‘হামকো ভি ডুবা দেগা’, কংগ্রেসের নাম শুনেই হাত জোড় করে বললেন পিকে

Prashant Kishor: আর কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করবেন না বলে জানিয়ে দিলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু কেন? কী বললেন তিনি?

'হামকো ভি ডুবা দেগা', কংগ্রেসের নাম শুনেই হাত জোড় করে বললেন পিকে
দুইবার কংগ্রেসে প্রায় যোগ দিয়ে ফেলেছিলেন পিকে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 01, 2022 | 2:41 PM

নয়া দিল্লি: মাত্র সপ্তাহ খানেক আগেই প্রায় কংগ্রেস দলে যোগ দিয়ে ফেলেছিলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তবে, শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বনিবনা না হওয়াতেই সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়। মঙ্গলবার অবশ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই রীতিমতো হাত জোড় করে পিকে জানালেন, তিনি কখনও আর কংগ্রেস দলের সঙ্গে কাজ করবেন না। কেন? প্রশান্ত বলেন, ‘হামকো ভি ডুবা দেগা’ (আমাকেও ডুবিয়ে দেবে)! তাঁর মতে, কংগ্রেস দল নিজেও ডুববে এবং তাদের সঙ্গে যারা যারা হাত মেলাবে, তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ডুববে।

পিকে এখন একটি বিকল্প সরকার সম্পর্কে জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য বিহারের গ্রামে গ্রামে সফর করছেন। মঙ্গলবার তিনি বৈশালীতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশপ্রসাদ সিংকে শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত এক সমাবেশে ভাষণ দেন। সেখানেই তাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালে, আমরা বিহারে জিতেছি। ২০১৭ সালে, জিতেছি আমরা পঞ্জাবে। ২০১৯ সালে অন্ধ্র প্রদেশে জিতেছেন জগন্মোহন রেড্ডি। আমরা তামিলনাড়ু এবং বাংলাতেও জিতেছি। গত ১১ বছরে, আমরা শুধুমাত্র একটি নির্বাচনে হেরেছি… ২০১৭ সালের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন। তাই আমি কখনই আর কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কংগ্রেস এমন একটি দল যারা কখনই একত্রিত হতে পারবে না। বর্তমান কংগ্রেসের নেতারা এমনই যে তাঁরাও নেমে যাবেন এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন। আমি গেলে আমিও ডুবে যাব।’

পিকে কংগ্রেসে যোগ না দিলেও, রাজস্থানের উদয়পুরে ‘চিন্তন শিবির’ আয়োজন করে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে কংগ্রেস। চিন্তন শিবিরের সংকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী তিনটি পৃথক কমিটিও গড়েছেন। নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ‘টাস্ক ফোর্স ২০২৪’-এ রাখা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের প্রাক্তন সঙ্গী সুনীল কানুগোলুকেও। তবে, পিকে আগেই কংগ্রেসের ‘চিন্তন বৈঠক’ ‘ব্যর্থ’ বলে জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে আসন্ন গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশের নির্বাচনে কংগ্রেস দলের ভরাডুবি ঘটবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন।

এর আগে অবশ্য দু-দু’বার কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার খুব কাছাকাছি এসেছিলেন পিকে। ২০২১ সালে তিনি গান্ধী পরিবারের সদস্যদের সামনে কংগ্রেসকে ফের শক্তিশালী করার বিষয়ে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। সূত্রের খবর, সেই সময় তিনি কংগ্রেস দলের একজন ‘অ-গান্ধী’ কার্যনির্বাহী সভাপতি বা সহ-সভাপতি নিয়োগের সুপারিশ করেছিলেন। পাশাপাশি রাহুল গান্ধীকে দলের সংসদীয় বোর্ডের প্রধান করার কথা বলেছিলেন। চলতি বছরে তিনি আবার কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতাদের সামনে, শতাব্দী-প্রাচীন দলটিকে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে ৬০০ টি স্লাইড দেখিয়ে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। শোনা যায়, সেই পরিকল্পনা নিয়ে কংগ্রেস নেতারা বহু আলোচনা করলেও, কাজের কাজ কিছু হয়নি। সূত্রের খবর, পিকে-কে দলের ‘এমপাওয়ার্ড অ্যাকশন গ্রুপ’-এর (পদস্থ নেতাদের এক গোষ্ঠী) সদস্য হিসেবে পার্টিতে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই গোষ্ঠীর কোনও কর্তৃত্বই নেই বলে, সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পিকে। তারপর থেকে তিনি ধারাবাহিকভাবে কংগ্রেস দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে চলেছেন।