ওড়িশা: রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সেরেছিলেন তাঁরা। এরপর পরিবারের উপস্থিতিতে সামাজিক উপাচার মেনে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওড়িশার ওই যুগলের। কিন্তু বিয়ের দিন বর, বরযাত্রী কেউই আসেনি। এরপরই মাকে সঙ্গে নিয়ে ওই যুবকের বাড়ির সামনে গিয়ে ধরনায় বসেন তরুণী। টকটকে লাল বিয়ের পোশাক, গা ভর্তি গয়না, মাথা ভরা সিঁদুর নিয়ে সটান যুবকের বাড়ির সামনে গিয়ে তরুণী বলেন, স্ত্রীর মর্যাদা তিনি আদায় করেই ছাড়বেন। প্রয়োজনে যা করতে হয় করবেন তিনি।
ওড়িশার বেরহামপুরের ঘটনা। সুমিত সাহু নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওই তরুণীর। তরুণীর দাবি, তাঁদের রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে তাঁদের খাতায় কলমে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়ির লোকজনের উপস্থিতিতে এবার সামাজিক বিয়েতে চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু বিয়ের বাসরে মেয়ের বাড়ির লোকজন পৌঁছে গেলেও সেখানে পাত্রপক্ষ আসেনি। একাধিক বার ফোন, মেসেজ করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন ওই তরুণী। এরপরই তিনি ঠিক করেন, বিয়ের মণ্ডপে দাঁড়িয়ে থেকে সময় নষ্ট করবেন না। সোজা মাকে নিয়ে চলে যান সুমিতদের বাড়ি।
ওই তরুণীর অভিযোগ, “২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আমরা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করি। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথম দিন থেকে আমার উপর অত্যাচার করত। একদিন আমাকে ওদের ঘরে আটকেও রাখে। প্রথম দিকে আমার স্বামী আমাকে সমর্থন করত। কিন্তু যত দিন যায় ও ওর বাড়ির লোকজনের কথাই শুনতে শুরু করে। আমরা মহিলা পুলিশ স্টেশনে অভিযোগও জানাই। এরপরই আমার শ্বশুরমশাই আমাদের বাড়িতে এসে বলেন, তাঁরা সমস্ত তিক্ততা ভুলে নতুন করে শুরু করতে চান। হিন্দু উপাচার মেনে সামাজিক বিবাহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথাও বলেন।”
তরুণীর কথায়, “২২ নভেম্বর, সোমবারই সেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ের মণ্ডপে পাত্র এসে পৌঁছয়নি। এরপরই আমি ঠিক করি ওদের বাড়ি যাব।” তরুণীর মায়ের অভিযোগ, সুমিত তাঁর মেয়েকে ব্যবহার করে এখন পিঠ দেখাচ্ছেন। যদিও এ বিষয়ে ছেলেটির বাড়ির কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে সুমিত সাহুদের বাড়ির সামনে ধরনার খবর পৌঁছয় থানায়। বেরহামপুরের সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (SP) পিনাক মিশ্র ইন্ডিয়া টুডে’কে জানান, এই একই বিষয়ে কিছুদিন আগে মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
পিনাক মিশ্রের কথায়, “এফআইআরে যাঁর নাম রয়েছে, ইতিমধ্যেই তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এরপরই ওই ছেলের বাড়ির তরফেও মেয়ের বাড়ির লোকজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আপাতত আদালতে বিচারাধীন বিষয়টি।”