টিকা নেওয়ার ঠিক কতদিন পর থেকে কমছে অ্যান্টিবডি? রিপোর্ট প্রকাশ করল ICMR
Covid Vaccine: কোভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ড উভয় টিকার ক্ষেত্রেই এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে টিকার নেওয়ার পরও করোনা সংক্রমণ দেখা গিয়েছে।
ভুবনেশ্বর: করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অ্যান্টিবডি কমে যাচ্ছে শরীরে। এমন নজির বিশেষজ্ঞদের চোখে পড়েছে আগেই। এবার আইসিএমআর(ICMR)-এর সমীক্ষায় অনুসন্ধান করা হল, ঠিক কত দিন পর অ্যান্টিবডি কমতে শুরু করে। মূলত কোভ্যাকসিন (Covaxin) ও কোভিশিল্ড (Covishield) টিকার ক্ষেত্রেই এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। আর তাতে দেখা গিয়েছে, দুই ক্ষেত্রেই ভ্যাকসিন নেওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই অ্যান্টিবডি কমতে শুরু করে অর্থাৎ করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা হারাতে শুরু করে শরীর। ফলে, নতুন করে সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি ভুবনেশ্বের আইসিএমআর (ICMR)-এর আঞ্চলিক শাখা আরএমআরসি-তে সেই সমীক্ষা চালানো হয়েছে।
আইসিএমআর(ICMR) ও আরএমআরসি (RMRC)-র তরফে গবেষক ড. দেবদত্ত ভট্টাচার্য বলেন, মোট ৬১৪ জন টিকাপ্রাপ্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৩০৮ জন কোভিশিল্ড নিয়েছেন ও ৩০৬ জন কোভ্যাকসিন নিয়েছেন। এর মধ্যে ৮১ জনের ক্ষেত্রে ব্রেক-থ্রু ইনফেকশন অর্থাৎ ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরও করোনা সংক্রমণ হতে দেখা গিয়েছে। বাকি ৫৩৩ জনের ক্ষেত্রে কোনও সংক্রমণ না হলেও অ্যান্টিবডি কমে যেতে দেখা গিয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
গবেষক জানিয়েছেন, যাঁরা কোভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ২ মাস পর থেকে ও যাঁরা কোভিশিল্ড নিয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ৩ মাস পর থেকে অ্যান্টিবডি কমতে দেখা গিয়েছে। তবে এই সমীক্ষা এখানেই শেষ করছে না আইসিএমআর। অন্তত টিকা নেওয়ার ২ বছর পর পর্যন্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা থাকে, তা খতিয়ে দেখা হবে। আইসিএমআরের ভুবনেশ্বর শাখার ডিরেক্টর সঙ্ঘমিত্রা পতি জানিয়েছেন, ৬ মাস পর ফের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখা হবে। তারপরই বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা কতটা, তা বলা সম্ভব।
আরও পড়ুন: সময়ের অপেক্ষা! কোভ্যাকসিনকে জরুরিভিত্তিক অনুমোদন দিতে চলেছে WHO
এর আগে ভুবনেশ্বেরের একটি গবেষণার টিমের সদস্যদের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁদের মধ্যে ২৩ শতাংশের শরীরে কোনও আ্যান্টিবডি নেই। অর্থাৎ অ্যান্টিবডি রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে। এদের প্রত্যেকেরই ভ্যাকসিনের দুটি করে ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে। চিককৎসকদের ব্যাখ্যা, ভারতে করোনার যে দুটি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, অর্থাৎ কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। তাই ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টিকাপ্রাপ্তের শরীরে আ্যান্টিবডি তৈরি নাও হতে পারে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে এলে তবেই আইসিএমআর বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে অনুমোদন দিতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষকের দাবি, কোভিশিল্ড নেওয়া থাকলে কোন ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে, স্পুটনিক ভি নেওয়া থাকলে কোভিশিল্ড বা কোভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়েই চলছে গবেষণা।
আরও পড়ুন: অপচয় হচ্ছে করোনা টিকা, কেন্দ্রের পাঠানো ডোজ়ের বড় অংশ অবহেলায় পড়ে একাধিক রাজ্যে