ভোপাল: আইসিইউতে উপচে পড়ছে রোগী। এই সময়ে এক করোনা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল পরিজনেরা। প্রাথমিক চিকিৎসা করা হলেও হাসপাতালের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, রোগীকে দ্রুত আইসিইউ ভর্তি করানো প্রয়োজন, যা এখানে সম্ভব নয়। অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় সেই রোগীর। তাতেই চিকিৎসকের উপর চড়াও হলেন প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী। অপমানে রাতারাতি ইস্তফাও দিয়েছেন ওই চিকিৎসক।
মধ্য প্রদেশের একটি সরকারি হাসপাতালের এই ঘটনা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পিসি শর্মা ও তাঁর সহচর যোগেন্দ্র চৌহান ভোপালের জেপি হাসপাতালের চিকিৎসক যোগেন্দ্র শ্রীবাস্তবের উপর চড়াও হন। ওই চিকিৎসক ধীরে কথা বলতে অনুরোধ করলে তারা আরও চিৎকার করতে থাকেন, আঙুল তুলে শাসান। এই ঘটনার পরই ইস্তফা দেন ওই চিকিৎসক।
ঠিক কী হয়েছিল? প্রত্যক্ষদর্শী এক চিকিৎসক বলেন, “দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় তাঁর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৩৩ শতাংশ (স্বাভাবিক মাত্রা ৭৫ শতাংশ)। তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করার পরই পরিবারের লোকজনদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়। হাসপাতালের আইসিইউ রোগীতে পূর্ণ থাকায় এই হাসপাতালে ভর্তি সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই এত কিছু হয়ে গেল।”
This is the way they treat us,happened today while I was at duty ..In this video they are shouting at Dr.Yogendra Shrivastav Sir who is working day and night from past 1 year in Covid.He is the nodal officer incharge of Covid.He resigned today from his duties .. https://t.co/01FipRPQBR pic.twitter.com/TQTS8CbGAm
— Ritika Pandey (@DrRitikaPandey) April 10, 2021
আরও পড়ুন: ‘তৃতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়াবহ’, টিকাকরণে বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ফের আর্জি কেজরীবালের
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগীকে আনার এক ঘণ্টার মধ্যেই চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরই চড়াও হন কংগ্রেস নেতা। যদিও পরে এই বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “সকালে ওই রোগীর পরিবারের লোকজন আমার সঙ্গে ওই চিকিৎসকের বার্তালাপ করিয়েছিল। সেই সময় তিনি রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলেননি। উল্টে তিনি রোগীর পরিবারকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছিলেন।”
ভাইরাল ভিডিয়ো সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার এক সমর্থক ওনার সঙ্গে উচু স্বরে কথা বলেছিল। পরে আমি ক্ষমাও চেয়ে নিই সেই কারণে। আমার বিধানসভার একজন রোগী মারা গেলেন, এই পরিস্থিতিতে একজন ব্যক্তি কী রেগে যেতে পারেন না? ওই গরিব পরিবারকে যে রোগী নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল, সেই বিষয়ে কেউ কথা বলছে না।”
হাসপাতালের চিকিৎসক তথা নোডাল অফিসারের ইস্তফার ঘটনায় সমালোচনা করেছেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি টুইট করে বলেন, “আজ ভোপালের জেপি হাসপাতালে যেভাবে কিছু লোক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ব্যবহার করেছেন, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। চিকিৎসকদের সঙ্গে এই প্রকার দুর্ব্যবহার করার অধিকার কারোর নেই।”
हमारे #CoronaWarriors लगातार अपनी जान दाँव पर लगाकर पीड़ित मानवता की सेवा में कार्यरत हैं। मैं स्वयं भी कई बार अपील कर चुका हूँ कि हम सभी को एकजुट होकर, राजनीति से ऊपर उठकर इन सभी का सहयोग करना चाहिए और इनका मनोबल बढ़ाना चाहिए ताकि वे और बेहतर तरीके से समाज की सेवा करें।
— Shivraj Singh Chouhan (@ChouhanShivraj) April 10, 2021
ইস্তফার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আজকের ঘটনার পরই ওই প্রবীণ চিকিৎসক দুঃখ পেয়ে ইস্তফা দিয়েছেন। আমরা এমন একটি সমাজে বাস করছি, যেখানে করোনার বিরুদ্ধে যে সমস্ত চিকিৎসকরা লাগাতার যুদ্ধ চালাচ্ছেন, তাঁদের মনোবল না বাড়িয়ে এই প্রকার ব্যবহার করা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: ‘আজ লকডাউন নিয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে, কাল..’, টুইট বার্তায় কীসের ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী?