AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Ashwini Vaishnaw: ৫-৬মাসের মধ্যে আসছে ভারতের নিজস্ব এআই মডেল! রেল সুরক্ষা ‘কবচ’ নিয়েও বড় খবর দিলেন রেলমন্ত্রী?

Ashwini Vaishnaw: বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বৈষ্ণব জানান, এই ট্রেনের ভিতরে শব্দ এবং কম্পন অনান্য বেশিরভাগ ট্রেনের চেয়ে অনেকটা কম। কারণ বন্দে ভারতের নকশা সেই ভাবেই অনেক ভেবেচিন্তে তৈরি করা হয়েছে।

Ashwini Vaishnaw: ৫-৬মাসের মধ্যে আসছে ভারতের নিজস্ব এআই মডেল! রেল সুরক্ষা 'কবচ' নিয়েও বড় খবর দিলেন রেলমন্ত্রী?
Image Credit: PTI
| Updated on: Apr 11, 2025 | 3:15 PM
Share

গত দশকে ট্রেন দুর্ঘটনা কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বুধবার এই বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় রেলমন্ত্রী জানান, আশা আগামী ছয় বছরের মধ্যে ভারতীয় রেল নেটওয়ার্ক জুড়ে ‘কবচ’ ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে মোতায়েন সম্ভব হবে।

একটি সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে গিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, “পাইলট প্রকল্পের সাড়া ভালো ছিল…ভালো অগ্রগতি হয়েছে। ১৫,০০০ কিলোমিটারের মধ্যে ১০,০০০ লোকোতে এটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অনেক ধনী দেশ তাদের নেটওয়ার্ক কভার করতে প্রায় ২০ বছর সময় নিয়েছে। আমার মনে হয় আমরা ছয় বছরের মধ্যে এটি করতে সক্ষম হব।”

গত বছরের জুলাই মাসে রিসার্চ ডিজাইনস অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন (RDSO) এর সংস্করণ ৪.০ অনুমোদনের পর, ভারতে তৈরি কভাচ অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন (ATP) সিস্টেমটি দেশব্যাপী গ্রহণের দিকে এগিয়ে চলেছে।

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বৈষ্ণব জানান, এই ট্রেনের ভিতরে শব্দ এবং কম্পন অনান্য বেশিরভাগ ট্রেনের চেয়ে অনেকটা কম। কারণ বন্দে ভারতের নকশা সেই ভাবেই অনেক ভেবেচিন্তে তৈরি করা হয়েছে।

১৯ এপ্রিল কাটরা-শ্রীনগর বন্দে ভারত ট্রেনের আসন্ন উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি এর তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, “জম্মু ও শ্রীনগরকে রেলপথে সংযুক্ত করা দেশের একটি বড় স্বপ্ন। প্রধানমন্ত্রী মোদী অত্যন্ত দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এই স্বপ্ন দেখেছেন। এটি এমন এক প্রকল্প যার জন্য প্রচণ্ড অধ্যবসায়, অসাধারণ নকশার কাজ এবং প্রচুর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনপুট প্রয়োজন ছিল। এটি একটি অত্যন্ত কঠিন প্রকল্প, তবে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির কারণেই এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়েছে।”

ভারতের প্রথম দেশীয় চিপ এই বছর লঞ্চের পথে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।

অশ্বিনী বৈষ্ণব বুধবার সামিটে ঘোষণা করেন যে, ভারতে তৈরি প্রথম সেমিকন্ডাক্টর চিপ এই বছরই চালু হতে পারে। পাঁচটি ইউনিটের নির্মাণ কাজ পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়েও চলেছে।

টাটা ইলেকট্রনিক্স পাওয়ারচিপ সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কর্পোরেশন (PSMC) এর সঙ্গে অংশীদারিত্বে গুজরাটের ধোলেরায় দেশের প্রথম সেমিকন্ডাক্টর ফ্যাব তৈরি করছে।

