নয়া দিল্লি: বরাবরই তিনি পরিচিত নাস্তিক হিসাবে। ধর্মের সমালোচনা করতে তাঁর বুক কাঁপে না। সেই তসলিমা নাসরিনের দুর্গাপুজোয় যাওয়া ঘিরে বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নবাণ-কুকথার বন্যা। এবার সমালোচনার জবাব দিলেন তসলিমা। জানালেন, তিনি নাস্তিক হলেও, অন্যের ধর্ম পালনের অধিকারে বিশ্বাস রাখেন।
দুর্গাপুজোয় যাওয়া ও অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াকে ঘিরেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত বিশিষ্ট লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সমালোচনার কড়া জবাব দিয়ে ফেসবুক পোস্টে তসলিমা লেখেন, “হ্যাঁ আমি নাস্তিক, নাস্তিক হয়েও আমি হিন্দুদের পুজোয় যাই। যাই, কারণ অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে আমাকে তারা আমন্ত্রণ জানায় । পুজোর অনুষ্ঠানে আমি বলি, ‘আমি নাস্তিক, আমি হিন্দু নই, আমি হিন্দু, ক্রিস্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি, ইসলাম কোনও ধর্মেই বিশ্বাস করি না।’ হিন্দুরাও জানে, যে, আমি ধর্মবিশ্বাসী মানুষ নই, আমি নাস্তিক। আমি নাস্তিক বলে তাদের কোনও আপত্তি নেই, তাদের কোনও অসুবিধে হয় না আমাকে দিয়ে পুজোর উদ্বোধন করাতে, কোনও অসুবিধে হয় না আমাকে পুজো মণ্ডপের মঞ্চে তুলে সম্বর্ধনা দিতে। কোনও অসুবিধে হয় না আমাকে তাদের ভগবানের বেদিতে তুলতে। আমি প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজোর উদ্বোধন করি। নিজে ধর্ম পালন না করলেও অন্যের ধর্ম পালনের অধিকারে আমি বিশ্বাস করি।”
বিজ্ঞানে বিশ্বাসী হিসেবে যে কোনও ধর্মের মতো হিন্দু ধর্মেরও সমালোচনা করেন, বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান-কুসংস্কারের সমালোচনা করেন বলেই জানান তসলিমা। একইসঙ্গে নারীবাদী হিসেবে করভা চৌত, সিঁদুর খেলা, শাঁখা সিঁদুরের সমালোচনা করেন। কিন্তু এ কারণে হিন্দুরা তাঁকে বহিষ্কার করেনি, ঘৃণা করেনি বা মুণ্ডু কেটে নেওয়ার ফতোয়া দেয়নি বলেই উল্লেখ করেন ফেসবুক পোস্টে।
সমালোচকদের কড়া আক্রমণ করে বলেন, “আমাকে ধিক্কার দিচ্ছে হিন্দুদের পুজোয় যাই বলে, তারা কি হিন্দুদের মতো উদার হতে পারবে? পারবে আমাকে, এক নাস্তিককে, যে ধর্মবিশ্বাসী নয়, যে অন্য ধর্মের মতো ইসলামেরও সমালোচনা করে, তাকে দিয়ে মসজিদের উদ্বোধন করাতে? পারবে আমাকে মসজিদের ইমাম বানাতে যার পেছনে দাঁড়িয়ে পুরুষেরা নামাজ পড়বে? আমাকে কি পুরুষেরা যে মিলাদে উপস্থিত থাকে, সেই মিলাদ পড়াতে দেবে ? তাদের মসজিদ কমিটির নেত্রী করবে আমাকে? না, তারা করবে না। তারা শুধু ঘৃণা করবে, তাদের আশেপাশে আমাকে পেলে তারা আমার ”কল্লা কাটবে”। এটিই তারা জানে ভাল। ”