নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণ(COVID-19)-র কারণে অভিশপ্ত হয়ে উঠেছিল ২০২০ সাল। সংক্রমণকে প্রায় বাগ মানিয়েই নতুন বছরে প্রবেশ করেছিল দেশবাসী। কিন্তু এক মাস কাটতে না কাটতেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে করোনা ভাইরাস। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৭৫২ জন, যা গত ৩০ দিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত । এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি প্রায় ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৭৫২ জন। একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ১১৩ জনের। এই নিয়ে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে বেড়ে হল ১ কোটি ১০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩১ এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫১। বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫১১।
সংক্রমণের শুরু থেকেই দেশে সক্রিয় রোগীর তুলনায় সুস্থতার হার বেশি ছিল। বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটাই কমেছে সুস্থতার হার (Recovery Rate)। বর্তমানে দেশের সুস্থতার হার ৯৭.১০ শতাংশ।
রাজ্যের নিরিখে করোনা পরিস্থিতি:
মহারাষ্ট্র: একাধিক জেলায় কন্টেনমেন্ট জ়োন (Containment Zone) ও লকডাউন (Lockdown) জারি করা হলেও মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) ফের বেলাগাম করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬২৩ জন। সংক্রমণের কারণে একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। বাণিজ্য নগরী মুম্বই (Mumbai)-এই একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৭ জন। পুণে(Pune), নাগপুর (Nagpur) ও অমরাবতী (Amravati)-তেই রাজ্যের মোট আক্রান্তের ৪০ শতাংশের খোঁজ মিলেছে। ইতিমধ্যেই অমরাবতীতে লকডাউনের মেয়াদ এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে নাগপুর, বুলধানা ও যাভতমলে।
আরও পড়ুন: স্রেফ এক ফোনেই রেলের সব সম্যার সমাধান, কোন নম্বর? জেনে নিন
কেরল: দেশের শীর্ষ করোনা সংক্রমণের তালিকায় ফের একবার কেরল (Kerala)। সেখানে একদিনেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭৯২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।
অরুণাচল প্রদেশ: যখন গোটা দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, সেই সময়েই করোনামুক্ত ঘোষণা করা হল অরুণাচল প্রদেশ (Arunachal Pradesh)-কে। রবিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, আগে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল তিন। তাঁরাও সুস্থ হয়ে ওঠায় বর্তমানে রাজ্যে আর কোনও করোনা রোগী নেই। একইসঙ্গে নতুন করে করোনা আক্রান্তও হননি কেউ। রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬,৮৩৬। এদের মধ্যে ১৬,৭৮০ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
জেলা ভিত্তিক করোনা পরিস্থিতি:
পুণে: মহারাষ্ট্রের পুণে(Pune)-তে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে জারি করা হয়েছিল রাত্রিকালীন কার্ফু (Night Curfew)-ও। কড়া নিয়মবিধিতেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের গণ্ডি পার করায় আগামী ১৪ মার্চ অবধি নাইট কার্ফুর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল, রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা অবধি জরুরি পরিষেবা ছাড়া সাধারণ মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১৪ তারিখ অবধি বন্ধ থাকবে স্কুল, কলেজ সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
গুরগাঁও: একই আবাসনের ২০ জন বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গোটা আবাসনকেই কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হল। সূত্র অনুযায়ী, গুরুগাঁওয়ের একটি আবাসনের তিনজন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদের সংস্পর্শে আসা বাকি আবাসিকদেরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় আরও ২০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরই ওই আবাসনকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বেঙ্গালুরু: গুরুগাঁওয়ের মতোই বেঙ্গালুরুতেও দুটি আবাসনে ১০০ জনেরও বেশি আবাসিক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেই অঞ্চলটিকেই কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে মিলবে না ভার্চুয়াল শুনানির লিঙ্ক, নয়া সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের