‘লকডাউনের জন্য প্রস্তুত থাকুন’, হুঁশিয়ারি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যবাসীকে লকডাউন(Lockdown)-র জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)।
মুম্বই: আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। মহারাষ্ট্রে ব্যপকহারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে লকডাউনের হুঁশিয়ারি দিলেন। রবিবার তিনি বলেন, “রাজ্যে কোভিডবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে না। লকডাউনের জন্য প্রস্তুত হন।” গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ, যা গোটা দেশে মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি।
বিগত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণ ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গতবারের মতোই চলতি বছরেও সর্বাধিক আক্রান্তের খোঁজ মহারাষ্ট্রেই মিলছে। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গতমাসেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি লকডাউন না চাইলেও তাঁকে বাধ্য করা হচ্ছে। রাজ্যবাসীর কাছে বারংবার অনুরোধ করা হলেও কেউ নির্দেশিকা অনুসরণ করছেন না।
এদিন করোনার টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বাড়ন্ত আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি এভাবেই এগোতে থাকলে রাজ্যে বড় স্বাস্থ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে। একইসঙ্গে করোনা সংক্রমণের কারণে মৃতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে।”
উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরেই মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বিপুল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় একদিকে যেমন ৩৫ হাজার ৭২৬ জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তেমনই ১৬৬জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই চলতি বছরে সে রাজ্যে সর্বাধিক মৃতের সংখ্যা।
রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ফের একবার বৃদ্ধি পেতেই পুনরায় কোভিড হাসপাতালগুলিকে চালু করা হচ্ছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গতকালই রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে নৈশ কার্ফুর কথা ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, রাত আটটায় রাজ্যের সমস্ত রেস্তরাঁ, শপিং মল, বাগান বন্ধ করতে হবে। সকাল সাতটার আগে খোলা যাবে না এগুলি। সমুদ্রতটেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই নির্দিষ্ট সময়ে কোথাও পাঁচজনের বেশি জনসমাগম করা যাবে না এবং নিয়মভঙ্গে এক হাজার টাকা জরিমানার কথাও ঘোষণা করা হয়।
রবিবারের বিশেষ বৈঠকে মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে জানান, যেহেতু সাধারণ মানুষ নিয়ম মানছেন না, তাঁরা প্রশাসনকেই জোর করে লকডাউনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব ডঃ প্রদীপ ব্যস বলেন, “বর্তমানে রাজ্যে মোট ৩.৭৫ লাখ আইসোলেশন বেড রয়েছে, যারমধ্যে ১.০৭ লাখ ইতিমধ্যেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। বাকি বেডগুলিও দ্রুতগতিতে ভর্তি হচ্ছে। রাজ্যে মোট ৬০ হাজার ৩৪৯টি অক্সিজেন বেড রয়েছে, যারমধ্য়ে ১২ হাজার ৭০১টি বেডে করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। মোট ৯ হাজার ৩০টি ভেন্টিলেটরের মধ্যেও ১৮৮১টি করোনা রোগীর চিকিৎসাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবেই যদি সংক্রমণ বাড়তে থাকে, তবে আগামিদিনে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় আকাল দেখা যাবে।”
আরও পড়ুন: ‘আমি ক্ষমতায় থাকব কিনা, সেটি প্রশ্ন নয়’, ভোটের পরই কীসের ইঙ্গিত দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী?