
সিকিমের ভার্চুয়াল বক্তব্য শেষ। খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে যেতে পারেননি। বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকেই ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন তিনি। এবার বাংলায় আসছেন তিনি। অপারেশন সিঁদুরের পর বাংলায় প্রথম তিনি। শুধু তাই নয়, আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের আগেও এই প্রথম বাংলায় আসছেন তিনি। ফলত, এ দিনের প্রধানমন্ত্রীর সভা যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ বলার অপেক্ষা রাখে না। এক নজরে সকল আপডেট…
যে যে রাজ্যে বিজেপি রয়েছে সেখানে দ্রুত বিকাশ হচ্ছে। তাই বাংলার লোকজনকে বলব আমাদের কোমর বেঁধে নামতে হবে। সামনে নির্বাচন আছে। তাই এ রাজ্য়ের সব পরিবারের সুরক্ষা, সুবিধার গ্যারান্টি দিতে হবে। ভবিষ্যতে এই প্রয়াস আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিকশিত ভারতের জন্য বাংলার উন্নয়ন দরকার। বাংলার পুরনো গৌরব ফেরাতে হবে। এটা আমরা সকলে মিলে করব।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে বাংলার মানুষও রেগে ছিলেন। আমি এই রাগ জানি। জঙ্গিরা সিঁদুর মিটিয়ে ছিল। আমাদের সেনা ওদের সিঁদুরের শক্তি বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন পাকিস্তান বিশ্বকে কী বলবে? পজেটিভ কোনও খবরই নেই।
১৭৪৭ সালে ভাগাভাগি সময় থেকে ওরা ভারতে হামলা করে। এরপর বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা করে। পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের মহিলাদের ধর্ষণ করেছিল। যখন সোজা যুদ্ধ হয়, তখন পরাজয় নিশ্চিত। সেই কারণে পাকিস্তান জঙ্গিদের সাহায্য নেই।
পহেলগাঁওয়ের পর ভারত বিশ্বকে বলে দেয়। আর যদি ভারতে জঙ্গি হামলা হয় তাহলে শত্রুকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। পাকিস্তান শোনো, তিনবার ঘরে ঢুকে তোমাদের মেরেছি। আমরা শক্তির আরাধনা করি। আমরা দুর্গার আরাধনা করি। ১৪০ কোটির দেশবাসী শুনুন অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি।
চা বাগানের শ্রমিকদেরও ছাড়েনি এরা। এই সরকারের দুর্নীতির জন্য চা বাগান বন্ধ হচ্ছে। শ্রমিকদের হাতে কাজ নেই। পিএফ নিয়ে যা হয়েছে সেটা ঠিক নয়। গরিব মানুষকে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। আর তৃণমূল সরকার এই দোষীদের বাঁচাচ্ছে। কিন্তু বিজেপি এটা হতে দেবে না। রাজনীতি নিজের জায়গায়, কিন্তু গরিব-দলিত- পিছিয়ে পড়া শ্রেণি-মহিলাদের সঙ্গে কেন রাজনীতি করছে তৃণমূল? ওবিসি নিয়ে যে যে সুবিধা আছে তা বাংলায় লাঘুই হতে দেয় না। একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্য সরকার এখানে চালু করে না।
বাংলার কোনও লোক যদি বেঙ্গালুরু, দিল্লিতে যায় তখন ফ্রি চিকিৎসা দেয় না। কারণ আয়ুষ্মান কার্ড তো তৃণমূল তৈরি করেই দেয় না। বৃদ্ধ লোকজনরা মুক্ত চিকিৎসার সুবিধা পান। কিন্তু তৃণমূল সরকার এটা করতে দিচ্ছে না এই রাজ্যে।
বিজেপি সরকার গোটা দেশে ঘর তৈরি করে দিচ্ছে গরিবদের। কিন্তু এখানে সরকার করতে দেয় না। কারণ তৃণমূলের লোক এই টাকা থেকে কাটমানি খায়। কেন তৃণমূল এত নির্মম? এখানকার নির্মম সরকারের যা উদাহরণ দিই সব কম।
রাজ্যে বিশ্বকর্মা ভাই-বোন আছে। যাদের শৈল্পিক সত্বা অসাধারণ। বিজেপি বিশ্বকর্মা যোজনা এনেছে। এই প্রকল্পে লোকজন ট্রেনিং পান, টুলকিট পান। কিন্তু এ রাজ্যের আট লক্ষ অ্যাপ্লিকেশন আটকে আছে।
