ঘি, ওয়াইন আর গ্যাস সিলিন্ডার! প্রেমিকের খুনে মদত প্রাক্তনের, প্রতি পরতে রয়েছে রহস্য
Live in Partner Partner: , যে মহিলাকে বের হতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর নাম অমৃতা চৌহান। সে নিহত যুবকের প্রেমিকা, একসঙ্গেই লিভ ইনে থাকত তারা। ঘটনার দিন, অমৃতা বেরিয়ে যাওয়ার পরই ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ হয়। অমৃতার ফোন ট্রেস করে দেখা যায়, দুর্ঘটনার সময় অমৃতা ফ্ল্যাটের আশেপাশেই ছিলেন। এরপরেই খুনের চার্জ গঠন করা হয় এবং তদন্ত শুরু করা হয়।

নয়া দিল্লি: সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে স্বপ্ন ছিল বড় আধিকারিক হওয়ার। তাঁর ভয়ঙ্কর পরিণতি। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পোড়া দেহ। তিন সপ্তাহ পর ওই ৩২ বছর বয়সী যুবকের মৃত্যুতে গ্রেফতার করা হল প্রেমিকা সহ তিনজনকে। জানা গেল, দুর্ঘটনা নয়, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছিল যুবককে। সেই খুন করেছিল তাঁর প্রেমিকাই।
গত ৬ অক্টোবর, উত্তর দিল্লির তিমরপুরে একটি বাড়িতে আগুন লাগার খবর মেলে। পুলিশ গিয়ে চারতলা ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে বছর বত্রিশের যুবকের দেহ উদ্ধার করে। যুবকের নাম রামকেশ মিনা। তবে প্রথম থেকেই রামকেশের পরিবার অগ্নিকাণ্ডের তত্ত্ব মানতে নারাজ ছিল। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই দেখা যায়, অগ্নিকাণ্ডের আগের দিন একজন মহিলা ও একজন পুরুষ সম্পূর্ণ মুখ ঢেকে বিল্ডিংয়ে ঢুকছে। এর কিছুক্ষণ পর একজন বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পর একজন পুরুষ ও মহিলাকে বের হতে দেখা যায়।
তদন্তে জানা যায়, যে মহিলাকে বের হতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর নাম অমৃতা চৌহান। সে নিহত যুবকের প্রেমিকা, একসঙ্গেই লিভ ইনে থাকত তারা। ঘটনার দিন, অমৃতা বেরিয়ে যাওয়ার পরই ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ হয়। অমৃতার ফোন ট্রেস করে দেখা যায়, দুর্ঘটনার সময় অমৃতা ফ্ল্যাটের আশেপাশেই ছিলেন। এরপরেই খুনের চার্জ গঠন করা হয় এবং তদন্ত শুরু করা হয়।
যা যা তথ্য উঠে আসে, তা চমকে দেওয়ার মতো। জানা যায়, প্রেমিককে খুন করে, ঘি-মদ ঢেলে দেহ পুড়িয়ে চম্পট দিয়েছিল প্রেমিকা অমৃতা চৌহ্বান। প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ ও বন্ধু সন্দীপ কুমারের সঙ্গেই ষড়যন্ত্র করে প্রেমিককে খুন করে। খুনকে দুর্ঘটনা হিসাবে সাজাতে প্রাক্তন প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুকে মোরাদাবাদ থেকে ডেকেছিল অমৃতা।
জানা গিয়েছে, বিএসসি ফরেন্সিকের ছাত্রী অমৃতা ক্রাইম সিরিজের ভক্ত। চলতি বছরের মে মাসেই রামকেশ মিনার সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয়। প্রেমিক রামকেশ তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাখত।
খুনকে দুর্ঘটনা হিসাবে দেখাতে চমকে ওঠার মতো ছক কষে তিনজন মিলে। প্রথমে মিনা-কে গলা টিপে খুন করে। তারপর মৃতদেহে ঘি-মদ মাখিয়ে মাথার কাছে সিলিন্ডার রেখে আগুন ধরায়। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে গান্ধী বিহারের ফ্ল্যাটে আগুন ধরে যায়, দমকল এসে ৩২ বছরের রামকেশ মিনা-র দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে।
ফ্ল্যাটে আগুন লেগে মারা গেছে মিনা, প্রাথমিকভাবে এমনটাই মনে করেছিল পুলিশ। পরে জানা যায়, প্রাক্তন প্রেমিক কাশ্যপ ও বন্ধু সন্দীপকে সঙ্গে নিয়ে মিনা-কে খুন করে অমৃতা। ওয়েব সিরিজ দেখে খুনকে দুর্ঘটনা হিসাবে সাজায় তিনজন মিলে। অমৃতার সন্দেহ ছিল, প্রেমিক মিনা-র কাছে তাঁদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের প্রচুর ছবি-ভিডিয়ো রয়েছে। অমৃতা সেই সব ফেরত চাইলেও মিনা দিতে চায়নি বলে পুলিশকে জানিয়েছে ধৃত। সেই সব ভিডিয়ো-ছবি ফেরত পেতেই প্রেমিককে খুন করে হার্ডডিস্ক নিয়ে পালায় অমৃতা। পুলিশের কাছে জেরায় সব স্বীকার করেছে অমৃতা, উদ্ধারে হয়েছে হার্ড ডিস্ক ও মৃতের জামা-ট্রলি। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার খুন, ষড়যন্ত্র, চুরি ও বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
