ফের গভীর রাতে জম্মুর সেনাঘাঁটিতে ড্রোন, লাগাতার নাশকতার ছক!

সোমবার গভীর রাতেও জম্মুর রত্নুচক এলাকায় সুঞ্জবান সেনাঘাঁটিতে ড্রোন এসেছিল বলে খবর সূত্রের।

ফের গভীর রাতে জম্মুর সেনাঘাঁটিতে ড্রোন, লাগাতার নাশকতার ছক!
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 29, 2021 | 9:11 AM

জম্মু: পরপর ৩ দিন, তিনবার ড্রোন (Drone)। জম্মুর সেনাঘাঁটিতে যেন শ্যেনদৃষ্টি জঙ্গিদের। জম্মু বিমানঘাঁটিতে জোড়া বিস্ফোরণের পর রবিবারও রাতে জম্মুর মিলিটারি ক্যাম্পের কাছে দুটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালান সেনা আধিকারিকরা। পালিয়ে যায় দু’টি ড্রোন। এরপর সোমবার গভীর রাতেও জম্মুর রত্নুচক এলাকায় সুঞ্জবান সেনাঘাঁটিতে ড্রোন এসেছিল বলে খবর সূত্রের।

জানা গিয়েছে একেবারে ভোর রাতে আড়াইটে নাগাদ হানা দিয়েছিল ড্রোনটি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরও গায়েব হয়ে যায় সেটি। শনিবার গভীর রাতে ১ টা ৩৭ মিনিটে প্রথম বিস্ফোরণ হয়েছিল জম্মুর বিমানঘাঁটিতে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয় ১ টা ৪৩ মিনিটে। বিশেষ কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও আহত হন ২ বায়ুসেনা আধিকারিক। কঠোর নিরাপত্তা পেরিয়ে বিমানঘাঁটির হ্যাঙ্গারে ড্রোন হামলার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা দেশে।

সেই ড্রোনের উৎস খুঁজে বের করার আগেই আরও ২ বার ড্রোন এল সেনাঘাঁটিতে। যা হালকা ভাবে নিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। বারবার কীভাবে সেনাঘাঁটির এত কাছে চলে আসছে ড্রোন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এবং প্রতিবারই সেনাঘাঁটি সংলগ্ন এলাকায় এসে উৎসেও ফিরে যাচ্ছে ড্রোনগুলি। জম্মু বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণের পর ড্রোনের কোনও ধ্বংসাবশেষই খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা।

যার অর্থ হামলা চালিয়ে নির্বিঘ্নে উৎসে ফিরে গিয়েছে দু’টি ড্রোন। রাতের অন্ধকারে এত নিখুঁত হামলা করে ফিরে গিয়েছে ড্রোন। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, এই ড্রোন নিম্নমানের ড্রোন নয়। যথেষ্ট শক্তিশালী ড্রোনেই হয়েছে হামলা। প্রাথমিক তদন্তে ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডের বম্ব ডেটা সেন্টারের বিশেষজ্ঞদের অনুমান, প্রতিটি বিস্ফোরণে ২ কিলোগ্রামের বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার হয়েছে। আরডিএক্স বা ওই জাতীয় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরকের মাধ্যমেই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান।

তদন্তকারীদের প্রথমে মনে হয়েছিল, জম্মু বিমান ঘাঁটির কাছাকাছি কোনও এলাকা থেকে বোমারু ড্রোন ওড়ানো হয়েছে। কিন্তু যেহেতু ড্রোনের কোনও ধ্বংসাবশেষ মেলেনি, তাই পাক যোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। কারণ যে জায়গায় বিস্ফোরণ হয়েছে, সেখান থেকে পাক আকাশ সীমানার দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার। অর্থাৎ পাক সীমানা পার করে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব।

পাকিস্তানের হাতে এমন কোনও শক্তিশালী ড্রোন নেই। তাই আঙুল উঠছে চিনের বিরুদ্ধে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ড্রোন চিনে তৈরি হলেও হয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে পাকিস্তানে এই ড্রোনের যন্ত্রাংশ একত্রিত হয়েছিল, এই সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। সবটাই নির্ভর করছে তদন্তের ওপর। এনআইএ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে জানা যাবে কোত্থেকে এসেছিল ড্রোনটি।

অন্যদিকে জম্মুতে নিরাপত্তারক্ষীরা এনকাউন্টারে এক লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গিকে খতম করেছেন। কয়েকদিন আগে আইইডি-সহ গ্রেফতার হয়েছে আরও এক লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি। আবার রবিবারই জঙ্গিদের হামলায় স্ত্রী-কন্যা সমেত শহিদ হয়েছেন পুলওয়ামার স্পেশাল পুলিশ অফিসার। সব মিলিয়ে জঙ্গিদের লাগাতার নাশকতায় উত্তাল উপত্যকা। কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু ও কাশ্মীরের দলগুলিকে নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন। তারপরই লাগাতার এই নাশকতায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: গ্রেফতারের পর এনকাউন্টারে খতম লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি