Hashim Musa: কে এই হাশিম মুসা? তার উপরেই কেন এত ‘বড়’ অপারেশনের দায়িত্ব?
Hashim Musa: কীভাবে আইএসআই-এর নেকনজরে এল মুসা? এই প্রথম নয়, পহেলগাঁও ছাড়াও ভারতে অন্তত দুবার নাশকতা চালিয়েছে মুসা। শহীদ হয়েছে ভারতের জওয়ানরা।

কলকাতা: নির্লজ্জ পাকিস্তানের কুকীর্তির পর্দাফাঁস! পহেলগাঁওয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যে জঙ্গিরা ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে গুলি করে মারল, তাদের নেতার নাম হাশিম মুসা। পাক সেনার স্পেশ্যাল ফোর্স এসএসজি-র একজন প্রাক্তন কমান্ডো মুসা। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল, ভারতের মাটিতে জঙ্গি হামলার নেপথ্যে এবারও সেই পাকিস্তান।
এখন কে এই মুসা? এত বড় নারকীয় হত্যালীলার দায়িত্ব কেন তাকে দেওয়া হল?
মুসা এখন লস্কর-এ-তৈবার সক্রিয় সদস্য। সূত্রের খবর, স্পেশ্যাল সার্ভিস গ্ৰুপের প্রাক্তন প্যারা কমান্ডো মুসা একদিনে এই দায়িত্ব পায়নি। পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI)-এর কাছে তাদের ব্লু আইড বয় মুসা নিজের যোগ্যতা দিনের পর দিন প্রমাণ করেছে। তার প্রশিক্ষণ হয়েছে পাক সেনা ও আইএসআই-এর হাতে। স্থানীয় কাশ্মীরি ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেনা কর্তারা মুসার সঙ্গে পাক আর্মির স্পষ্ট যোগ পেয়েছেন।
এই প্রথম নয়, মুসা এর আগে ২০২৪-এর অক্টবরে গান্ডেরবালে একটি টানেল নির্মাণের সময় এক চিকিৎসক-সহ ৬ জন নিরীহ শ্রমিককে হত্যার পিছনেও মাস্টারমাইন্ড ছিল বলে সূত্রের খবর। কাশ্মীরের বান্দিপোরা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে মুসা-সহ ২ জন পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি, তারপর নির্বিচারে ৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
তবে মুসা আইএসআই-এর নেকনজরে আসে, ২০২৪-এরই শেষদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লায় হামলা চালিয়ে ২ সেনা জওয়ান ও ২ ভারতীয় কুলিকে হত্যা করে। বারামুল্লার বুটাপাথারি এলাকায় সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় মুসার নেতৃত্বে পাক জঙ্গিরা। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে সেবারও মুসার সঙ্গে পাক-যোগ পেয়েছিলেন সেনাকর্তারা। ভারতীয় জওয়ানদের হত্যা করে পাক গুপ্তচর সংস্থার উপরমহলের লোকেদের নজরে আসে মুসা। মুসা-র উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় কাশ্মীর উপত্যকায় ব্যাপক সন্ত্রাস ছড়ানোর। মুসার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা ছিল তার প্রশ্নাতীত আনুগত্য। পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থার কর্তাদের নির্দেশে সুইসাইড মিশনে ফের কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে মুসা। মুসা জানত, এত বড় হামলা চালানোর পর প্রাণে বেঁচে সে আর পাকিস্তানে ফিরতে পারবে না।
আইএসআই-এর মুসাকে বেছে নেওয়ার পিছনে রয়েছে তার আর্মি ব্যাকগ্রাউন্ড। পাক এসএসজি-কে অত্যন্ত কড়া প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। মুসাও সেই ট্রেনিং পেয়েছে। ‘আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ার’-এ সে দক্ষ, সহজে বললে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও যুদ্ধ চালানোর ক্ষমতা রয়েছে মুসার। বছরের পর বছর পাক রেঞ্জার্সের ট্রেনিংয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে চূড়ান্ত দৃঢ় সে। দিনের পর দিন খাবার না খেয়েও বেঁচে থাকার ক্ষমতা রয়েছে। ঠিক যে কারণে, হামলার ৭ দিন পরেও কোনও কাশ্মীরি গ্রামে খাবার সংগ্রহে আসেনি মুসা। পাক এসএসজি কমান্ডোরা আধুনিক সামরিক অস্ত্রের ব্যবহারেও দক্ষ। আর শুধু অস্ত্র কেন, হ্যান্ড টু হ্যান্ড ব্যাটেলেও ,মুসার মতো এসএসজি কমান্ডোরা নিপুণ হয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কীভাবে কোনওরকম রসদ ছাড়া, যোগাযোগ ছাড়াও টিকে থাকতে হয়, স্পেশ্যাল ফোর্সের কমান্ডোদের সেই ট্রেনিং দেওয়া হয়। একজন প্রাক্তন প্যারা কমান্ডো হিসাবে মুসাও সেই ট্রেনিং পেয়েছিল।
সেই মুসাকেই এবার কোণঠাসা করে ফেলেছে ভারতীয় সেনা। কাশ্মীরের আনডিসক্লোজড লোকেশনে মুসাকে ঘিরে চলছে গুলির লড়াই। মুসা-সহ অন্য জঙ্গিদের কোনওরকম খবর পেতে ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কাশ্মীর পুলিশ।

