Chewing Clove: প্রতিদিন খালি পেটে ২টি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলেই উধাও হবে এই ৯ জটিল অসুখ!

Health Benefits: প্রতিদিন খালি পেটে লবঙ্গ চিবালে একাধিক অসুখের আশঙ্কা কমে যায়। বিশেষ করে পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে চাইলে ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে লবঙ্গের জবাব নেই।

Chewing Clove: প্রতিদিন খালি পেটে ২টি লবঙ্গ চিবিয়ে খেলেই উধাও হবে এই ৯ জটিল অসুখ!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 23, 2022 | 7:40 AM

লবঙ্গ (Clove) গাছের শুকনো ফুলকেই আমরা সাধারণভাবে লবঙ্গ মশলা (Clove Mashala) হিসেবে চিনি। জনপ্রিয় এই মশলাটি ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন পদে। সামান্য তরকারি হোক বা স্যুপ, বেকারি আইটেম হোক বা পায়েস, মাছ হোক বা মাংস— মশলাটির প্রয়োগে যে কোনও খাদ্যবস্তুর স্বাদহয়ে ওঠে স্বর্গীয়। এখানেই শেষ নয়। নানাবিধ অসুখে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার রয়েছে। লবঙ্গ তেল (Clove Oil) বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে। আবার হজমক্ষমতাও (Digestive Health) বাড়িয়ে তুলতে পারে। শক্তিশালী করে তুলতে পারে শ্বাসযন্ত্র। এছাড়া লবঙ্গ গাছের নানা অংশ যেমন শুকনো ফুল, ডাল এবং পাতাও আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল নামে যৌগ। বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে পারে যৌগটি। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। ফলে আর্থ্রাইটিস বা বাতের মতো প্রদাহজনিত অসুখের উপসর্গ কমাতে সক্ষম মশলাদি। আবার লবঙ্গের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র‌্যাডিকেলস ধ্বংস করতে পারে। ফলে হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারও প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই প্রতিদিন খালি পেটে লবঙ্গ চিবালে একাধিক অসুখের আশঙ্কা কমে যায়। বিশেষ করে পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে চাইলে ও দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে লবঙ্গের জবাব নেই। মোটকথা একাধিক অসুখে লবঙ্গ আশ্চর্যজনকভাবে কার্যকরী।

১) লিভারের স্বাস্থ্য: লিভারে নতুন ও স্বাস্থ্যকর কোষ তৈরিতে সাহায্য করে লবঙ্গ। লিভার থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দিতেও কার্যকরী ভূমিকা নেয়। আসলে লবঙ্গে রয়েছে থায়মল এবং ইউজেনল নামে সক্রিয় উপাদান যা লিভারকে করে তোলে শক্তিশালী।

২) ব্লাড সুগার: খালি পেটে এক চিমটে লবঙ্গ চূর্ণ সেবন করলে তা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। লবঙ্গ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমায় ও প্যাংক্রিয়াসের বিটা সেল থেকে ইনসুলিন ক্ষরণেও সাহায্য করে।

৩) বমি বমি ভাব: মর্নিং সিকনেস-এ ভুগলে তার মোক্ষম প্রতিকার হতে পারে লবঙ্গ। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে লবঙ্গ চিবালে লালার সঙ্গে মশলাটির উপকারী নানা উপাদান মেশে। এর ফলে নির্দিষ্ট কিছু উৎসেচক এবং এনজাইমের ক্ষরণ হয় যা মর্নিং সিকনেস যথা বমি বমি ভাব, গা গুলোনার মতো সমস্যা দূর করে।

