Mulayam Singh Yadav: ভাইয়ের কথায় তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ছেলেকেই! দল নিয়ে কতটা কঠোর ছিলেন মুলায়ম?

Samajwadi Party: দল থেকে বহিষ্কার করলেও পরেরদিনই আবার ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে নেন মুলায়ম। আজম খান ও লালু প্রসাদের মধ্যস্থতাতেই বৈঠকে বসেন বাবা-ছেলে। ঘণ্টাখানেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকেই মেটে বিরোধ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শিবপাল যাদবকে দিয়েই মুলায়ম ঘোষণা করান যে অখিলেশকে দলে ফিরিয়ে আনার কথা।   

Mulayam Singh Yadav: ভাইয়ের কথায় তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ছেলেকেই! দল নিয়ে কতটা কঠোর ছিলেন মুলায়ম?
অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 10, 2022 | 1:56 PM

নয়া দিল্লি: চলে গেলেন সকলের প্রিয় ‘নেতাজি’ মুলায়ম সিং যাদব। সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদবের মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমেছে উত্তর প্রদেশ সহ গোটা দেশেই। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ছেলে অখিলেশ যাদব। দলীয় সমর্থকরাও ইতিমধ্যেই গুরুগ্রামের হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন প্রিয় নেতাকে শেষবার দেখার জন্য। সমাজবাদী পার্টি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল উত্তর প্রদেশের ইটাহ জেলায় মুলায়ম সিংয়ের গ্রামের বাড়িতেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

মুলায়ম সিং যাদবের প্রয়াণে ফের একবার একজোট হয়েছে সমাজবাদী পরিবার। এই সমাজবাদী পরিবার গঠন, ভাঙন ও তা ফের একজোট করার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মুলায়ম সিং যাদবই। ভাই শিবপালের সঙ্গে যখন ছেলে অখিলেশের বিরোধ বাঁধে, তখন ছেলেকে দল থেকে বহিষ্কার করতেও এক মুহূর্ত ভাবেননি মুলায়ম। আবার দলীয় কর্মীদের দাবি মেনে ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে নিতেও দ্বিধা করেননি তিনি। যাদব পরিবার, যার সঙ্গে যদু বংশের তুলনাও করা হয়, তার উত্থান-পতনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়েছিলেন মুলায়ম।

ভারতীয় জনতা পার্টি, কংগ্রেস, একের পর এক দল ঘুরে তিতিবিরক্ত হয়েই ১৯৯২ সালে নিজের দল সমাজবাদী পার্টি গঠন করেছিলেন মুলায়ম সিং যাদব। সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন ভাই শিবপাল সিং যাদব, রাম গোপাল সিং যাদব। যতদিন মুলায়ম সিং যাদবের হাতে সমাজবাদী পার্টির দায়িত্বভার ছিল, ততদিনই সবই ঠিক ছিল সপা পরিবারে। কিন্তু ছেলে অখিলেশের হাতে দলের দায়িত্বভার তুলে দিতেই শুরু হয় দলীয় কোন্দল। অখিলেশের নেতৃত্বে কাজ করতে বেঁকে বসেন মুলায়মের ভাই শিবপাল।

বিরোধের সূত্রপাত- 

উত্তর প্রদেশের যাদব পরিবারে বিরোধ আগেও ছিল, কিন্তু কখনওই তা বড় আকার নেয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে অখিলেশের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিতেই বেঁকে বসেন শিবপাল যাদব। তিনি দাবি করেন, যতদিন মুলায়ম সিং যাদবের হাতে দলের দায়িত্বভার ছিল, ততদিন দলে তাঁর গুরুত্ব ছিল। কিন্তু অখিলেশ দায়িত্ব গ্রহণ করতেই, ধীরে ধীরে দলে তাঁর সমস্ত ক্ষমতা, অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। অখিলেশ দলের নেতৃত্বে থাকলে কাজ করা সম্ভব নয়, এ কথা সাফ জানিয়ে দেন শিবপাল।

দল থেকে বহিষ্কার অখিলেশ-

২০১৬ সালের শেষ দিনেই মুলায়ম সিং যাদব হঠাৎ ঘোষণা করেন যে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে অখিলেশ যাদবকে। দলের নিয়মের বিরুদ্ধাচারণের জন্যই অখিলেশকে তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন মুলায়ম। ছেলের পাশাপাশি খুড়তুতো ভাই রামগোপাল যাদব, যিনি অখিলেশের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত, তাঁকেও দল থেকে বহিষ্কার করে দেন। জল্পনা ছিল, শিবপালের অভিযোগ শুনেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুলায়ম।

এক রাতেই ঘরে ফেরালেন ছেলেকে-

দল থেকে বহিষ্কার করলেও পরেরদিনই আবার ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে নেন মুলায়ম। আজম খান ও লালু প্রসাদের মধ্যস্থতাতেই বৈঠকে বসেন বাবা-ছেলে। ঘণ্টাখানেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠকেই মেটে বিরোধ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শিবপাল যাদবকে দিয়েই মুলায়ম ঘোষণা করান যে অখিলেশকে দলে ফিরিয়ে আনার কথা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গোটা ঘটনাটিই নাটক ছিল মুলায়ম সিং যাদবের। তিনি কোনওদিনই ছেলেকে দল থেকে তাড়াতে চাননি। ভাইয়ের দাবি না মানলে দলে ভাঙন ধরতে পারে, এই আশঙ্কাতেই তিনি দল থেকে অখিলেশকে বহিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু অখিলেশের সমর্থনেই দলের ৮০ শতাংশ বিধায়ক থাকায়, রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদল করেন মুলায়ম।

বাধ্য হয়েই দল থেকে দূরে গেলেন শিবপাল?

এক বছর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, ২০১৮ সালে প্রগতীশীল সমাজবাদী পার্টি লোহিয়া দলের সূচনা করেন শিবপাল সিং যাদব। নতুন দল সম্পর্কে তিনি বলেন, “সমাজবাদী পার্টিতে একসঙ্গে থাকতে চাইছিলাম, কিন্তু কিছু পরগাছার জন্য দলে থাকা সম্ভব হল না।”