অফিসে গিয়ে রোজ ঝামেলা লেগেই আছে? পাশের চেয়ারের সহকর্মীটি কি খুব খিটখিটে মেজাজের। সব সময় তাঁর মেজাজ উপরের দিকে থাকে। কারও সঙ্গেই ভাল ভাবে কথা বলতে পারেন না? দোষটা কিন্তু তাঁর স্বভাবের নাও হতে পারে।
বরং এর দায় হতে পারে অফিসেরই। অফিসের কাজের চাপ নয়, খারাপ মেজাজের কারণ কিন্তু হতে পারে অফিসের ভুল বাস্তু। বাস্তু শাস্ত্র মতে, যে অফিসে বসে আপনি কাজ করছেন, সেই অফিসের নকশা কেমন তার উপরে কিন্তু নির্ভর করে অফিস কর্মীদের মেজাজ কেমন থাকবে তা অনেকটা নির্ভর করে। এমনকি আপনার আচরণ কেমন হবে তাও নির্ভর করে। সঙ্গে তেমনটাই মত, বিজ্ঞানেরও।
সুইডেনের এক মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় উঠে এসেছে তেমন তথ্য। কী বলছে সেই গবেষণা? আগেকার মতো খোলামেলা আলো-হাওয়া খেলা অফিস এখন বিরল। সরকারি অফিসে কোথাও কোথাও থাকলেও সেই সব জায়গা এসি বসার কারণে বদ্ধ থাকে।
কর্পোরেটে অফিসে তো আবার কম্বি, ফ্লেক্স বা কিউবিকেল ধরনের ধাঁচ। ফ্লেক্স অফিসে আবার কারও জায়গা স্থির থাকে না। যে যেখানে জায়গা পান, সেখানে বসে কাজ করেন। আজ এখানে তো কাল ওখানে।
কম্বি-অফিস একটু অন্য রকম। এই ধরনের অফিস নকশায় কর্মীদের কাজের জন্য স্থান নির্দিষ্টই। কিন্তু, সেই নির্দিষ্ট স্থানে প্রত্যেক কর্মীকে দলগত ভাবে কাজ করতে হয়। অর্থাৎ, আলাদা ধরনের কাজের জন্য আলাদা দল। প্রত্যেক দলের জন্য অফিস ফ্লোরে আলাদা আলাদা স্থান।
এই ধরনের অফিস কর্তৃপক্ষের জন্য সুবিধা হলেও, গবেষণা বলছে এতে কিন্তু বিব্রত বোধ করেন মহিলা কর্মীরা। এই নকশা তাঁদের মধ্যে মানসিক অস্বস্তি তৈরি করে। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। সহকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা করে ফেলেন।
গবষণা বলছে বড় খোলামেলা অফিস, যেখানে সবাই মিলে হইহুল্লোড় করতে করতে কাজ করতে পারেন সেই পরিবেশ বেশি পছন্দ করেন মহিলা থেকে পুরুষ সকলেই। এই ধরনের অফিসে ঝগড়াঝাটির সংখ্যা কম। এই অফিসে পুরুষকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়ানোর সম্ভাবনা ১২-১৭%। মহিলা কর্মীদের মধ্যে ঝামেলায় জড়ানোর প্রবণতা ৮%।
উল্টোদিকে, কম্বি বা ফ্লেক্স ডিজাইনের অফিসে কাজের সময় হই চই বেশি হলে মহিলারা বেশি সমস্যায় পড়েন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই ধরনের অফিসে মহিলা কর্মীদের মধ্যে ৬০% বেশি হই হুল্লোড় পছন্দ করেন না। পুরুষদের মধ্যে সেই সংখ্যাটা ৪৬%। তাই অনেকেই মনে করছেন আগের অফিস ভাল ছিল। যদিও নব প্রজন্মের মধ্যে আবার নতুন ধরনের অফিস নিয়ে খুব একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।