Moral Policing: নীতি পুলিশি কোনওভাবেই বরদাস্ত নয়! প্রাপ্তবয়স্কদের স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরণে কী বলছে হাইকোর্ট?
Madhya Pradesh High Court : আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী এবং তাঁর স্ত্রী উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক। এমন ক্ষেত্রে কোনও নীতি পুলিশি বরদাস্ত করা যেতে পারে না, যেখানে দুই প্রাপ্তবয়স্কই স্বেচ্ছায় বিয়ে বা লিভ-ইনের মাধ্যমে একসঙ্গে থাকতে ইচ্ছুক। এখানে কাউকে জোর করা হয়নি।
ভোপাল : নীতি পুলিশি (Moral Policing) কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। প্রাপ্তবয়স্ক যে কেউ বিয়ে বা লিভ-ইনের মাধ্যমে একসঙ্গে থাকতে পারেন। সাংবিধানিক অধিকারকে বহলা রাখল মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট (Madhya Pradesh High Court)। হাইকোর্টের বিচারপতি নন্দিতা দুবে এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন। এক স্বামীর অভিযোগ ছিল, তাঁর স্ত্রীর বাবা-মা তাঁদের মেয়েকে জোর করে বেনারসে নিয়ে গিয়েছেন এবং সেখানে বেআইনিভাবে তাঁর স্ত্রীকে আটকে রেখেছেন। মামলাকারী আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী স্বেচ্ছায় তাঁকে বিয়ে করেছেন এবং স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে চান।
মামলাকারী ব্যক্তির স্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে, আদালতকে জানান, তাঁর বয়স ১৯ বছর এবং তিনি স্বেচ্ছায় মামলাকারীকে বিয়ে করেছেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি সেই সঙ্গে এও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তাঁকে কখনোই ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করা হয়নি এবং তিনি যা করেছেন তা তার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী করেছেন।
তিনি আরও বলেন যে তাঁর বাবা-মা এবং ঠাকুরদা-ঠাকুমা তাঁকে জোর করে বেনারসে নিয়ে গিয়েছেন এবং সেখানে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। মামলাকারীর বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়ার জন্য ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন যে তিনি আবেদনকারীর সঙ্গে যেতে চান কারণ তিনি স্বেচ্ছায় তাকে বিয়ে করেছেন।
রাজ্যের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে মধ্যপ্রদেশ ধর্মের স্বাধীনতা আইন, ২০২১ দ্বারা নির্ধারিত বিধান অনুসারে বিয়েটি বাতিল। আইনজীবীর বক্তব্য ছিল,আইনের তিন নম্বর ধারা অনুসারে, কোনও ব্যক্তি বিয়ের উদ্দেশ্যে ধর্মান্তরিত হবেন না এবং এই বিধান লঙ্ঘন মানে বিয়ে বাতিল বলে গণ্য করা হবে। অতএব, আইনের তিন নম্বর ধারা এবং ছয় নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বিবাহকে বাতিল করে দেয়।
রাজ্যের তরফে এই দাবি খারিজ করে হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে,”যাই হোক না কেন, মামলাকারী এবং তাঁর স্ত্রী উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক। এমন ক্ষেত্রে কোনও নীতি পুলিশি বরদাস্ত করা যেতে পারে না, যেখানে দুই প্রাপ্তবয়স্কই স্বেচ্ছায় বিয়ে বা লিভ-ইনের মাধ্যমে একসঙ্গে থাকতে ইচ্ছুক। এখানে কাউকে জোর করা হয়নি।”
বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, “এই আদালতের সামনে স্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছে যে তিনি আবেদনকারীকে বিয়ে করেছেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকতে চান। মামলাকারীর স্ত্রী একজন প্রাপ্তবয়স্কা। তাঁর বয়স নিয়ে কোনও পক্ষেরই কোনও দ্বন্দ্ব নেই। সংবিধান প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ককে একটি অধিকার দেয়। এই দেশের নাগরিক তার নিজের ইচ্ছামতো জীবন যাপন করবে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের কৌঁসুলির আপত্তি খারিজ করা হচ্ছে।”
আদালত রাজ্য এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, মামলাকারী স্বামীর কাছে তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য এবং দম্পতি যাতে নিরাপদে নিজেদের বাসভবনে পৌঁছান, তাও দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্তৃপক্ষকে আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে দম্পতিকে স্ত্রী বাবা-মা কোনও হুমকি না দেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।