রেলমন্ত্রী বলেন, “পাঁচটি ইউনিটের নির্মাণকাজ খুব ভালোভাবে এগিয়ে চলেছে। এখন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে, এবং কিছু জায়গায়, যন্ত্রপাতি যাচাইকরণ ইতিমধ্যেই চলছে। এই বছর প্রথম মেড-ইন-ইন্ডিয়া চিপ চালু করার জন্য এটি একেবারে সঠিক পথে।”

আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে ভারতের একটি মৌলিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরির অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত হবে বলে ধারণা। তিনি বলেন, “আমরা সঠিক পথে আছি।”

আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা অর্জনকারী AI কম্পিউটিং ক্ষমতার গণতান্ত্রিকীকরণের জন্য ভারতের প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়ে বৈষ্ণব বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই ১৪,০০০ GPU তালিকাভুক্ত করেছি। প্রতিভা এবং প্রযুক্তির এই সমন্বয় আমাদের স্টার্টআপ এবং ডেভেলপারদের আরও শক্তিশালী করে তুলছে।”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভারতের এআই, ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন এবং স্টার্টআপ খাতের সাফল্য তুলে ধরেন এই দিন। বিশেষ করে এআই (Artificial Intelligence) কম্পিউটিং অ্যাক্সেস, ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের ক্ষেত্রে কথা উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে।

ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনের ব্যাপারে বৈষ্ণব জানান, গত ১০ বছরে এই খাতে উৎপাদন পাঁচ গুণ এবং রপ্তানি ছয় গুণ বেড়েছে। তিনি এর কৃতিত্ব দেন ধাপে ধাপে পরিকল্পিত উৎপাদন নীতিকে—যেখানে প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত পণ্য সংযোজন শুরু হয়ে এখন কম্পোনেন্ট উৎপাদন পর্যন্ত পৌঁছেছে। এর পাশাপাশি প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (PLI) স্কিমের মতো নীতিগুলিও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। “ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন খাতে বর্তমানে প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন, যাদের অনেকেই গ্রামীণ এলাকা থেকে এসেছেন”, তিনি বলেন।

আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে ভারতের উন্মুক্ত মনোভাবের কথা পুনরায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যে কোনো দেশ বা কোম্পানি চাইলে ভারতে এসে কাজ করতে পারে, তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। অধিকাংশ কোম্পানি জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমে দ্রুত শিখতে ও এগিয়ে যেতে চায়।”

ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের উত্থানকে ‘সফলতা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে বৈষ্ণব জানান, “বর্তমানে দেশে ১.৫ লক্ষেরও বেশি স্টার্টআপ রয়েছে, যেখানে কয়েক বছর আগেও ছিল মাত্র কয়েকশো।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের ইকোনমিতে সব ধরনের উদ্যোগের জন্য জায়গা রয়েছে। অনেক স্টার্টআপ কঠিন ও গভীর প্রযুক্তির উপর কাজ করছে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে। আইআইটি মাদ্রাজেই ১০০-র বেশি ডিপ-টেক স্টার্টআপ রয়েছে। সমস্যার সমাধানমূলক চিন্তা প্রতিটি খাতে প্রয়োজন।”

সমাজে প্রযুক্তি ব্যবহারের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, সাম্প্রতিক রণবীর আল্লাবাদিয়া ও সময় রায়নার বিতর্ক প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা সবাই সমাজে বসবাস করি। প্রযুক্তি ব্যবহারকারী হিসেবে, হোক সেটা কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা ব্যবহারকারী, আমাদের দায়িত্ব বোঝা উচিত। আমি কী বলছি, আমার সীমা কোথায়—তা বুঝে চলা দরকার।”

বর্তমানে ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের ভবিষ্যৎ ও এর প্রভাব নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও, মন্ত্রী বৈষ্ণবের বক্তব্য সরকারের প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও দায়িত্বশীল ডিজিটাল ব্যবহারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরালো করে তোলে।