা পিসিওএসের সঠিক চিকিৎসা করাতে এবং এর হাত থেকে রেহাই পেতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ বেশির ভাগ মহিলাই তার শরীরে থাকা পিসিওএস সম্পর্কে অবগত নয়।
মানুষের মধ্যে ধারণা রয়েছে যে পিসিওএসের সমস্যা থাকলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। ৭০ শতাংশ সময়ে পিসিওএসের সমস্যা থাকলে ডিম্বস্ফোটনে সমস্যা হয়। বেশির ভাগ মহিলাই সহজে গর্ভধারণ করতে পারে না। এই বিষয়টি সত্য হলেও সব মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এমন বহু মহিলা রয়েছেন যাঁরা পিসিওএস থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ করেছেন এবং সুস্থ ভাবে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এখন চিকিৎসা ব্যবস্থা যেভাবে উন্নতির দিকে এগিয়েছে, তাতে এই সব সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করে সহজেই গর্ভধারণ করা যায়।
গর্ভধরণের বিষয়টি যেমন পিসিওএসের সঙ্গে সম্পর্কিত, তেমনই গর্ভ নিয়ন্ত্রক ট্যাবলেটের সাথে এর কোনও সম্পর্ক নেই। অনেকে মনে করেন গর্ভ নিয়ন্ত্রক ট্যাবলেটের দ্বারা পিসিওএসের চিকিৎসা করা সম্ভব। এই ধারণাটি সম্পূর্ণরূপে ভুল। বরং গর্ভ নিয়ন্ত্রক ট্যাবলেট হরমোনের ওপর আরও প্রভাব ফেলে। এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধই গ্রহণ করা উচিত নয়। তাই আপনার যদি পিসিওএসের সমস্যা থাকে তাহলে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, সুষ্ঠ জীবনধারণ করুন এবং দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ হলেও ডাবল মাস্কিং কী জরুরি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা