চণ্ডীগঢ়: পুলিসের হাতে তুলে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভোল বদলালেন গতকাল কৃষকদের হাতে ধরা পড়া যুবক। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে নিজের মুখেই বলেছিলেন, “এক পুলিস কর্তার প্রশিক্ষণে প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্রাক্টর মিছিলে গুলি চালানো ও তার আগে ২৪ তারিখ চার কৃষক নেতাকে খুনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।” শনিবার পুলিসের হাতে তুলে দিতেই বয়ান বদলে যুবকের দাবি, তাঁকে মারধর করে জোর করে এই কথাগুলি বলানো হয়েছিল।
তবে কেবল ওই যুবক নয়, হরিয়ানা পুলিস (Haryana Ploice)-র দাবিও একই। ডিজিপি মনোজ যাদব বলেন, “ধৃত ওই যুবককে প্রচন্ড মারধর করেছিল আন্দোলনকারী কৃষকরা। প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর মিছিলে গুলি চালানো কিংবা চার কৃষক নেতাকে খুনের পরিকল্পনা সম্পর্কে যে দাবি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আন্দোলনকারীদের চাপের মুখেই এই বয়ান দিতে বাধ্য হয়েছিল অভিযুক্ত যুবক।” তিনি আরও জানান, ধৃত যুবকের আরও দুই সঙ্গীকে আটক করে রেখেছে কৃষকরা এবং তাঁদের উপর অত্যাচারও করা হয়েছে।
ধৃত যুবককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর ডিজিপি বলেন, “কৃষকরা ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে যে পুলিসের তরফে ওই যুবককে পাঠানো হয়েছিল আন্দোলনে অশান্তি সৃষ্টি করতে। ধৃত ওই যুবকের পিঠে আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। ওই যুবকই আমাদের জানিয়েছে যে আরও দুইজনকে আটক করে রেখেছে কৃষকরা এবং তাঁদের নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: পা মেলাবেন পাওয়ারও, আগামিকাল মুম্বইয়ে জড়ো হচ্ছে কয়েক হাজার কৃষক
গত শুক্রবার কৃষকরা সিংঘু সীমান্ত (Singhu Border) থেকেই এক সন্দেহজনক যুবককে আটক করে, তাঁকে চেপে ধরতেই সে জানায়, কৃষক আন্দোলনে (Farmers Protest) অশান্তির সৃষ্টি করতেই তাঁদের পাঠানো হয়েছে। সে ছাড়াও আরও নয়জন সদস্য রয়েছে, তাঁদের মধ্যে দুইজন মহিলাও রয়েছে। সাংবাদিকদের সামনে রুমালে মুখ ঢাকা ওই যুবক বলেন, “তাঁদের পরিকল্পনা ছিল ২৬ জানুয়ারি ট্রাক্টর মিছিল শুরু হলে পুলিস যখন বাধা দেবে, তখন মিছিলের প্রথম সারি থেকেই গুলি চালানো হবে। স্বাভাবিকভাবেই পুলিস পাল্টা গুলি চালাবে। মিছিলের মাঝেও পুলিসের বেশে আরও কয়েকজন সঙ্গী থাকবে, তাঁরাও গুলি চালাবে। ফলে পুলিস ভাববে যে আন্দোলনকারী কৃষকরাই মিছিল থেকে গুলি চালাচ্ছে।”
যুবক আরও যোগ করে বলেন, “মিছিলের আগে ২৪ তারিখ চার কৃষক নেতাকে মঞ্চে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাঁদের চেনার জন্য ছবিও দেওয়া হয়েছে। এই পুরো পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের পিছনে রাই থানার স্টেশন ইনচার্জ রয়েছেন।” যদিও পরবর্তী সময়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধৃত যুবক যে নাম উল্লেখ করেছিল, সেই নামে কোনও পুলিস অফিসারই নেই।
হরিয়ানা পুলিসের বিরুদ্ধে আন্দোলনের শুরুতে কৃষকদের বলপূর্বক বাধা দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিজিপি মনোজ যাদব বলেন, “প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে প্রবেশকারী মিছিলের কাউকেই বাধা দেওয়া হবে না। তবে রাজ্যের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যাতে কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সর্বাধিক সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।”
আরও পড়ুন: অন্নদাতাদের পাশে বামেরাও, দাবি ‘আগামী বাজেটেই প্রত্যাহার হোক কৃষি আইন’