Lakhimpur Violence: হিংসার ঘটনায় মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী, ৪ মৃত্যু ঘিরে উঠে আসছে একাধিক তত্ত্ব
UP CM Yogi Adityanath on Lakhimpur Violence: লখিমপুর খেরির জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডঃ ললিত কুমার জানান, হাসপাতালে যাদের নিয়ে আসা হয়েছিল, তাদের মধ্যে দুজনের আগেই মৃত্যু হয়েছিল।
লখনউ: লখিমপুরের ঘটনায় মর্মাহত উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। রবিবারের হিংসার ঘটনায় তিনি শোক প্রকাশ করে বললেন, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। রাজ্যজুড়ে শান্তি বজায়ের আবেদনও জানান তিনি।
রবিবারই একটি অনুষ্ঠানে লখিমপুর খেরি(Lakhimpur Kheri)-তে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্য্যের। এদিকে, কৃষকরা (Farmers) কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর সফরের কথা জানতে পেরেই পথ আটকে আন্দোলন করতে শুরু করে। মন্ত্রীর কনভয় প্রবেশ করার সময়ই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, চাকার নীচে চাপা পড়ে যান ২ আন্দোলনকারী। পরে মোট ৪ জনের মৃত্যুর খবর জানা যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় লখিমপুর খেরি।
পরে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক আহত ব্যক্তি মাটিতে পড়ে রয়েছে, তবুও হুঁশ নেই আন্দোলনকারীদের। গাড়ি চাপা পড়ার ঘটনা সামনে আসতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় সংঘর্ষস্থলে। পরিস্থিতি যাতে নাগালের বাইরে না বেরিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লখিমপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, “কৃষকদের বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের” মারধরের জেরে তিনজন বিজেপি কর্মী এবং এক জন গাড়ির চালকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার প্রমাণ হিসেবে তাঁর কাছে একটি ভিডিয়োও রয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
অজয় কুমার মিশ্র জানান, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যকে আনতে যাচ্ছিলেন কয়েকজন দলীয় কর্মী। পথেই টিকুনিয়ায় বিক্ষোভকারী কৃষকরা দলীয় কর্মীদের গাড়িতে পাথর ছোড়ে।কৃষকদের বাঁচাতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি এবং তা সঙ্গে সঙ্গে উল্টে যায়। তিনি আরও জানান, লখিমপুর খেরিতে ‘কৃষকদের বিক্ষোভে জড়িত কয়েকজনে’র মারধরে তিন বিজেপি কর্মী এবং একজন গাড়ির চালকের মৃত্যু হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, “দলীয় কর্মীরা নন, বরং কৃষকরা দলীয় কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। কৃষকদের বিক্ষোভের মধ্যে কিছু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী মানুষ ছিল। তারাই এই কান্ড ঘটিয়েছে। বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত।” কৃষকরা গাড়িতে পিষে মেরে ফেলার অভিযোগ আনলেও একাধিক সূত্রের দাবি, তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মন্ত্রীর গাড়ি উল্টে যায় এবং তার নীচেই চাপা পড়ে যান দুই আন্দোলনকারী।
কৃষক সংগঠনগুলির তরফে জানানো হয়েছে, লখিমপুর খেরির ঘটনার প্রতিবাদে গোটা দেশজুড়ে জেলাশাসকদের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হবে। আজই উত্তর প্রদেশ যাচ্ছেন কৃষক নেতা রাকেশ তিকাইত। এছাড়াও কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, ভূপেশ বাঘেল, সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব, তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার, দোলা সেন, প্রতিমা মণ্ডল, আবির রঞ্জন বিশ্বাস এবং সুস্মিতা দেব লখিমপুরে যাবেন। তবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে তাদের গ্রামে ঢুকতে না দেওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
লখিমপুর খেরির জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডঃ ললিত কুমার জানান, হাসপাতালে যাদের নিয়ে আসা হয়েছিল, তাদের মধ্যে দুজনের আগেই মৃত্যু হয়েছিল। তবে এখনও মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়নি, কৃষক সংগঠনের অনুমতির অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।