কেন্দ্রের ইউ-টার্ন: আরটিপিসিআর ছেড়ে এ বার র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টেই জোর

সঠিক ফলাফল দেওয়ার ক্ষেত্রে যে টেস্টের সুনাম সবচেয়ে কম, তার উপরই কেন জোর দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।

কেন্দ্রের ইউ-টার্ন: আরটিপিসিআর ছেড়ে এ বার র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টেই জোর
র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট- বাঁ দিকে, আরটিপিসিআর টেস্ট- ডান দিকে
Follow Us:
| Updated on: May 20, 2021 | 11:51 PM

নয়া দিল্লি: করোনার দৈনিক পরীক্ষা বৃদ্ধি করার স্বার্থে এ বার আরটিপিসিআর ছেড়ে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের উপরই আস্থা রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিখুঁত হিসেবে এতদিন আরটিপিসিআর টেস্টেকেই গণ্য করা হত। নাকের পিছনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে এই সোয়াব পরীক্ষা হয়। তুলনায় র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ফলাফল নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সংশয় থেকে যায়। তা সত্ত্বেও আগামী সময় করোনা পরীক্ষার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে।

কেন্দ্রের এই নতুন নির্দেশিকা প্রত্যক্ষভাবে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দু’মাস আগের মন্তব্যের বিরোধিতা করছে। যেখানে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, মোট টেস্টের মধ্যে যেন ৭০ শতাংশই আরটিপিসিআর করা হয়। পজিটিভিটির হার বেশি এলেও চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বৃহস্পতিবারের গাইডলাইনে বলা হয়েছে, মোট পরীক্ষার ৪০ শতাংশ আরটিপিসিআর হলেই চলবে। বাকি ৬০ শতাংশই র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন যাতে হয় সেদিকে জোর দিতে হবে। সঠিক ফলাফল দেওয়ার ক্ষেত্রে যে টেস্টের সুনাম সবচেয়ে কম, তার উপরই কেন জোর দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ক্রমাগত আরটিপিসিআর টেস্টের সংখ্যা কমাতে শুরু করেছে কেন্দ্র। গত সপ্তাহে গোটা দেশে যেখানে আরটিপিসিআর টেস্টের সংখ্যা ১৬ লক্ষ ছিল, সেটাই বর্তমানে কমিয়ে ১২-১৩ লক্ষে নিয়ে আসা হয়েছে। মাসদুয়েক আগেও কেন্দ্রের টার্গেট ছিল, জুন মাসের মধ্যে দেশে দৈনিক আরটিপিসিআর টেস্টের সংখ্যা ১৮ লক্ষে নিয়ে যাওয়া। সেটাই এখন ধাপে ধাপে কমিয়ে কম করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনিক টেস্টের পরিমাণ আরও বাড়াতে এবং সংক্রমণের বর্তমান চিত্রের কথা মাথায় রেখে এই নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাসদুয়েক আগেও কেন্দ্র বুঝতে পারেনি, দেশে করোনা সংক্রমণের চিত্রটা এত ভয়াবহ আকার নেবে। ফলে এখন টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর উপরই জোর দেওয়া হচ্ছে। আরটিপিসিআর টেস্ট নিখুঁত হলেও এর ফলাফল জানতে অনেক সময় লাগে বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।

আরও পড়ুুন: ভিডিয়ো: বাড়ি বসেই নিজের হাতে করোনা পরীক্ষা করবেন? জানুন সঠিক পদ্ধতি

আমাদের দেশে প্রধানত তিনটি পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা হয়। প্রথমত, আরটিপিসিআর। যার মাধ্যমে পরীক্ষার করলে ১৭.২ শতাংশ পজিটিভ আসে। ট্রুনাট পদ্ধতি। এতে পজিটিভিটির হার ১০.১ শতাংশ। এবং সবার শেষে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। এতে মাত্র ৮.৩ শতাংশ নমুনা পজিটিভ আসে। যদি সব পরীক্ষাই র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটে করা হয়, সেক্ষেত্রে দৈনিক নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা একদিনের মধ্যে ৭০-৮০ হাজার পর্যন্ত বেড়ে যাওয়া সম্ভব বলে হিসেব বলছে। সেই কারণেই এই পদ্ধতিতে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। কারোর উপসর্গ থাকার পর র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তবে সেই ব্যক্তিকে করোনা আক্রান্ত হিসেবেই গণ্য করা হবে। কিন্তু উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও নেগেটিভ এলে আরটিপিসিআর টেস্ট করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুুন: করোনা আবহে ব্ল্যাকের পর হাজির মারাত্মক হোয়াইট ফাঙ্গাস, ক্ষতি হতে পারে গোপন অঙ্গের