তৃণমূল গরিব আদিবাসীর বিকাশ হতে দেয় না। পিএম জন্ম যোজনা লাঘু হতে দেয় না। তৃণমূল আদিবাসী সমাজের সম্মানের কথা ভাবে না। ২০২২ সালে এনডিএ এক আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্বাচন করেন, তখন এই তৃণমূল বিরোধিতা করে। আদিবাসীদের সঙ্গে এদের কোনও সম্পর্ক নেই।
নীতি আয়োগের বৈঠকে গরিব মানুষের বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু বাংলার সরকার উপস্থিতই ছিল। সব দলের নেতারা ছিল। আমরা সবাই মিলে চর্চা করেছি। কিন্তু তৃণমূল তো ২৪ ঘণ্টাই রাজনীতি করতে ব্যস্ত।
কেন্দ্র সরকারের যে যে যোজনা এখানে আছে সেগুলোই পুরোপুরি দেয় না। কেন্দ্র ৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কথা ছিল। কিন্তু হল না। ৪০০ কিমি রাস্তাও হয়নি। এতে তো রোজগারও হয়।
কোথাও হাইওয়ে, কোথাও মেট্রো, কোথাও রাস্তা অর্ধেক তৈরি হয়ে রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের জন্য হয় না।
দুর্নীতির প্রভাব গরিব মানুষের উপর পড়ে। আর তার উদাহরণ দেখলাম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে। এই সরকার হাজার হাজার শিক্ষককে অসহায় করে দিল। অন্ধকারে তাঁদের ভবিষ্যত ঠেলে দিল। এটা হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যত নিয়ে খেলা নয়। বরং রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করা হল। এত বড় পাপ তৃণমূলের নেতারা করল। আর অদ্ভুতভাবে এরা নিজেদের দোষ মানছে না। উল্টে আদালতকে দোষী বলছে?
দেশের সকল নাগরিক বাংলার উন্নয়ে কাজ করেছে। বাংলাকে স্বমহিমায় ফিরতে হবে। বাংলার যুবদের সকলকে বাংলার ভবিষ্যত ঠিক করতে হবে। বাংলা একাধিক সঙ্কটে জড়িত। একটা হল সমাজে হিংসা ও অরাজকতা। দ্বিতীয়, মা-বোনেদের সুরক্ষা নেই। তৃতীয়, বেকারত্ব। চতুর্থ, দুর্নীতি। এখানের সিস্টেমের উপর জনগণের ভরসা নেই। পঞ্চম, গরিবের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া পার্টি।
এখানে মুর্শিদাবাদ-মালদহে যা হয়েছে তা তৃণমূল সরকারের নির্মমতার উদাহরণ। গরিব মায়ের সব পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে গিয়ে গুণ্ডামিকে প্রশয় দেওয়া হচ্ছে। লোকেদের ঘর চিহ্নিত করে জ্বালিয়েছে। পুলিশ তখন তামাশা দেখছে। আমি বাংলার জনতাকে জিজ্ঞাসা করছি সরকার এইভাবে চলে? এখানের মানুষের কি কিচ্ছু এসে যায় না। বারবার খালি কোর্টে যেতে হয় যে কোনও কিছুর জন্য। বাংলার জনতার এখন এই সরকারের উপর ভরসা নেই। এখন জনতা কোর্টের উপর বিশ্বাস করে। বাংলায় চলছে নির্মম সরকার
মা-বোনের মাথার সিঁদুর পাকিস্তান মিটিয়েছিল। তার বদলা নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আমার সামনে হাজার হাজার সংখ্যায় বিজেপি কর্মকর্তারা আগামী দিনে অপারেশন সিঁদুরের মতো মোদীজীর সৈনিক হয়ে অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ করে তৃণমূলকে উৎখাতকে বঙ্গোপসাগরের জলে ফেলবে। তাদের ধন্যবাদ। এই সরকার আসার পর উত্তরবঙ্গের মানুষকে মানুষ মনে করেছে। রাজ্যে যখন বন্দে ভারত চালু হল, সেই সময়ও কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ চালু হল। আমরা ভেবেছিল কলকাতা থেকে অন্য কোথাও হবে। যেদিন উদ্বোধন করেন মোদী সেদিন তাঁর মাতৃবিয়োগ হয়। তারপরও তিনি উদ্বোধন হয়।
কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদে গিয়ে দেখছি বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। এদের দোষ মাথায় সিঁদুর আর গলায় তুলসীর মালা পড়ে। তাই এখন কাশ্মীর আর মুর্শিদাবাদ এক হয়ে গিয়েছে। ছাব্বিশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উৎখাত করতে হবে।
