Covaxin Effectiveness: ডেল্টার দাপটেও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ৫০ শতাংশ কার্যকরী কোভ্যাক্সিন, দাবি নয়া গবেষণায়

Lancet Study on Covaxin Effectiveness: গবেষণায় দেখা যায়, আরটি-পিসিআর পরীক্ষা হওয়ার ১৪ দিন বা তার আগেই যদি কোভ্যাক্সিনের দুটি টিকা নেওয়া হয়ে যায়, তবে উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের উপর কোভ্য়াক্সিনের কার্যকারিতা ৫০ শতাংশ। সাত সপ্তাহ ধরে নিয়মিত পরীক্ষা করা হলেও এই কার্যকারিতা একই মাত্রায় ছিল।

Covaxin Effectiveness: ডেল্টার দাপটেও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ৫০ শতাংশ কার্যকরী কোভ্যাক্সিন, দাবি নয়া গবেষণায়
ডেল্টার দাপটে কিছুটা প্রভাবিত হয়েছে কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 24, 2021 | 8:47 AM

নয়া দিল্লি: করোনার উপসর্গযুক্ত রোগীদের (Symptomatic COVID-19 Patient) ক্ষেত্রে কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) দুটি ডোজ় ৫০ শতাংশ অবধি কার্যকরী, এমনটাই জানা গেল বাস্তব জগতে প্রথম কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতার পর্যালোচনায়। ইতিমধ্যেই এই গবেষণার ফলাফল ল্যান্সেট জার্নালে (Lancet Journal) প্রকাশিত হয়েছে।সম্প্রতিই ল্যান্সেটে প্রকাশিত অন্তর্বর্তী একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, উপসর্গযুক্ত রোগীদের উপর কোভ্য়াক্সিনের দুটি ডোজ় ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকরী। কিন্তু এপ্রিল থেকে মে মাসে করোনা আক্রান্ত রোগীদের উপর নতুন করে পরীক্ষায় জানা গেল, ৭৭ শতাংশ নয়, ৫০ শতাংশ কার্যকরী কোভ্যাক্সিন।

দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (AIIMS) -র ২৭১৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর এই পরীক্ষা করা হয়েছিল গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ মে-র মধ্যে। এদের মধ্যে ১৬১৭ জনের আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছিল এবং সকলেই উপসর্গযুক্তও ছিলেন।

গবেষকরা জানিয়েছে, সেই সময় দেশে ডেল্টা ভ্য়ারিয়েন্টের (Delta Variant) দাপট চলছিল। মোট সংক্রমণের ৮০ শতাংশই এই ‘অতি সংক্রামক’ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। দিল্লির এইমসের মেডিসিন বিভাগের অতিরিক্ত অধ্যাপক ডঃ মনীশ সোনেজা বলেন, “আমাদের গবেষণায় কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নিয়ে আরও পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে এসেছে। যে সময়ে দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছিল, সেই সময়ই এই গবেষণা করা হয়েছিল। আমাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকাকরণই সবথেকে সুরক্ষিত ও কার্যকরী পথ। এরই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য নীতির কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত সুরক্ষাও গ্রহণ করা প্রয়োজন, যেমন মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।”

কীভাবে চলেছিল এই গবেষণা?

গবেষকরা উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তদের উপর কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছিলেন। ২৭১৪ জন কর্মীদের মধ্যে ১৬১৭ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এবং ১০৯৭ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। আক্রান্ত হওয়ার দিন, আগে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা, কীভাবে আক্রান্ত হলেন ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি কোভ্যাক্সিনের টিকাপ্রাপ্তদের উপর সংক্রমণের প্রভাব ও টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, আরটি-পিসিআর পরীক্ষা হওয়ার ১৪ দিন বা তার আগেই যদি কোভ্যাক্সিনের দুটি টিকা নেওয়া হয়ে যায়, তবে উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের উপর কোভ্য়াক্সিনের কার্যকারিতা ৫০ শতাংশ। সাত সপ্তাহ ধরে নিয়মিত পরীক্ষা করা হলেও এই কার্যকারিতা একই মাত্রায় ছিল।

কোভ্য়াক্সিনের টিকার প্রথম ডোজ়ের ৭ ও ২১ দিন পর তার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হলে, তা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম ছিল। গবেষণালব্ধ ফলে নিশ্চিত করা হয়েছে, আগের গবেষণাগুলিতে কোভ্যাক্সিনের দুটি ডোজ়ে যে সর্বোচ্চ পরিমাণ সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা সঠিক। প্রতিটি টিকাকরণের ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানও অনুসরণ করা উচিত। ডেল্টা সহ করোনার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের উপর কোভ্যাক্সিন কতটা কার্যকরী, তা জানতে আরও গবেষণার প্রয়োজন, বিশেষত যে সমস্ত রোগীদের মধ্যে সংক্রমণ গুরুতর আকার ধারণ করেছে।

কোভ্যাক্সিনের তিন দফার ট্রায়ালে সংক্রমণের বিরুদ্ধে যতটা কার্যকরী বলে দাবি করা হয়েছিল, এই গবেষণায় তার ফল তুলনামূলকভাবে কম হলেও এক্ষেত্রে গবেষকরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন ক্ষেত্র ও সংক্রমণের রূপের উপর ভিত্তি করে কার্যকারিতার ফলে কিছুটা পরিবর্তন আসতেই পারে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, যেহেতু হাসপাতালের কর্মীদের উপর এই গবেষণা করা হয়েছিল, তাই তাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি। এছাড়াও করোনা সংক্রমণ যখন শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, সেই সময় এই গবেষণা করা হয়েছিল। এপ্রিল-মে মাসে দিল্লির বাসিন্দা ও হাসপাতাল কর্মীদের মধ্যে আক্রান্তের হার অনেকটাই বেশি ছিল। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবও ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার উপর পড়তে পারে বলে গবেষকরা জানান।