Weather Change Sickness: কখনও কাঁপুনি দিয়ে শীত, কখনও অস্বস্তিকর গরম আবার কখনও বৃষ্টি, এর মাঝে সুস্থ থাকবেন কীভাবে? জেনে নিন বিশেষজ্ঞের থেকে…
সাধারণত ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যাদের বয়স, তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে একটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিয়ে রাখা উচিত। কারণ তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কো-মর্বিডিটিজনিত সমস্যা অনেক বেশি মাত্রায় প্রকট হয়ে ওঠে।
শোভন রায়: শীত পড়েছে। ২ দিন বেশ কাঁপিয়ে ঠাণ্ডা। হাওয়ার ঠেলায় জবুথবু অনেকেই। এই সময়ে ঠিক যখন সবাই ভাবছি হুডি থেকে শুরু করে শাল বের করে ফেলার কথা, হঠাৎ করেই উধাও শীত। একইরকম গরম, আবহাওয়া পুরো কয়েনের অন্য প্রান্তে। এই রকম অবস্থায় সবচেয়ে ক্ষতি যার হয়, তা হল আমাদের স্বাস্থ্য। আমাদের স্বাস্থ্য এই ধরনের অস্বাভাবিক আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে একেবারে একাত্ম যে করে দিতে পারে না, সেটা নাক থেকে বেরিয়ে আসা জল কিংবা গলা ধরে যাওয়া থেকেই বোঝা যায়।
রুবি জেনারেল হাসপাতালের ডায়াবেটিস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডঃ আশিস মিত্রকে প্রশ্ন করে আমরা জানতে পারি এই অদ্ভুত ঋতু পরিবর্তনে আমাদের শরীরে ঠিক কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে। প্রাথমিক ভাবে তিনি জানান, ‘আমাদের শরীরে এই ধরনের ওয়েদার চেঞ্জের কারণে অসুস্থতা এই প্রথম নয়। তবে, এবারে আমাদের আরও একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল করোনা। যদি ৩ দিনের বেশি আমাদের জ্বর থাকে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের টেস্ট করিয়ে দেখে নিতে হবে যে আমাদের করোনা হয়েছে কি না।’
তিনি আরও জানান, ‘আজকের দিনে জ্বরের উপসর্গের সঙ্গে করোনার উপসর্গ গুলিয়ে ফেলা খুব সাধারণ ব্যাপার। তাই, প্রথম অবস্থায় দোকান থেকে নিজের ইচ্ছে মতো অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে নেওয়া অত্যন্ত ভুল পদক্ষেপ।’ সামান্য গা হাত পা ব্যথায় প্রাথমিক ভাবে প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এমনকি জ্বর একটু বেশি হলেও সেক্ষেত্রে প্যারাসিটামলের ডোজ বাড়িয়ে খেতে বলেছেন। তবে, তিনি বারবার একটা বিষয়ে জোর দিয়েছেন, যদি জ্বর ৩ দিনের বেশি থাকে, অবশ্যই করোনা টেস্ট করতে হবে আমাদের।
আলোচনায় এক বিশেষ দিকের কথা জানিয়েছেন ডঃ মিত্র। তিনি বলেন, সাধারণত ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যাদের বয়স, তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে একটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিয়ে রাখা উচিত। কারণ তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কো-মর্বিডিটিজনিত সমস্যা অনেক বেশি মাত্রায় প্রকট হয়ে ওঠে। আর সেক্ষেত্রে যদি তাঁরা ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হন, তবে ফল মারাত্মক হতে পারে। এই বিষয়ে আমাদের অনেক বেশি সচেতন হতে হবে।
এছাড়াও, যাঁরা ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ফুসফুসের অবস্থা নিয়েও চিন্তার দিক খুলে দিয়েছেন ডঃ মিত্র। তিনি জানান, আমাদের ফুসফুস যদি ঠিকঠাক সুস্থ না হয়, সেক্ষেত্রে পালমোনারি ফাইব্রোসিসের বিস্তর সম্ভাবনা থাকে। এই রোগে মূলত ফুসফুসের সঙ্গে শ্বাসনালীর সংযোগস্থলে ফাইবারের প্রলেপ পড়ে যায়। যার ফলে আমাদের শ্বাস নিতে বেশ কিছুটা অস্বস্তি হয়। এমনকি শ্বাসকষ্ট পর্যন্তও হতে পারে।
করোনা থেকে যাঁরা এখনও সুস্থ হয়ে উঠছেন, এই আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় তাঁদের অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। কারণ, সামান্য অন্যথায় ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে। ডঃ মিত্র জানান, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত মানুষের ফুসফুস আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। তাই, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির ব্যবহার তাঁদের সব সময় চালিয়ে যেতে হবে।’ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবার বেড়ে যাওয়ার পেছনে টেস্ট না করানোকেই দায়ী করেছেন তিনি। তাই, এই আবহাওয়া পরিবর্তনে যদি জ্বর বা জ্বরের পারিপার্শ্বিক লক্ষণ ৩ দিনের বেশি থাকে, তাহলে আমাদের অবশ্যই টেস্ট করিয়ে নিতে হবে।