‘তৃতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়াবহ’, টিকাকরণে বয়সসীমা তুলে দেওয়ার ফের আর্জি কেজরীবালের
বয়সসীমা তুলে নেওয়ার ব্যখ্যা দিয়ে তিনি জানান, দিল্লিতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই ৪৫ বছরের কম বয়সী। ফলে তাদের যদি টিকা দেওয়া যায়, তবে বাকিদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
নয়া দিল্লি: লকডাউন চান না স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এই সময়ে টিকাকরণে বয়সের সীমারেখা তুলে দেওয়া উচিত বলেই জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল(Arvind Kejriwal)। কেন্দ্রের কাছে রাজধানীর করোনা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে তিনি বললেন, “তবে করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ যতটা ভয়াবহ ছিল, তার থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর বর্তমান পরিস্থিতি। ”
দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজারের গণ্ডি পার করতেই নৈশ কার্ফু (Night Curfew) জারি করেছিল কেজরীবাল সরকার। গতকাল বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, লকডাউন(Lockdown) জারি করা হবে না। তবে বিধিনিষেধ আরও কঠোরভাবে জারি করা হবে। সেই মতোই রাতে সমস্ত জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি এবং শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে ২০ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। রেস্তরাঁ এবং পানশালাগুলিতেও সর্বাধিক ৫০ শতাংশ মানুষের উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ এপ্রিল অবধি নৈশ কার্ফুর পাশাপাশি এই বিধিনিষেধ জারি থাকবে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, “করোনা সংক্রমণের চেইন ভাঙতে গেলে ৪৫ বছরের কম বয়সীদেরও টিকা দেওয়া প্রয়োজন। আমি এর আগেও কেন্দ্রকে বহু বার টিকাকরণে বয়সসীমা তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের জন্য প্রচার চালাতে প্রস্তুত দিল্লি সরকার।”
বয়সসীমা তুলে নেওয়ার ব্যখ্যা দিয়ে তিনি জানান, দিল্লিতে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই ৪৫ বছরের কম বয়সী। ফলে তাদের যদি টিকা দেওয়া যায়, তবে বাকিদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।
সম্প্রতি দিল্লির এইমসে ৩৭ জন চিকিৎসক করোনা টিকা নেওয়ার পরও সংক্রমিত হওয়ায় টিকার কার্যকারিতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, টিকা নিলেই আপনি যে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবেন, তা নয়। টিকা নেওয়ার পরও করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে রোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারবে না। তাই অনুরোধ করছি টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক পরুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।”
রাজ্যের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি লকডাউন জারি করতে চাই না। যখন স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে, তখনই লকডাউনের প্রয়োজন পড়ে। দয়া করে সকলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলুন। বিনা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হবেন না। অসুস্থ হলেই চিকিৎসা করান। রাজ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় বেড বা ভেন্টিলেটরের অভাব নেই। আমি বলছি, আগেই বেসরকারি হাসপাতালের দিকে ছুটবেন না। ওখানে শয্যা সংখ্যা কম। আগে সরকারি হাসপাতালে যান।”