Bladder Cancer Awareness Month 2022: কর্কট রোগ সারাতে লক্ষ টাকার ওষুধ কেন খাবেন? এই কাজগুলি না করলেই হবে না ব্লাডার ক্যান্সার!

Bladder Cancer: ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে জনসংখ্যার অনুপাতে ও ক্যান্সার নথিভুক্তকরণের রিপোর্ট অনুসারে সবগুলি ক্যান্সারের মধ্যে ১৭তম অবস্থানে রয়েছে ব্লাডার ক্যান্সার।

Bladder Cancer Awareness Month 2022: কর্কট রোগ সারাতে লক্ষ টাকার ওষুধ কেন খাবেন? এই কাজগুলি না করলেই হবে না ব্লাডার ক্যান্সার!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 09, 2022 | 7:55 AM

হেলথ চেকআপ তো দরকার। তবে তার চাইতেও দরকার নির্দিষ্ট কিছু জিনিস জীবন থেকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দেওয়া। এমনটাই মত চিকিৎসকদের। কফিও কি রয়েছে সেই তালিকায়?ব্লাডার ক্যান্সার (Bladder Cancer)— এই দু’টি শব্দ শুনলেই শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৫ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ নতুন করে ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছেন! ১৭ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন। সমগ্র বিশ্বে যে সব ক্যান্সার সবচাইতে বেশি হয় তাদের মধ্যে দশম স্থান অধিকার করে বসে আছে ব্লাডার ক্যান্সার (Bladder Cancer)। প্রাণহানির কারণ হিসেবে রয়েছে ১৩তম স্থানে। অথচ একটা ছোট্ট রোগ নির্ণয়ক পরীক্ষাতেই এই ক্যান্সার চিহ্নিত করা সম্ভব। সেইসঙ্গে রোধ করা সম্ভব অকাল প্রাণহানি।

কোন বয়সে ভয় বেশি?

সাধারণত ৬৫ বছর ও তার ঊর্ধ্বের মানুষের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রায় ৭০ শতাংশই ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষ।

পুরুষ না মহিলা?

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় ৪ গুণ বেশি থাকে।

ব্লাডার কী?

পেলভিসের নীচের অংশে থাকা ব্লাডার একটি ফাঁপা এবং নমনীয় পেশি দ্বারা গঠিত অঙ্গ। ইউরিন ধরে রাখার জন্য ব্লাডারের পেশিগুলি সুবিধামতো প্রসারিত হতে পারে। আবার ইউরিন বের করার জন্য সঙ্কুচিত হতেও পারে।

কীভাবে হয় ব্লাডার ক্যান্সার?

ব্লাডারের দেওয়ালে কিছু অস্বাভাবিক ধরনের কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। এই কোষগুলিই ব্লাডারে টিউমার তৈরি করে। ধীরে ধীরে টিউমারের আকার বাড়তে থাকে ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে জনসংখ্যার অনুপাতে ও ক্যান্সার নথিভুক্তকরণের রিপোর্ট অনুসারে সবগুলি ক্যান্সারের মধ্যে ১৭তম অবস্থানে রয়েছে ব্লাডার ক্যান্সার। প্রাণহানি ঘটানোর কারণ হিসেবে রয়েছে ১৯ তম স্থানে। দু’টি পরিসংখ্যানই যথেষ্ট ভীতিপ্রদ।

অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে বিশ্বে প্রতি ১০০ পুরুষে ১ জন এবং প্রতি ৪০০ মহিলার মধ্যে ১ জন ব্লাডার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ভয় রয়েছে।

উপসর্গ বোঝা জরুরি

• প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসছে? এই সমস্যার নাম হিমাচুরিয়া। এমন হলে এখনই সতর্ক হন। কারণ অনেকেই উপসর্গটিকে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের (ইউটিআই) সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। আরও মুশকিল হল, লক্ষণগুলি গোপনাঙ্গ সম্পর্কিত হওয়ায় অনেকেই চিকিৎসা করাতে খুবই দেরি করে ফেলেন। অথচ সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত হলে চিকিৎসাও সময়ে শুরু করা যায়। ফলে রোগীর অকালে প্রাণহানির আশঙ্কা কমে।

• ইউটিআই-এর মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে? অর্থাৎ ইউরিন পাস করার জন্য বারবার টয়লেটে ছুটতে হচ্ছে? প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হচ্ছে? প্রস্রাবের বেগ এলে ধরে রাখতে পারছেন না? দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

• পেলভিস অংশে, পেটে অজানা কারণে ব্যথা বোধ করছেন? কোমরের ঠিক ওপরে দেহের পাশ্ববর্তী অংশে ব্যথা বোধ রয়েছে? এগুলি কিন্তু ব্লাডার ক্যান্সারের

• খিদে কমে গিয়েছে? কমেছে ওজন? শরীর দুর্বল লাগছে? উত্তর হ্যাঁ হলে সাবধান।

• মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পরেও ভ্যাজাইনা দিয়ে ব্লিডিং হচ্ছে? মনে রাখবেন, মেনোপজ হওয়ার পরেও ভ্যাজাইনা পথে সামান্যতম রক্তপাতও ক্যান্সারের আশঙ্কাকে নির্দেশ করতে পারে।

কারণ কী কী?

• ধূমপান যে অন্যান্য ক্যান্সারের সঙ্গে ব্লাডার ক্যান্সারের ঝুঁকির আশঙ্কা বাড়ায় তা আজ এমনিতেই প্রমাণিত। অতএব ধূমপানের অভ্যেস থাকলে ও উপরিউক্ত উপসর্গগুলি দেখা দিলে এখনই সতর্ক হন।

• ভেপিং এবং ই সিগারেট ব্যবহারও বাড়িয়ে দিচ্ছে ব্লাডার ক্যান্সারের আশঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অনেকেই সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর মনে করে ভেপিং এবং ই সিগারেটে অভ্যস্ত হয়ে যান। আসলে তাতে লাভের লাভ কিছু হয় না। বরং ই সিগারেট বা ভেপিং ক্যান্সারের অন্যতম ঝুঁকি হতে পারে বলেই নানা সমীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে। এমনিতে ভেপিং বা ই সিগারেটে ব্যবহৃত তরলের দাম যথেষ্ট বেশি। অনেকেই তাই স্টেট্যাস সিম্বল হিসেবেও ই সিগারেটে সুখটান দিয়ে শ্লাঘা বোধ করেন। অথচ কিছু স্টাডিতে, ই সিগারেটের ধোঁয়ায় অন্ততপক্ষে ৪০টি যৌগের সন্ধান মিলেছে যা বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে ৬০টি ভিন্ন যৌগ তৈরি করতে পারে! ওই যৌগগুলির মধ্যে অন্তত ৬টি বিষাক্ত যৌগ ব্লাডার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। ই সিগারেটের সলিউশনেও থাকে উচ্চমাত্রার নিকোটিন যার বেশিরভাগটাই ইউরিনের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। বেশ কিছু প্রাণীর উপর পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে ই সিগারেটের সলিউশন প্রাণীগুলির ডিএনএ-এর পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত নির্গত হওয়ার ঘটনা বেড়ে ওঠার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ই সিগারেট ব্যবহারের সংযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে এই উপসর্গ সম্ভাব্য ব্লাডার ক্যান্সারেরও হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ই সিগারেট ব্যবহারে ইউরিনে অস্বাভাবিক রকমের প্রোটিনের উপস্থিতিও নজরে এসেছে বলে জানা যাচ্ছে।

কফিতেও ভয়?

ব্লাডার ক্যান্সারের পিছনে কারণ হতে পারে কফি পান! হ্যাঁ এমনটাই জানাচ্ছেন বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। তাঁরা বলছেন, বেশ কিছু মানুষ কফি পানে আসক্ত হয়ে পড়েন যা নিকোটিন সেবনের মতোই সমানভাবে ব্লাডার ক্যান্সারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। অবশ্য আরও কিছু সমীক্ষা এই মতামতকে খণ্ডন করেছে ও জানিয়েছে কফিপানের সঙ্গে ব্লাডার ক্যান্সারের যোগ নেই।

তবে হ্যাঁ, ধূমপান করা, ই সিগারেট ব্যবহারের মতো কুঅভ্যেস ত্যাগ করা সবসময়েই স্বাস্থ্যের পক্ষে সুফল প্রদান করে। একইসঙ্গে যে কোনও ক্যান্সারের আশঙ্কা কমায় এক্সারসাইজের অভ্যেস, সবুজ শাকসব্জি ও ফল খাওয়ার অভ্যেস। তাই আর দেরি না করে পালটে ফেলুন জীবনশৈলী। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।