PM Modi on Ratan Tata: ‘এই কষ্ট সহজে ভোলার নয়’, রতন টাটার মৃত্যুর খবর পেয়ে কী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী?

Ratan Tata Demise: রতন টাটার পোষ্য প্রেমের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, "রতন টাটাজির মহত্ত্ব শুধু বোর্ডরুমে বা তার সহকর্মীদের সাহায্য করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সমস্ত জীবের প্রতি তাঁর মমতা ছিল। পশুদের প্রতি তাঁর গভীর ভালবাসা সকলের কাছে পরিচিত ছিল।"

PM Modi on Ratan Tata: 'এই কষ্ট সহজে ভোলার নয়', রতন টাটার মৃত্যুর খবর পেয়ে কী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী?
রতন টাটার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Nov 09, 2024 | 1:38 PM

নয়া দিল্লি: এক মাস কেটে গেল রতন টাটার প্রয়াণের। এক মাস পর তাঁকে নিয়ে আবেগঘন  খোলাচিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রতন টাটার অবদান, তার জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। একইসঙ্গে তাঁর প্রয়াণে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও আবেগঘন বার্তা দেন নমো।

এ দিন এক্স হ্যান্ডেলে প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটাকে স্মরণ করে লেখা চিঠি ভাগ করে নেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই নিবন্ধে প্রথমেই তিনি লিখেছেন, “আজ রতন টাটাজির প্রয়াণের এক মাস হল। গত মাসের এই দিনে, যখন আমি তাঁর মৃত্যুর খবর পাই, তখন আমি আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এখনও আমার মনে অক্ষত রতন টাটাজির চলে যাওয়ার বেদনা। এই কষ্ট ভুলে যাওয়া সহজ নয়। রতন টাটাজির প্রয়াণে ভারত তার এক মহান পুত্রকে হারিয়েছে, এক অমূল্য রত্নকে খুইয়েছে।”

তিনি আরও লেখেন, “শহর থেকে গ্রাম, মানুষ তার অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভব করছে। আমরা সবাই এই দুঃখের ভাগীদার। একজন শিল্পপতি, উদীয়মান উদ্যোক্তা বা পেশাদার, সবাই তার মৃত্যুতে শোকাহত। আর এই দুঃখ আমরা শুধু ভারতীয়রাই নয়, সারা বিশ্বে অনুভব করছে। রতন টাটা তরুণদের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। তাঁর জীবন, তাঁর ব্যক্তিত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে এমন কোনও স্বপ্ন নেই যা পূরণ করা যায় না, এমন কোনও লক্ষ্য নেই যা অর্জন করা যায় না। রতন টাটাজি সবাইকে শিখিয়েছেন যে নম্র ব্যবহার এবং অন্যদের সাহায্য করে সাফল্য অর্জন করা যায়। তিনি একটি পুরো প্রজন্মকে বড় স্বপ্ন দেখতে এবং উদ্ভাবনের দিকে সাহসী পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করেছেন।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রতন টাটা দেশের তরুণদের চেষ্টাকে সমর্থন করে, নতুন প্রজন্মকে ঝুঁকি নিতে উৎসাহিত করতেন। তাঁর পদক্ষেপ ভারতে উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তার সংস্কৃতি বিকাশে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। আমরা অবশ্যই আগামী কয়েক দশকে ভারতে এর ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাব। রতন টাটাজি সর্বদা সেরা মানের পণ্য উৎপাদনের উপরে জোর দিয়েছিলেন। সর্বোত্তম মানের পরিষেবা এবং ভারতীয় উদ্যোগগুলিকে বৈশ্বিক মানদণ্ড তৈরির পথ দেখিয়েছিলেন। আজ, যখন ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নয়নের লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছে,  আশা করি যে তাঁর (রতন টাটা) দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং ভারত বিশ্বমানের  পরিচয়কে গড়বে।”

রতন টাটার পোষ্য প্রেমের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, “রতন টাটাজির মহত্ত্ব শুধু বোর্ডরুমে বা তার সহকর্মীদের সাহায্য করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সমস্ত জীবের প্রতি তাঁর মমতা ছিল। পশুদের প্রতি তাঁর গভীর ভালবাসা সকলের কাছে পরিচিত ছিল। তিনি প্রায়ই তাঁর কুকুরের ছবি শেয়ার করতেন, যা তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। আমার মনে আছে, যখন মানুষ রতন টাটাজিকে বিদায় জানাতে জড়ো হচ্ছিল… তাঁর কুকুর গোয়াও ভিজে চোখ নিয়ে সেখানে পৌঁছেছিল।”

জাতীয় স্বার্থে রতন টাটা যে কাজগুলি করেছিলেন, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বচ্ছ ভারত মিশন এবং ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য রতন টাটাজির অবদান জনকল্যাণের প্রতি তাঁর গভীর প্রতিশ্রুতিকেই প্রতিফলিত করে। আমার মনে আছে অসমে দুই বছর আগে আমরা যৌথভাবে রাজ্যে ক্যানসার হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলাম। ভাষণে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে তিনি তাঁর জীবনের শেষ বছরগুলি স্বাস্থ্যখাতে উন্নতির জন্য উৎসর্গ করতে চান।”

খোলা চিঠিতে মুম্বই হামলার প্রসঙ্গও টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ২৬/১১-এ মুম্বইয়ে জঙ্গিদের হামলার নিশানায় ছিল তাজ হোটেলও। ওই ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রতন টাটাজি সর্বদা প্রথম জাতির চেতনাকে সর্বাগ্রে রেখেছিলেন। ২৬/১১-এর সন্ত্রাস হামলার পর মুম্বইয়ের আইকনিক তাজ হোটেল পুনরায় চালু করা জাতির একত্রিত হওয়ার প্রতীক ছিল। তাঁর এই পদক্ষেপ একটি বড় বার্তা দিয়েছিল যে ভারত থামবে না…ভারত নির্ভীক এবং সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথা নত করতে অস্বীকার করে।”