এই উত্তরবঙ্গকে গত ১৪ বছর ধরে লুঠ করছে, যাঁরা তোষণের রাজনীতি করছে, সেই হিন্দু বিরোধী তৃণমূল সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে মোদীর সরকার গঠন করতে হবে। উত্তরবঙ্গে প্রকৃতি মা নদী, সৌন্দর্য, চা দিয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল সব ধ্বংস করেছে। বালি পাচার, অরণ্য ধ্বংস করেছে। আর চা বাগানের শ্রমিকরা এখন বাংলা ছেড়ে কেরল চলে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিএসএফ-কে জমি দেয়নি। রোহিঙ্গাদের জামাই আদর করে রাখা হচ্ছে। মমতা ও তাঁর ভাইপোকে উপড়ে ফেলতে হবে। এটাই হোক সংকল্প র্যালির সংকল্প। এই বিরাট সভা প্রমাণ করছে বাংলা মোদীর সঙ্গে আছে। পহেলগাঁওয়ের বদলা কেউ নিয়ে থাকেন তাহলে তাঁর বদলা নিয়েছেন মোদী–মোদী—মোদী।
কোচবিহার থেকে প্রধানমন্ত্রীর সভায় আসার পথে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। মোদীর সভায় আসার পথে বিজেপি কর্মীদের বাস ভাঙচুরের অভিযোগ। কোচবিহারের পানিশালা থেকে বিজেপি কর্মীরা বাসে সভায় আসার চেষ্টা করছিলেন। পথেই হঠাৎ করে হামলা হয়। বাসের সামনের কাচ ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। এই বাস নিয়ে আর কর্মীরা সভাস্থলে আসেনি। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, আসলে প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে ভীত সন্ত্রস্ত তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিস্তারিত আসছে: মোদীর সভায় আসার পথে বিজেপি কর্মীদের বাস ভাঙচুর!
বাসে ভাঙচুর
বাংলার সকলকে নমস্কার। আলিপুরদুয়ারের কাছে ভূটান-অসম-জলপাইগুড়ির সৌন্দর্য আছে। আজ ভারত বিকশিত। বাংলার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র সরকার গতি আনার চেষ্টা করছে। ভারতের ভবিষ্যতের ভীত বাংলা। এই ভীতেই আরও একটা ইট যুক্তের কাজ হল। সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রজেক্টের উদ্বোধন হল। এই প্রজেক্টে সস্তায় গ্যাসের পাইপলাইন মিলবে। পরিবার গুলি সুরক্ষিত গ্যাস সাপ্লাই পাবে। এতে পয়সা, সময় বাঁচবে। এই প্রজেক্ট পাইপলাইন প্রোজেক্ট নয়, এটা ডোর স্টেপ ডেলিভারির উদাহরণ। এটা অভূতপূর্ব।
এখন ৫৫০ এর বেশি জেলায় এই সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন পৌঁছে গেছে। CNGর জন্য দেশে দূষণ কমছে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনাতে পরিবর্তনে গতি এসেছে। এই যোজনা কোটি কোটি গরিব মানুষের জীবন সহজ হয়েছে। মহিলাদের সুবিধা হয়েছে। ২০১৭ সালে ১৪ কোটির কম মানুষ এলপিজি কানেকশন পেতেন না। এখন সেটা ৩০ কোটির বেশি হয়েছে। গ্রামে গ্রামে এখন গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায়।
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সংস্কৃতীর বড় কেন্দ্র। বিকশিত ভারতের স্বপ্ন বাংলার উন্নয়ন ছাড়া সম্ভব নয়। সেই কারণে কেন্দ্র বদ্ধ পরিকর এখানকার বিকাশ নিয়ে। কেন্দ্র সরকার বাংলার বিকাশের জন্য সব করছে। আজ যে প্রোজেক্ট শুরু হল তাও উন্নয়ন করবে। বাংলা বিকশিত হওয়ার জন্য এগিয়ে যাক। আমি সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। পাঁচমিনিটের মধ্যেই আমি খোলা মঞ্চে যাব। তারপরই বাকিটা ওইখানেই বলব।
যত সময় গড়াচ্ছে উত্তেজনার চড়ছে পারদ। ‘অপারেশন সিঁদুরের’ পর এই প্রথম বঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সভা আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে। বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস বলেন, “প্রচুর মানুষ এই সভাতে আসবেন। এই সভা নিয়ে প্রত্যেকেই উত্তেজিত।জেলার ব্লকগুলি থেকে লোকজন আসতে শুরু করেছেন। প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হবে।”