নয়া দিল্লি: নাগাল্যান্ডে (Nagaland) সেনা অভিযানে নিরপরাধ গ্রামবাসীদের মৃত্যুর ঘটনায় এবার উঠে এল নয়া তথ্য। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, নিরাপরাধ বাসিন্দাদের মৃত্যু ধামাচাপা দিতে, তাদের পোশাক বদলানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। শনিবার রাতে নাগাল্যান্ডে অনুপ্রবেশ (Infiltration) রুখতে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয় ১৫ জনের। এদের মধ্যে ১৪ জনই গ্রামবাসী ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশ যখন উত্তাল, সেই সময়ই চাঞ্চল্যকর দাবি করল গ্রামবাসীরা।
ওটিং গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, লংখাও নদীর তীরে গুলির শব্দ শোনার পরই গ্রাম থেকে একদল যুবক গুলির উৎস খুঁজতে বের হয়। তারা ঘটনাস্থলে যখন পৌঁছয়, বেশ কয়েকজনকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখতে পায়। কয়েকজনের গায়ে আবার জলপাই রঙের পোশাক, যা জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে সাহায্যে করে, সেই ধরনের পোশাক দেখা যায়। এরপরই বাসিন্দাদের দাবি, গোটা ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে বা অন্য কোনও কাহিনী তারি করতেই মৃত গ্রামবাসীদের পোশাক বদলে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল।
শনিবার নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সীমান্তবর্তী তিরু গ্রামে অনুপ্রবেশ রুখতে গিয়েই গোটা ঘটনাটি ঘটে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় ১৪ জন গ্রামবাসীর। এরপর ক্ষিপ্ত জনতার মারধরে মৃত্যু হয় এক জওয়ানের। রবিবার এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে গুলি চালানো হলে, সেই গুলিতেও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
ওই গ্রামেরই এক প্রত্য়ক্ষদর্শীর দাবি, গুলির শব্দ শুনে তারা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, একটি পিকআপ ভ্যান দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে ওই ভ্য়ানকে ধরে ফেলার পরই দেখতে পায়, আরও তিনটি ভ্যান রয়েছে, তাতে সেনা জওয়ানরা বসা। গাড়ির ভিতরে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ রাখা, তাদের মধ্যে অনেকেরই দেহ অন্য কাপড়ে ঢাকা দেওয়া। প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, সেনাবাহিনী যদি ভুল করেই গুলি চালায়, তবে পোশাক বদলানোর কেন চেষ্টা করলেন তারা?
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করেছিলেন, তিনিও জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনা বাহিনীর ওই পিকআপ ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন তারা। ত্রিপল তুলতেই দেখতে পান, সারি সারি দেহ সাজানো।
শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ সেনার একটি দল তিরু-ওটিং সড়কের উপর একটি পিক-আপ ট্রাককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ট্রাকটিতে আটজন আরোহী ছিলেন – তাঁদের মধ্যে ছয়জন ঘটনাস্থলেই মারা যান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বাকি দুজনও মারা যান। ট্রাকে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় কয়লা খনির শ্রমিক ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।