নয়াদিল্লি: গান্ধী পরিবারের মেয়ে। তাঁর পরিবারের তিনজন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ভোট ময়দানে সরাসরি কখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তবে কংগ্রেসের হয়ে ভোট প্রচারে অনেক বছর আগে থেকেই দেখা যায় তাঁকে। এবার সেই প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ভোট ময়দানে নামতে চলেছেন। রাহুল গান্ধী ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর উপনির্বাচনে ওই কেন্দ্রে লড়বেন তিনি। ভোট ময়দানে বোনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা সোমবার জানিয়েছেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী।
দাদা রাহুল গান্ধীর চেয়ে বছর দুয়েকের ছোট প্রিয়ঙ্কা। বছর বাহান্নর প্রিয়ঙ্কার মধ্যে অনেকেই ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া দেখতে পান। কিন্তু, এতদিন ভোট ময়দানে তাঁকে দেখা যায়নি। যদিও দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে নেমেছেন। ২০০৪ সালে রায়বরেলিতে মা সনিয়া গান্ধীর প্রচারে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। পাশের আমেঠি কেন্দ্রেও দাদা রাহুল গান্ধীর হয়ে প্রচার করেন। তারপর থেকে বিভিন্ন নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে দেখা গেছে তাঁকে। তবে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বরাবর নীরব থেকেছেন প্রিয়ঙ্কা।
একসময় রাহুলের নেতৃত্বে পরপর নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর প্রিয়ঙ্কার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দাবিও উঠেছিল কংগ্রেসের অন্দরেই। বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও পড়েছিল। বছর পাঁচেক আগে উত্তর প্রদেশে দলের হাল ধরার জন্য প্রিয়ঙ্কাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কিন্তু, ভোট ময়দানে নামার ব্যাপারে প্রিয়ঙ্কার আগ্রহ দেখা যায়নি। ২০১৯ সালে বারাণসী কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। সেই জল্পনা বাস্তবে রূপ পায়নি।
এবার সেই প্রিয়ঙ্কাই ভোট ময়দানে। এদিন রাহুল গান্ধী ঘোষণা করেন, তাঁর ছেড়ে দেওয়া ওয়েনাড আসনের উপনির্বাচনে লড়বেন প্রিয়ঙ্কা। চব্বিশের নির্বাচনে কেরলের ওয়েনাড ও উত্তর প্রদেশের রায়বরেলি থেকে জিতেছিলেন রাহুল। একটি আসন ছাড়তে হত তাঁকে। ওয়েনাড আসন ছেড়ে রায়বরেলির সাংসদ থাকছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেও রাহুল দুটি কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন। আমেঠি ও ওয়েনাড। সেবার আমেঠিতে হেরে যান। তাঁর ‘মান’ বাঁচায় ওয়েনাড। সেই কেন্দ্রই এবার ছেড়ে দিলেন রাহুল। আর সেখানে উপনির্বাচনে বোনকে প্রার্থী করার কথা জানালেন।
এত বছর ভোট ময়দান থেকে দূরে থাকা প্রিয়ঙ্কাও এবার ওয়েনাড থেকে লড়তে প্রস্তুত। তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পর প্রিয়ঙ্কা বলেন, “রাহুল বলেছেন, তিনি ঘনঘন ওয়েনাড আসবেন। তবে ওয়েনাডবাসীকে খুশি করতে আমি কঠোর পরিশ্রম করব।” তিনি আরও বলেন, “ওয়েনাডবাসীর প্রতিনিধিত্ব করতে পারব ভেবে আমি খুবই খুশি। ওয়েনাডবাসীকে আমি তাঁর(রাহুল) অভাব অনুভব করতে দেব না।” প্রথমবার ভোট ময়দানে নামা নিয়ে কি নার্ভাস লাগছে? প্রশ্নের জবাবে প্রিয়ঙ্কা জানিয়ে দিলেন, ওয়েনাডে লড়তে হবে বলে তিনি একদমই নার্ভাস নন।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রপৌত্রী প্রিয়ঙ্কা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর ঠাকুমা। এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কন্যা তিনি। মা সনিয়া গান্ধী এই মুহূর্তে রাজ্যসভার সাংসদ। দাদা রাহুলও লোকসভার সাংসদ। দেশের তিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য প্রিয়ঙ্কা এবার ভোট ময়দানে। এতদিন পর তাঁর ভোট ময়দানে নামতে রাজি হওয়ার কারণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ভোটে জিতে সংসদে যেতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।