Indian Army: চমকে যাবে চিন! যোগী-রাজ্যে বিরাট পদক্ষেপ ভারতীয় সেনার
Indian Army: বর্তমানে উত্তর ভারত সদর দফতর উত্তরাখন্ড, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় শান্তি বজায় রাখে এবং এই অঞ্চলের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির দেখাশোনা করে। পূর্ণাঙ্গ অপারেশনাল কর্পসে পরিণত হলে, উত্তর ভারত সদর দফতর আরও বেশি করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অভিযানে মনোযোগ দেবে।
বেরিলি: যোগী-রাজ্যে এক বিরাট পদক্ষেপ করতে চলেছে ভারতীয় সেনা। এ এমন এক পদক্ষেপ, যাতে চমকে যেতে বাধ্য চিন। উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে চিন সীমান্ত। আর, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে চিনের উৎপাত ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থায় ভারত ও চিনের মধ্যবর্তী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অভিযান চালাতে এক নয়া কর্পস বা বাহিনী গঠন করতে চলেছে ভারতীয় সেনা। উত্তর প্রদেশের বেরিলি শহরে সেনার যে উত্তর ভারত সদর দফতর অবস্থিত, সেই সদর দফতরকেই একটি পূর্ণাঙ্গ অপারেশনাল কর্পসে রূপান্তরিত করতে চলেছে সেনা। বর্তমানে উত্তর ভারত সদর দফতর উত্তরাখন্ড, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ এবং হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড বরাবর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায় শান্তি বজায় রাখে এবং এই অঞ্চলের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির দেখাশোনা করে। পূর্ণাঙ্গ অপারেশনাল কর্পসে পরিণত হলে, উত্তর ভারত সদর দফতর আরও বেশি করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অভিযানে মনোযোগ দেবে।
সাদারণত কোনও কর্পস তার দায়িত্বে থাকা এলাকার মধ্যে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়। যে কোনও ধরনের অভিযান চালানর তাদের কাছে সমস্ত অস্ত্র এবং পরিষেবার পর্যাপ্ত মজুদ থাকে। কোনও কর্পসে সাধারণত তিনটি বিভাগের সেনা থাকে। তবে, প্রয়োজন পড়লে, তার বেশি বা কম বিভাগও থাকতে পারে। প্রতিটি বিভাগে ১৫,০০০ থেকে ১৮,০০০ প্লাটুন থাকে। এতদিন, উত্তর ভারত সদর দফতরে, সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে টহল দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটি ব্রিগেড এবং তার অধীনে কয়েকটি স্কাউট ব্যাটালিয়ন ছিল। গত কয়েক বছরে অবস্থাটা পাল্টে গিয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কিছু বিতর্কিত এলাকায় ঘন ঘন তিন সেনার মুখোমুখি হয়েছে ভারতীয় সেনা। এর ফলে, ধীরে ধীরে এই সদর দফতরের অধীনে, তিনটি স্বাধীন ব্রিগেড তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, উত্তরাখণ্ডে একটি পদাতিক বিভাগকে মোতায়েন করে, এর যুদ্ধ করার ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে এই সদর দফতরকে ‘কমব্যাটাইজড’, অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
কোনও ‘কমব্যাটাইজড’সদর দফতরে যুদ্ধ করার মতো সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র থাকে ঠিকই, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারপরও খামতি থেকে যায়। অপারেশনাল কর্পসে অতিরিক্ত গোলন্দাজ ব্রিগেড, ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড এবং অন্যান্য লজিস্টিক উপাদান থাকে। বেরিলির উত্র ভারত সদর দফতরে যে নতুন কর্পস তৈরি হচ্ছে, তারা ওই এলাকায় সফলভাবে অভিযানের জন্য, সরাসরি তাদের কমান্ডের অধীনে গোলন্দাজ, ইঞ্জিনিয়ার, বিমান বাহিনী-সহ অন্যান্য অস্ত্র, সাজ-সরঞ্জাম এবং সৈন্য পাবে। সদর দফতরের সেনাকর্তারা জানিয়েছেন, এই এলাকায় যেভাবে সৈন্যের সংখ্যা বেড়েছে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে আরও বেশি করে সীমান্ত এলাকায় অভিযানে নজর দিতে হচ্ছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় এক বছর ধরেই এই পদক্ষেপের প্রস্তুতি চলছিল। এই পরিবর্তনের ফলে, সদর দফতরের ফোকাস বদলে যাবে। মূল নজর থাকবে প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখা অঞ্চলেই।
প্রশ্ন উঠছে, উত্তর ভারত সদর দফতরকে রেখেই একটি নতুন কর্পস সদর দফতর তৈরি করা যেত। তাহলে কেন এই রূপান্তরের প্রয়োজন হল? সেনাকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন কর্পস গঠনের জন্য আরও বেশি লোকবল এবং অন্যান্য সম্পদের প্রয়োজন হত। তাই বর্তমান এলাকার সদর দফতরকেই, একটি কর্পস সদর দফতরে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিদ্যমান জনবল দিয়েই এই পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেনাকর্তারা বলছেন, এই বদল, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এবং যুদ্ধের সরবরাহ কেন্দ্রগুলির উন্নয়নের সহায়ক হবে। এই অঞ্চলের সমস্ত নিরাপত্তাগত হুমকির মোকাবিলা একা হাতে করবে এই কর্পস সদর দফতরই। এর জন্য তাদের কারও দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। বেজিং কি শুনতে পাচ্ছে নতুন কর্পসের বুটের শব্দ?