TET উত্তীর্ণদের জন্য সুখবর! নিয়োগ নিয়ে বড় ঘোষণা পর্ষদের, জারি হল বিজ্ঞপ্তি
TET 2014: ২০১৪ সালে টেট (TET) উত্তীর্ণ ৪৬৭ জনকে চাকরির জন্য ডাকল পর্ষদ। এই ৪৬৭ জন অনলাইনে আবেদন জমা করতে পারেননি।
কলকাতা: সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ডেকে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতিকে। শিক্ষক নিয়োগের জটিলতার জেরেই এই তলব! এরই মধ্যে চাকরি প্রার্থীদের (TET) জন্য সুখবর শোনাল ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব প্রাইমারি এডুকেশন। ৪৬৭ জন টেট উত্তীর্ণকে স্ক্রুটিনি, তথ্য যাচাই ও ভাইভার জন্য ডেকে পাঠানো হল। সোমবার এই মর্মে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকাও।
২০১৪ সালে টেট (TET) উত্তীর্ণ ৪৬৭ জনকে চাকরির জন্য ডাকল পর্ষদ। এই ৪৬৭ জন অনলাইনে আবেদন জমা করতে পারেননি। তাঁদের অফলাইন আবেদনকে মান্যতা দিয়েই স্ক্রুটিনির জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর (২০.০৯.২০২১) ও ২১ সেপ্টেম্বর (২১.০৯.২০২১) এই স্ক্রুটিনি, তথ্য যাচাই ও ভাইভা হবে। কলকাতা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল, শিক্ষা ভবনে এই পর্ব চলবে।
২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অফলাইন আবেদনের ভিত্তিতেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এই ৪৬৭ জনই ২০১৪ সালে টেট পাশ করেছেন। প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বরের নিয়োগ সংক্রান্ত নোটিসের ভিত্তিতেই তাঁদের ডাকা হয়েছে।
কী কী নথি সঙ্গে আনতে হবে ১. টেটের অ্যাডমিট কার্ড ২. টেট কোয়ালিফিকেশনের ডাউনলোড করা ডকুমেন্ট ৩. মাধ্যমিক বা সমগোত্রীয় পরীক্ষার অরিজিনাল অ্যাডমিট কার্ড ৪. মাধ্যমিক বা সমগোত্রীয় পরীক্ষার অরিজিনাল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ৫. উচ্চ মাধ্যমিক বা সমগোত্রীয় পরীক্ষার অরিজিনাল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ৬. ট্রেনিং কোয়ালিফিকেশনের অরিজিনাল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ৭. গ্র্যাজুয়েশনের অরিজিনাল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট ৮. অরিজিনাল কাস্ট সার্টিফিকেট
চলতি বছরের শুরুতেই টেট সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছিল, যত বেশি শিক্ষক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত বেশি ভাল শিক্ষক পাওয়া যাবে। গত ২৩ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে আগামী ৩১ জানুয়ারি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তার আগে হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল ২৯ জানুয়ারি অফলাইনে আবেদন করার সুযোগ পাবেন মামলাকারী টেট পরীক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ভুলের কারণে যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, এবং পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের টেট উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়, সেই উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সমস্ত নথি যাচাইয়ের জন্য সময় দেওয়া হয়। যদি অনলাইনে অসুবিধা হয় সেক্ষেত্রে ওই মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীরা সরাসরি নথি জমা করতে পারবেন বলেও জানানো হয়।
সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল থাকার জন্য ২০১৮ সালে বিচারপতি (Calcutta High Court) সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ভুল প্রশ্নের উত্তর যারা দিয়েছেন তাদের পূর্ণাঙ্গ নম্বর দিতে হবে। কিন্তু পর্ষদ তা করেনি। যা আদালত অবমাননার শামিল বলেই মনে করে আদালত। এ নিয়ে মামলাও হয়। পর্ষদ সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়, প্রত্যেক মামলাকারীকে জরিমানা দেবেন তিনি।
পাশাপাশি ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, মানিক ভট্টাচার্যকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে। সেই মতো সোমবারই হাজিরা দেন তিনি। এদিকে ১০ তারিখের আদালতের নির্দেশের পরই নিয়োগপত্র হাতে পান মামলাকারী নীলোৎপল গুছাইত। স্কুল শিক্ষা দফতর তা নিয়োগপত্র তাঁর হাতে তুলে দেয়। আদালত কক্ষে মানিক ভট্টাচার্য বলেন, “এটা আমার দুর্ভাগ্য, যে আমাকে আদালতের সামনে হাজিরা দিতে হচ্ছে। মামলাকারীরা আমার সন্তান সম।” এরই মধ্য়ে পর্ষদের নতুন নিয়োগ নিয়ে এই বিজ্ঞপ্তি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।