Nithari serial killing: ‘ভারতের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা’! নিঠারি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ
Nithari murder case: অভিযুক্ত মনিন্দর সিং ও সুরিন্দর কোলিকে মুম্বইয়ে সিবিআই হেডকোয়ার্টারে নিয়ে গিয়েও জেরা করা হয়। তাদের পলিগ্রাফি পরীক্ষাও করা হয়। তারপর তারা অপরাধের কথা স্বীকার করে। তারা চকোলেটের লোভ দেখিয়ে শিশুদের বাড়িতে ডেকে আনত। কন্যাশিশুদের ধর্ষণ করে তাদের হত্যা করার পর তাদের লিভার-সহ দেহের অন্যান্য অংশ খেয়েছিল বলেও পুলিশি জেরায় জানিয়েছে অভিযুক্তরা।
নয়ডা: দেশে নৃশংস সিরিয়াল খুনের ঘটনা বলতেই উঠে আসে নিঠারি হত্যাকাণ্ডের (Nithari Murder case) ঘটনা। ২০০৬ সালের সেই ঘটনা আজও হাড় হিম করে দেয়। নয়ডার ব্যবসায়ী মনিন্দর সিং পান্ধার (Moninder Singh Pandher) এবং তার সহকারী সুরিন্দর কোলি (Surinder Koli )। দুজনে মিলে যে পরপর শিশুদের ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করবে, তা স্থানীয়দের কেউই কল্পনা করেনি। এখানেই শেষ নয়, শিশুদের নৃশংসভাবে খুন করার পর তাদের মাংস পর্যন্ত খুবলে খেত বলে অভিযোগ।
সালটা ছিল ২০০৬। নয়ডার নিঠারি গ্রামের কাছ থেকে একের পর এক শিশু নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছিল। তারপর ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সকালে মনিন্দর সিংয়ের বাড়ির পিছন থেকে খুলি ও কঙ্কাল উদ্ধার হয়। এরপর তদন্ত শুরু হতেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। একে-একে উদ্ধার হয় মোট ১৭টি খুলি ও কঙ্কাল। এরপরই মনিন্দর সিং ও তার সহকারী সুরিন্দর কোলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এরপর তদন্ত যত এগোয়, ততই হাড়হিম করা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। মাথার খুলি ও কঙ্কালগুলির ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধরা পড়ে, ওই ১৭টি খুলি মধ্যে ১১টি হল মেয়ের খুলি। এদের খুন করার পর প্রমাণ লোপাট করতে দেহ টুকরো-টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। পলিথিন ব্যাগে করে নর্দমাতেও ফেলা হয়েছিল। এরপর ঘটনার কারণ খুঁজতে তদন্তে নামে সিবিআই। অভিযুক্ত মনিন্দর সিং ও সুরিন্দর কোলিকে মুম্বইয়ে সিবিআই হেডকোয়ার্টারে নিয়ে গিয়েও জেরা করা হয়। তাদের পলিগ্রাফি পরীক্ষাও করা হয়। তারপর তারা অপরাধের কথা স্বীকার করে। তারা চকোলেটের লোভ দেখিয়ে শিশুদের বাড়িতে ডেকে আনত। কন্যাশিশুদের ধর্ষণ করে তাদের হত্যা করার পর তাদের লিভার-সহ দেহের অন্যান্য অংশ খেয়েছিল বলেও পুলিশি জেরায় জানিয়েছে অভিযুক্তরা।
মনিন্দর সিং পান্ধার ও তার সহকারী সুরিন্দর কোলি হতাশাগ্রস্ত ও বিকৃত মানসিকতার ছিল বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মনিন্দর সিং পান্ধারের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগও আনা হয় এবং পর্নোগ্রাফি ব়়্যাকেটের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে বলেও তদন্তকারীদের অনুমান। তারপর দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা চলার পর মনিন্দর সিং পান্ধার ও সুরিন্দর কোলিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় গাজিয়াবাদের সিবিআই আদালত। এই ঘটনার নৃশংসতা তুলে ধরতে ডকুমেন্টারিও হয়েছিল। ‘ভারতের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা’ হিসাবে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের বইতেও স্থান পেয়েছিল এই ঘটনা।
কিন্তু, মনিন্দর সিং পান্ধার ও তার সহকারী সুরিন্দর কোলি নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন জানায়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এদিন দুজনের ফাঁসির সাজা খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই বলে আদালত জানিয়েছে।