মশলাদার খাবার খাওয়ার পরেই বুকের কাছে অল্প জ্বালা করছে আর আপনি সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টাসিড বা গ্যাসের ওষুধ কিনে খেয়ে ফেললেন। আমাদের অনেকের কাছে তো আবার এই ধরনের ওষুধ বাড়িতে স্টক করে রাখাও থাকে। সত্যি বলতে এতে কাজ হয় না যে তা নয়, খুব তাড়াতাড়িই সেই জ্বালা থেকে নিরাময় মেলে। তবে, এটা কখনওই অভ্যেসে যেন পরিবর্তিত না হয় সে বিষয়ে সবিশেষ খেয়াল রাখবেন। গ্যাস বা অ্যাসিডিটি হলেই ওষুধ খেয়ে নেওয়ার ফলাফল হতে পারে ভয়ঙ্কর।
যাঁরা প্রায়শই অম্বল বা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই সমস্যায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খেয়ে নেন। কেউ কেউ সারা বছরই ওই জাতীয় ওষুধ খেয়ে চলেন। মাটন হোক কি তেলেভাজা, খাওয়ারের পর গ্যাস বা অ্যান্টাসিড খাওয়াকে তাঁরা স্বাভাবিক রুটিন মনে করে থাকেন। ভাবেন, এর ফলে এমন কোনও ক্ষতি হচ্ছে না। কিন্তু বিষয়টা এর ঠিক উলটো। অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের আশঙ্কা, বাড়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্প্রতি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুলের মেডিসিন বিভাগের এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, অতিরিক্ত অ্যান্টাসিড হাড় ভঙ্গুর করে দেয়, কিডনির অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ করতে থাকে এবং সবচেয়ে বড় কথা হৃদযন্ত্রের অবস্থা এতটাই খারাপ করে দেয় যে হৃদরোগের আশঙ্কা মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়।
বহু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে অনেকে অ্যান্টাসিড খেতে বাধ্য হন। তাছাড়া অ্যাসিড বা গ্যাসের সমস্যা কমাতে এই জাতীয় ওষুধ তো খেতেই হয়। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, এর বাইরেও প্রচুর মানুষ নিত্য এই ধরনের ওষুধ খেয়ে যান। কোনও প্রয়োজন ছাড়াই শুধুমাত্র মনের শান্তির জন্যই তাঁরা এগুলো খেতে থাকেন। ওষুধের দোকান থেকেও সবচেয়ে বেশি মাত্রায় বিক্রি হয় এই ধরনের ওষুধই। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুলের মেডিসিন বিভাগের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই বিপুল পরিমাণে অ্যান্টাসিড খাওয়ার প্রবণতা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে মৃত্যুর হার।
কী হয় এই জাতীয় ওষুধ খেলে? পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড থাকলে, তা এই ওষুধগুলি কমিয়ে দেয়। কিন্তু যদি অতিরিক্ত অ্যাসিড না থাকে, তাহলে অ্যান্টাসিডে থাকা ক্ষার এবং এইচ২ ব্লকারের মতো ওষুধ অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে থাকে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। ওষুধের উপাদানগুলি কিডনিতে গিয়ে জমা হয়। এবং কিডনিরও ক্ষতি হয়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ব্যাপক ভাবে কমে যায়। তাতে বাড়ে রক্তচাপ। সেটিই হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা এই অভ্যাস ত্যাগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Belly Fat Burn: পেটের জেদি মেদ ঝরাতে এবার ভরসা রাখুন আয়ুর্বেদে! ৫টি ঘরোয়া নিয়ম মানলেই হবে কেল্লাফতে