Disqualification of Rahul Gandhi: ‘প্রয়োজনে জেলে যাব’, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হতেই কড়া প্রতিক্রিয়া খাড়্গে-প্রিয়াঙ্কাদের
Disqualification of Rahul Gandhi: মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত এবং দুই বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই, শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে খারিজ করা হয়েছে রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ। কংগ্রেস শিবির থেকে এল তীব্র প্রতিক্রিয়া।
নয়া দিল্লি: মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত এবং দুই বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই, শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে খারিজ করা হয়েছে রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ। সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। বলাই বাহুল্য কংগ্রেস শিবির থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। রাহুল গান্ধীর মুখ বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে হাত শিবির। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, গণতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজনে কংগ্রেস নেতারা জেলে যেতেও প্রস্তুত। অন্যদিকে, বিজেপির দাবি নিজ ঔদ্ধত্বের কারণেই বিপদে পড়েছেন রাহুল গান্ধী। এর আগেও, তাঁকে এই ধরনের বেফাঁস মন্তব্য না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিল আদালত। তারপরেও তিনি তাঁর স্বভাব বদলাননি।
কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেছেন, “ওরা (বিজেপি) সবসময়ই তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করার চেষ্টা করেছিল। যাঁরা সত্যি কথা বলে ওরা তাঁদের সংসদে রাখতে চায় না। তবে আমরা সত্য কথা বলা থামাব না। আমদের যৌথ সংসদীয় কমিটির দাবিও থামবে না, প্রয়োজনে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমরা জেলে যাব। আজ বিকেল ৫টায় পার্টি অফিসে আমাদের দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছি। বৈঠকে, আমরা কীভাবে এগোব, তার কৌশল তৈরি করব।”
রাহুল গান্ধীর বোন তথা দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা হিন্দিতে টুইট করে বলেছেন, “নীরব মোদী কেলেঙ্কারি – ১৪,০০০ কোটি। ললিত মোদী কেলেঙ্কারি – ৪২৫ কোটি। মেহুল চোকসি কেলেঙ্কারি – ১৩,৫০০ কোটি। যারা দেশের টাকা লুঠ করেছে, তাদের উদ্ধারে কেন এগিয়ে এল বিজেপি? তদন্তের কথা বললেই তারা পালাচ্ছে কেন? এই নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। বিজেপি কি দুর্নীতিবাজদের সমর্থন করে?” প্রবীণ কংগ্রেস শশী থারুরের মতে, যে দ্রুততায় রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করা হল, তাতে মোদী সরকারের ‘পলিটিকস উইদ গ্লাভস অফ’, অর্থাৎ, রাজনৈতিক প্রতিশোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। থারুর বলেছেন, “আমি এই পদক্ষেপ এবং যে দ্রুততায় তা করা হয়েছে, তাতে হতবাক। আদালতের রায়ের ২৪ ঘন্টার মধ্যে এবং এর বিরুদ্ধে আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় এই পদক্ষেপ করা হল। এটা রাজনৈতিক প্রতিশোধ এবং এটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য অসুস্থ রাজনীতি।”
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির বিরুদ্ধে “স্বৈরাচারী শাসন” চালানোর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, “রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা স্বৈরাচারের আরেকটি উদাহরণ। বিজেপির মনে রাখা দরকার, শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল তারা এবং তার পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল। রাহুল গান্ধী দেশের কণ্ঠস্বর। এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এখন তিনি আরও শক্তিশালী।” মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চভন দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপে প্রমাণ হল যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাহুলকে ভয় পান। তিনি বলেছেন, “রাহুল গান্ধীকে সাংসদ হিসাবে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। দুই বছরের কারাদণ্ড ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা এটা সন্দেহ করেছিলাম। এই সাজা ছিল সংসদের কারও সদস্যপদ বাতিলের জন্য অপরিহার্য। ওরা ছয় মাস বা এক বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করতে পারত। কিন্তু মেয়াদ দুই বছরের মানে তাদের অন্য পরিকল্পনা ছিল এবং তারা আজ সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। আমি এই কাজের নিন্দা করি। এতেই বোঝা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধীকে কতটা ভয় পান।”
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ টুইট করে বলেছেন, “আমাদের ভয় দেখিয়ে চুপ করানো যাবে না। আদানি মহা কেলেঙ্কারি, যাতে প্রধানমন্ত্রীও যুক্ত আছেন, সেই বিষয়ে জেপিসির পরিবর্তে রাহুল গান্ধীকে সংসদে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হল। ভারতীয় গণতন্ত্র ওম শান্তি।” কংগ্রেস নেতা শ্লীনিবাস বিভি বলেছেন, ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কালো দিন’।