কৃষক নেতার চোখের জলে ফের সীমান্তমুখী ঘরে ফেরা অন্নদাতারা

রাকেশ তিকাইতের কান্নাভেজা আবেদনের পরই উত্তর প্রদেশ থেকে ফের কৃষকরা আন্দোলনস্থলের দিকে রওনা দেন। হরিয়ানা থেকে কৃষকরাও আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন বলে জানান আরেক কৃষক নেতা নরেশ তিকাইত।

কৃষক নেতার চোখের জলে ফের সীমান্তমুখী ঘরে ফেরা অন্নদাতারা
সকাল হতেই স্লোগান দেওয়া শুরু করেন কৃষকরা। ছবি:ANI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 29, 2021 | 11:00 AM

নয়া দিল্লি: প্রশাসনের চিঠি পেয়েই আন্দোলনস্থল ছেড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন কৃষকরা। কিন্তু কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইতের কান্নাভেজা আবেদনই ফিরিয়ে আনল সকলকে। গাজিপুরে দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্ত থেকে আন্দোলনকারী কৃষকদের উৎখাত করতে পুলিশের বিশাল বাহিনী উপস্থিত হলেও অবশেষে পিছু হটতে হল তাঁদেরও। কৃষকরা সাফ জানিয়ে দিলেন, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া অবধি আন্দোলনস্থল ছেড়ে যাবেন না।

প্রজাতন্ত্র দিবসে বিশৃঙ্খলার ঘটনার পরই পুলিশ দিল্লির তিন সীমান্তে কড়া পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। প্রায় ১০০০ পুলিশকর্মী, ৩০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ৬০০ সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন কতরা হয়েছে সেখানে। গাজিপুর সীমান্ত থেকে আন্দোলনকারীদের হটাতে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিল্লি প্রবেশে কৃষকদের বাধা দিতে নতুন ব্যারিকেড, এমনকি সিংঘু সীমান্তে রাস্তাও কেটে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে সীমান্ত ছেড়ে কৃষকদের চলে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়ার পরই বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু করলেও ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকাইতের ডাকে ফের সীমান্তমুখী হয়েছেন তাঁরা।

গতকাল বিকেলেই গাজিপুরের আন্দোলন মঞ্চ থেকে কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত বলেন, “গুলি খাবো, তবুও আন্দোলন থেকে পিছু হটবো না। যতদিন না আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততদিনন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।” পরে সাংবাদিক বৈঠকে কথা বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখের জল মুছে বলেন, “ওরা কৃষকদের উপর লাঠি চালাবে, মারার চেষ্টা করবে। তাঁদের উপর কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। আমরা পিছু হটব না।”

আরও পড়ুন: ঘুচবে দূরত্ব, উত্তরবঙ্গ দিয়ে রেলপথে জুড়ছে ভারত-বাংলাদেশ

রাকেশ তিকাইতের কান্নার এই ভিডিয়ো নিমেষেই ভাইরাল হয়ে যায়। বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়া ট্রাকগুলিও ফের ঘুরিয়ে সীমান্তেই আনা হয়। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা নরেশ তিকাইত টুইট করে বলেন, “হরিয়ানার বিভিন্ন গ্রাম থেকেও কৃষক ভাইরা গাজিপুর সীমান্তের দিকে রওনা দিয়েছেন। তিনটি কালা আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি তাঁরা বাড়ি ফিরবেন না।”

আন্দোলনস্থলে উপস্থিত কৃষকরাও বলেন, “নোটিশ দিয়ে আন্দোলন শেষ করা যায় না। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া অবধি আন্দোলন চলবেই।” আন্দোলনস্থল ফাঁকা করাতে বিকেল থেকে সীমান্তে উপস্থিত পুলিশরাও ভোররাতে পিছু হটেন। সকাল হতেই আন্দোলনকারীরা “জয় জওয়ান, জয় কিষাণ” ও “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” স্লোগান দিতে থাকেন। আজ সকাল ১১টায় উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে মহা পঞ্চায়েতের ডাক দিয়েছেন রাকেশ তিকাইত। সেখানে যোগ দিতে আসছেন হাজার হাজার কৃষক।

আরও পড়ুন: রাতের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সীমান্ত ফাঁকা করার নির্দেশ প্রশাসনের