জেলে সাজা কাটানো মহিলাদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার : এন ভি রামন
NV Ramana : অনেকসময়ই দেখা যায়, মহিলারা সাজা কাটিয়ে বেরোনোর পর অনেক বেশি কুসংস্কারের শিকার হন। যে অপরাধের সাজা তিনি ইতিমধ্যেই কাটিয়ে এসেছেন, সেই অপরাধের কলঙ্ক তাঁকে কাঁধে নিয়ে বইতে হয় সমাজে। অনেক বেশি বৈষম্যের শিকার হন মহিলারা।
নয়াদিল্লি : জেলে বসে সাজা কাটানোর পরে সমাজের মূলস্রোতে ফেরা মোটেও সহজ হয় না। আর আসামি যদি হন মহিলা, তাহলে তাঁর জন্য বিষয়টি আরও অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। জেল খেটে বেরোনোর পর তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ আতস কাঁচের তলায় রেখে দেখে সমাজ। অপরাধের সাজা কাটানোর পরেও সেই কলঙ্ক তাঁর পিছু ছাড়ে না। সমাজের মধ্যে এক গুরুতর বৈষম্যের শিকার হতে হয়। আর এই ব্যবস্থা বন্ধ হওয়া দরকার। এমনটাই মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামন। সাজা কাটিয়ে বেরোনোর পর মহিলারাও যাতে পুরুষদের মতো কাজের সুযোগ পান, তার ব্যবস্থা করা ভীষণভাবে দরকার বলে মনে করছেন তিনি।
বুধবার ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি (NALSA)-র ৩২ তম সেন্ট্রাল অথরিটি সভায় এই কথা জানিয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, অনেকসময়ই দেখা যায়, মহিলারা সাজা কাটিয়ে বেরোনোর পর অনেক বেশি কুসংস্কারের শিকার হন। যে অপরাধের সাজা তিনি ইতিমধ্যেই কাটিয়ে এসেছেন, সেই অপরাধের কলঙ্ক তাঁকে কাঁধে নিয়ে বইতে হয় সমাজে। অনেক বেশি বৈষম্যের শিকার হন মহিলারা। সমাজের মূলস্রোতে তাঁদের পুনর্বাসন অনেক বেশি ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে করছেন তিনি।
এন ভি রামন মনে করেন, “ভারতের মতো জনহিতকর দেশে, আমাদের কর্তব্য মহিলা কয়েদিরা যাতে পর্যাপ্ত পুনর্বাসনের সুবিধা পান, সেই ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে তাঁদের বিভিন্ন রকম গঠনমূলক কাজ শিখিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে তাঁরা পুরুষ কয়েদিদের মতোই সাজা কাটানোর পর সমাজের মূলস্রোতে মিশতে পারেন।”
এর জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তাও উল্লেখ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। মহিলা কয়েদিরা যাতে কোনওরকম বৈষম্য ছাড়াই পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় শিক্ষা এবং ভোকেশনাল ট্রেনিং পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি যাতে তাঁরা সমাজে কোনও একটি সম্মানজনক কাজ করে নিজের মতো আয় করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করাও দরকার।
ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির চেয়ারম্যান তথা বর্ষীয়ান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত গতকাল নবগঠিত সেন্ট্রাল অথরিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচিতি করিয়ে দেন। এছাড়া জাতীয় লোক আদালতেরও ভূয়সি প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। বর্তমানে দেশে রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৩৩ টি জাতীয় লোক আদালত রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩৩ লাখেরও বেশি জমে থাকা মামলার মধ্যে ১৫ লাখের বেশি মামলা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দিয়েছে জাতীয় লোক আদালত। আর এই জাতীয় লোক আদালতের কারণে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে চাপ অনেকটাই কমেছে।
আরও পড়ুন : এবার থেকে সশরীরেও শুনানি হবে নিম্ন আদালতে, তবে শর্ত বেঁধে দিল হাইকোর্ট