ফল আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারি সে সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। বিশেষ করে মোসাম্বি লেবু এতটাই পুষ্টিতে ঠাসা যে এর স্বাস্থ্যকর উপকারিতার কোনও হিসেব নেই। মোসাম্বি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ একটি ফল। আর সেই কারণে, মোসাম্বির উপকারিতা আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অপরিসীম।
মিষ্টি রসালো মোসাম্বি প্রায় সারাবছরই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। আর এর দামও কখনওই অতিরিক্ত বেশি হয় না। রোজকার খাদ্যতালিকায় এই ফলকে অনায়াসেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়। টুকরো করে হোক কিংবা রস বের করে, রোজ একটা করে মোসাম্বি খেলে আপনি নিজেই শারীরিক পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
১) ভিটামিন-সি এর দুর্দান্ত উৎস:
মোসাম্বি লেবু অ্যাসকরবিক অ্যাসিড অর্থাৎ ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ, যা অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও কার্যকরী। তবে ভিটামিন-সি জলে দ্রবণীয় ভিটামিন হওয়ায়, এটি শরীর সঞ্চয় করে রাখতে অক্ষম। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটামিন সি থাকা খুব প্রয়োজনীয়।
২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
মোসাম্বি লেবু ভিটামিন-সি এর দুর্দান্ত উৎস হওয়ায় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তুলতে অত্যন্ত সহায়ক। এর ফলে ফ্লু, সর্দি-কাশি কিংবা অন্যান্য রোগ থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সপ্তাহে তিনদিন মোসাম্বি লেবুর সেবন, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত কার্যকর।
৩) খিদে বাড়িয়ে তোলে:
মোসাম্বি লেবুর স্বাদ লালা গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করতে অত্যন্ত কার্যকর। যা ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই ইটিং ডিজঅর্ডার যাদের আছে, তাদের মোসাম্বি লেবু খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
৪) বমি বমি ভাব প্রতিরোধ করে:
মোসাম্বি লেবুর ফ্ল্যাভোনয়েড বমি বমি ভাব প্রতিরোধ করে এবং হজম ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে। এমনকি মোসাম্বি লেবুর ঘ্রাণ নিলেও, বমি বমি ভাব দূর হতে পারে।
৫) হজম ক্ষমতা উন্নত করে:
নিয়মিত মোসাম্বির সেবন, পিত্ত রস এবং ডাইজেস্টিভ অ্যাসিডের ক্ষরণ উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের কার্যকলাপ এবং হজম ক্ষমতাকে উন্নত করে তুলতেও সাহায্য করে।
৬) পেপটিক আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে:
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, মোসাম্বির রস পেপটিক আলসার নিরাময়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। প্যান্টোপ্রাজল এবং র্যানিটিডাইন (আলসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ) এর মতো মোসাম্বির রসেও একই প্রভাব বর্তমান। যা দীর্ঘস্থায়ী আলসার কমাতে সাহায্য করে।