Rajasthan: বৃদ্ধার মাংস ভক্ষণ, কামড় পুলিশ-ডাক্তারকেও! শেষে মৃত্যু রহস্যময় রোগাক্রান্ত যুবকের
Man caught eating flesh of elderly woman in Rajasthan's Pali: রহস্যময় রোগে আক্রান্ত ছিলেন যুবক। ধরা পড়েছিলেন এক বৃদ্ধার মাংস খেতে গিয়ে। কামড়ে দিয়েছিলেন পুলিশ এবং ডাক্তারদেরও। শেষ পর্যন্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
যোধপুর: এক বৃদ্ধাকে হত্যা করে, তাঁর মাংস খাচ্ছিল ২৫ বছরের যুবকটি। ওই অবস্থায় তাঁকে হাতে নাতে ধরে ফেলেছিল রাজস্থানের পালি গ্রাম এলাকার এক গ্রামের বাসিন্দারা। তবে, স্বাভবিক অবস্থায় ছিল না যুবকটি। তাঁর ভয়ঙ্কর হিংস্র এবং পাগলাটে আচরণ দেখে, তাঁকে দ্রুত পালি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা সন্দেহ করেছিলেন তিনি জলাতঙ্ক আক্রান্ত। তাই পরদিন তাঁকে যোধপুরে পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে যোধপুরের এমজি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত শনিবার ভর্তির পর থেকে তিনি স্থিতিশীলই ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কিন্তু, কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে হিংস্র পশুর মতো আচরণ করছিলেন তিনি, সেই বিষয়ে রহস্য থেকে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সুত্রপাত হয়েছিল ২৭ মে। ওই দিন সারদানা গ্রামের বাসিন্দারা দেখেছিলেন, গ্রামের এক বৃদ্ধা মহিলাকে হত্যা করে কামড়ে কামড়ে তাঁর মাংস খাচ্ছেন ওই যুবক। এরপরই তাঁকে ধরার চেষ্টা করেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু, সেই সময় ভয়ঙ্কর হিংস্র আচরণ করা শুরু করেছিলেন তিনি। কয়েকজন গ্রামবাসীকে কামড়েও দেন। পুলিশ এসে তাঁকে পালি হাসপাতালে এবং পরে যোধপুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এমনকী পুলিশকর্মীদেরও তিনি আঁচড়ে-কামড়ে দিয়েছিলেন। তার কামড় থেকে সংক্রমণ হতে পারে এই আশঙ্কায়, কামড় খাওয়া সকলকে প্রতিরোধমূলক টিকাও দিতে হয়।
তিনি ঠিক কী রোগে আক্রান্ত, সেই বিষয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন যোধপুরের এমজি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে তাঁদের মনে হয়েছিল, ওই যুবকের হয় কুকুরের কামড় থেকে জলাতঙ্ক রোগ হয়েছে। নাহলে ‘ভাইরাল এনসেফালাইটিস’ বা মস্তিষ্কের গুরুতর রোগ ‘কুরু ইলনেসে’ আক্রান্ত। যুবকের সিটি স্ক্যান এবং লিভার ও কিডনি পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা যায়, তাঁর একটি লিভার খারাপ হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, সম্ভবত তিনি নিয়মিত মদ্যপান করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা বলেছেন, “পালি থেকে জানানো হয়েছিল তিনি জলাতঙ্কের রোগী এবং অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। তাই আমরা তাঁকে হাসপাতালের একটি বিচ্ছিন্ন কক্ষে রেখেছিলাম। মনোরোগ ও নিউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকরাও তাঁকে পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর রোগ শনাক্ত করা যায়নি।”
এদিকে পুলিশের দাবি, ওই যুবক স্থানীয় বাসিন্দা নন। স্থানীয় এলাকায় কেউ তাঁকে চেনেন না। তাঁকে গ্রেফতার করার সময়, তাঁর পকেটে একটি আধার কার্ড ছিল। সেই আধার কার্ড অনুযায়ী যুবকের নাম সুরেন্দ্র ঠাকুর, মুম্বই শহরের বাসিন্দা। তাঁর পকেটে একটি বাসের টিকিটও ছিল। টিকিটটি ছিল মুম্বই থেকে মধ্য প্রদেশের শাহপুরার। যুবকের আত্মীয়স্বজনের খোঁজে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিল রাজস্থান পুলিশ। কিন্তু, আধার কার্ডে দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে সুরেন্দ্র ঠাকুরের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফলে, তাঁর কী রোগ হয়েছিল, কীভাবে সেই অবস্থায় তিনি মুম্বই থেকে রাজস্থানের পালিতে এলেন – এই রকম বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। পুলিশের জানিয়েছে, তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও যোগাযোগ করা হলে, তবেই এই বিষয়ে নতুন কিছু জানা যেতে পারে।