৪) মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য: দাঁতের ব্যথা কমাতে প্রাচীনকাল থেকেই লবঙ্গের ব্যবহার হয়ে আসছে। জানলে অবাক হবেন, মুখগহ্বরের নানা প্রদাহ, প্লাক জমা, জিঞ্জিভাইটিস ও মুখগহ্বরে দুর্গন্ধও প্রতিরোধ করতে পারে মশলাটি। আসলে লবঙ্গের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। তাই সকালে খালি পেটে লবঙ্গ চিবালে তা সারাদিন ধরে মুখগহ্বরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধিতে প্রতিরোধ করে। এছাড়া দাঁতের ফাঁকে খাদ্য আটকে থাকার জন্য আমাদের দাঁতে আঠালো এবং নাছোড়বান্দা প্লাক তৈরি হয়। এই ধরনের প্লাক তৈরি হওয়াও আটকে দেয় লবঙ্গ।

৫) পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি: বিভিন্ন ধরনের পাচকরসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দিতে পারে লবঙ্গে উপস্থিত নানা উপাদান। এর ফলে খাদ্য দ্রুত হজম হয়। পেট ফাঁপা, চোঁয়া ঢেকুর ওঠার মতো সমস্যাও দেখা যায় না। এছাড়া ডায়ারিয়া, বমির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই কোলাই-এর মতো ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের ক্ষমতাও রাখে মশলাটি। মনে রাখতে হবে ই কোলাই ব্যাকটেরিয়া ফুড পয়জেনিং-এর মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে মাত্রাতিরিক্ত লবঙ্গ সেবন উচিত নয়। না হলে রক্ত জমাট বাধার প্রক্রিয়া মন্থর হয়ে যেতে পারে।

৬) অস্থিসন্ধির ব্যথা দূর করতে: ম্যাঙ্গানিজ এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস-এর মতো উপাদান থাকে লবঙ্গে। উপাদানগুলি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে। এছাড়া হাড় ভাঙলে দ্রুত জোড়া লাগতেও সাহায্য করে। মোটকথা হাড়ের স্বাস্থ্যহানি প্রতিরোধ করতে পারে মশলাটি। এইভাবে বাতের সমস্যাও রাখে দূরে। বয়স্কদের পেশির ক্ষয়ও রোধ করতে সক্ষম মশলাটি। আবার হাঁটুর বাত হলে অস্থিসন্ধিতে লবঙ্গ তেল দিয়ে মালিশ করলে তা বাতজনিত উপসর্গ হ্রাস করে। এমনকী অস্থিসন্ধি সন্নিহিত পেশিকেও শক্তিশালী করে তোলে।

৭) কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করে: খালি পেটে সকালে লবঙ্গ চিবালে মুখে পর্যাপ্তমাত্রায় লালা বেরয়। লালার সঙ্গে বেরয় হজমে সহায়ক নানা উৎসেচক। ফলে পরিপাকতন্ত্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাই কোষ্ঠবদ্ধতাও দূরে রাখে।

৮) প্রাকৃতিক বেদনানাশক: অ্যানালজেসিক গুণ বা বেদনানাশক ক্ষমতা রয়েছে ইউজেনলের। এই যৌগটি ভরপুর মাত্রায় রয়েছে লবঙ্গে। ফলে নিয়মিত খালি পেটে লবঙ্গ চিবালে মাইগ্রেন এবং বিবিধ মাথা ব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে গুঁড়ো আকারে খেলে এক চিমচে বিট নুন মিশিয়ে নিলে বেশি উপকার।

৯) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: ঋতু পরিবর্তনজনিত ঠান্ডা, সর্দি, কাশি প্রতিরোধ করে লবঙ্গ। প্রতিরোধ করতে পারে ব্রঙ্কাইটিস, সাইনুসাইটিস, ভাইরাল ইনফেকশনের সমস্যাও। এছাড়া সর্দি, কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, সাইনুসাইটিসের উপসর্গ হ্রাস করার ক্ষমতাও রয়েছে মশলাটির। অ্যান্টিভাইরাল উপাদান রয়েছে লবঙ্গের। এছাড়া রক্তে থাকা নানা ক্ষতিকর উপাদানকেও ধ্বংস করতে পারে লবঙ্গে থাকা একাধিক উপাদান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।