নয়া দিল্লি: বারবার অকারণে যদি স্বামী বা স্ত্রী’র বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তাহলে তা এক ধরনের নিষ্ঠুরতা। আর এই ধরনের আচরণ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য যথেষ্ট। হিন্দু বিবাহ (Hindu Marriage Act) আইনে এই কারণের পরিপ্রেক্ষিতে ডিভোর্স (Divorce) হওয়া সম্ভব বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না, এমন কারণ দেখিয়ে বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন স্বামী। ২০ বছর পরও তাঁদের ডিভোর্স হয়নি। সেই মামলাতেই বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করেছে শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। ওই মামলার শুনানিতেই বিচারপতিরা জানান, অকারণে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী’র বারবার মামলা করা অন্যতম কারণ। সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কাউল ও বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের বেঞ্চে হয় এই মামলার শুনানি।
এই মামলায় বিয়ের একদিন পরই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। তিনি দাবি করেছিলেন, বিয়েতে তাঁর মত নেওয়া হয়নি তাই স্বামীর সঙ্গে তিনি থাকতে পারবেন না। এই ঘটনার দিন ১৫ পর বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন স্বামী। ট্রায়াল কোর্টে সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়। কিন্তু সেই আবেদন স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট। স্ত্রী বিবাহ বহাল রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন। হাইকোর্টে মঞ্জুর হয় স্ত্রী’র আবেদন।
আরও পড়ুন: টিকা নেওয়ার ঠিক কতদিন পর থেকে কমছে অ্যান্টিবডি? রিপোর্ট প্রকাশ করল ICMR
শীর্ষ আদালত দেখেছে যে এই মামলায় স্ত্রী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছেন। স্বামীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছিল স্ত্রী। তাঁর স্বামী দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছেন কি না, স্বামী অন্য কারও সঙ্গে সহবাস করছেন কি না, তা আদালতে জানতে চান স্ত্রী। স্বামী সহকারী অধ্যাপক হিসেবে একটি কলেজে চাকরি করেন। সেখানে গিয়ে হুমকি দিতেও দেখা গিয়েছে স্ত্রী’কে। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, এই সব কারণগুলিতে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন ছিল হাইকোর্টের।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, দু’জনের মধ্যে যদি বনিবনা না হয়, তাহলে সেই কারণে বিচ্ছেদ হওয়া সম্ভব। এই কারণে যাতে বিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর হয়, সেই সুপারিশ বহুদিন আগেই করেছে ল কমিশন। কিন্তু হিন্দু মতে মনে করা হয়, স্বর্গে নির্ধারিত হয় দাম্পত্য। এ ছাড়া একজন বিবাহ বিচ্ছিন্ন মহিলাকে সমাজে অনেক বাধা বিপত্তির মুখে পড়তে হয়। বিচারপতিদের মতে, এখনও মহিলাদের সেই আর্থ সামাজিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হয়নি, যাতে এই কারণ দেখিয়ে ডিভোর্স হয়। এই মামলায় অবশ্য বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিচ্ছেদ মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
দুই পক্ষের আবেদন খতিয়ে দেখে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে ১৪২ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ডিভোর্সের আবেদন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য কারণ বাদ দেওয়া হলেও দুই পক্ষ বনিবনা না হওয়ার কথা স্বীকার করে। এ ক্ষেত্রেও সেই কারণ গৃহীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: TET উত্তীর্ণদের জন্য সুখবর! নিয়োগ নিয়ে বড় ঘোষণা পর্ষদের, জারি হল বিজ্ঞপ্তি