National Epilepsy Day: মৃগীরোগে আক্রান্ত, জীবনভর ওষুধই ভরসা? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
Health Tips: এপিলেপ্সির সমস্যা হলে মদ্যপান, ধূমপান এবং রাত জেগে কাজ এসব চলবে না। এতে এপিলেপ্সির সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে

এপিলেপ্সি আদতে স্নায়ুর সমস্যা। চলতি বাংলায় এই রোগ মৃগী নামেই পরিচিত। মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণেই এই রোগ বেশি দেখা যায়। একেবারে সদ্যোজাত থেকে শুরু করে বয়স্ক- যে কোনও কারোর হতে পারে এই রোগ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে জিনগত সমস্যাই রয়েছে এর মূলে। এছাড়াও মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত লাগলে, টিউমার বা স্ট্রোক হলেও পরবর্তীতে সেখান থেকে হতে পারে মৃগীর সমস্যা। প্রতি বছর ১৭ নভেম্বর দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব মৃগী দিবস হিসেবে। এই রোগের কোনও বয়স নেই। মৃগী সেরে যায়, কিন্তু এখনও এই রোগের সঠিক কোনও চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা পদ্ধতি থাকলেও তা খুব একটা উন্নত নয়। ভারতের এপিলেপ্সি ফাউন্ডেশন প্রথম মুম্বইতে এই দিনটি বিশেষ তাৎপর্যের সঙ্গে পালন করে। আর তাই এই দিবস পালনের বিশেষ একটি কারণ হল দেশ থেকে রোগ নির্মূল করা এবং রোগের মিথ ভেঙে মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। মানুষের মস্তিষ্কে অসংখ্য সূক্ষ্ম স্নায়ুর ‘সার্কিট’ থাকে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। সেই স্নায়ু সার্কিটে হঠাৎ কোনও সমস্যা হলে তখনই মৃগীর উপসর্গ দেখা দেয়। আর তাই মৃগী কোনও মানসিক রোগ নয়।
মৃগী রোগ মূলত ২ রকমের হয়ে থাকে। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি। প্রাইমারি এপিলেপ্সিতে মস্তিষ্কের কোনও স্ট্রাকচারাল ড্যামেজ হয় না। মস্তিষ্কে ইলেকট্রিক্যাল ইমপাল্স জেনারেশনের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে তখন এপিলেপ্সি হয়ে থাকে। অন্য দিকে মাথায় কোনও কারণে চোট পেলে বা মাথায় টিউমার হলে কিংবা হঠাৎ করে যদি শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায় তাহলে সেখান থেকেও হতে পারে এপিলেপ্সির সমস্যা।
এপিলেপ্সির প্রাথমিক উপসর্গ হল খিঁচুনি। সেই সঙ্গে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এই সময় রোগীর শরীরের কোনও অংশ স্পর্শ না করাই ভাল। বরং তাকে নীচে শুইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। মাথার নীচে বালিশ রাখার চেষ্টা করবেন। খিঁচুনির সময় রোগীর হাত-পায়ে বাধা দেবেন না। এতে রোগী গুরুতর চোট পেতে পারেন।
এপিলেপ্সির সমস্যা হলে মদ্যপান, ধূমপান এবং রাত জেগে কাজ এসব চলবে না। এতে এপিলেপ্সির সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এপিলেপ্সির সমস্যা থাকলে নজরে রাখতে হবে। আগুনের সামনে যেতে দেওয়া চলবে না। খুব উত্তেজক যে কোনও খেলা বা অতিরিক্ত আলো থেকেও শিশুদের দূরে রাখতে হবে।
রোগের সমস্যা কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বোঝার জন্য এমআরআই আর ইইজি কার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী আক্রান্তকে ওষুধ দেন চিকিৎসক। ৮০ শতাংশ এপিলেপ্সি ওষুধের মাধ্যমেই নিরাময় করা যায়। ওষুধের ডোজ় চিকিৎসকই ঠিক করে দেবেন। কতদিন খেতে হবে তাও তিনিই পরামর্শ দেবেন। কারোর ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ খেলেই কাজ হয়ে যায়। আর কিছু জনের ক্ষেত্রে তা ৪-৫ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। তবে মৃগী রোগীকে মনোবল বাড়াতে হবে। সব দিক থেকে ইতিবাচক থাকার বার্তা দিতে হবে। মনের জোর রাখলে সহজেই মৃগী থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব।
