Bihar Political Crisis : দীর্ঘ দুই মাস ধরে অঙ্ক কষে সমীরণ মিলিয়েছেন নীতীশ-লালু, ফাঁস করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী

Bihar Political Crisis : মঙ্গলবার বিহারে পতন ঘটে জেডিইউ-বিজেপি সরকারের। তবে রাতারাতি এই ঘটনা ঘটেনি। গত দুই মাস ধরে বিভিন্ন দফায় তিন দলের মধ্যে আলোচনা হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।

Bihar Political Crisis : দীর্ঘ দুই মাস ধরে অঙ্ক কষে সমীরণ মিলিয়েছেন নীতীশ-লালু, ফাঁস করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 10, 2022 | 3:40 PM

পটনা : গতকালই বিহারে বিজেপি-জেডিইউ সরকারের পতন ঘটেছে। ফের বিহারে রাজ করবে ‘চাচা-ভাতিজা’ সরকার। আজই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করবেন নীতীশ করবেন। আর তাঁর ডেপুটি হবেন আরজেডি-র তেজস্বী যাদব। তবে এটা কোনও দু’দিনের ঘটনা নয়। বিহারে ফের ‘নীজস্বী’ (নীতীশ-তেজস্বী) সরকার গঠনের ইঙ্গিত মিলেছিল অনেক আগেই। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ-র ফাটল চওড়া হচ্ছিল। বিগত বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বিজেপির থেকে দূরে গিয়ে আরজেডির কাছাকাছি থাকতে দেখা গিয়েছিল নীতীশকে। তাহলে আরজেডির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠনের চিত্রনাট্য কি তখন থেকেই একটু একটু করে লিখছিলেন নীতীশ কুমার। সেই নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

অগ্নিপথ থেকে জাতিশুমারি মতো বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধী দল আরজেডি-র সুরে সুর মেলাতে শোনা গিয়েছিল জেডিইউ তথা নীতীশ কুমারকে। গত এপ্রিলে আরও কাছাকাছি আসে নীতীশ ও তেজস্বী যাদব। এপ্রিল মাসে আরজেডি-র ইফতার পার্টিতে দেখা গিয়েছিল নীতীশ কুমারকে। এদিকে আরজেডি-র যতটা ঘনিষ্ঠ হচ্ছিলেন নীতীশ কুমার। বিজেপির থেকে ততটাই দূরে সরে যাচ্ছিলেন। অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়েও সেই দূরত্ব চোখ এড়ায়নি। এরপর রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে নীতী আয়োগের বৈঠক, গরহাজির থেকেছেন নীতীশ কুমার। এই গোটা ঘটনাপ্রবাহতেই বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছিল। এরপর মঙ্গলবার রাতারাতি সরকার পড়ে যায় বিহারে। বিধায়ক-সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পর এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানান নীতীশ। এরপর আরজেডি, কংগ্রেসকে সরকার করার দাবিও পেশ করেছেন তিনি। আজ মহা গাঁট বন্ধন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন নীতীশ কুমার। আর তেজস্বী হবেন ডেপুটি।

তবে এই গোটা নাটকের চিত্রনাট্যই লেখা হচ্ছিল বিগত দুই মাস ধরে। জানা গিয়েছে, বিহারে সরকারের পালাবদল নিয়ে গত দু’ মাস ধরে লালু প্রসাদ যাদব, নীতীশ কুমার ও কংগ্রেসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল। বিভিন্ন দলের দফতর বণ্টন চূড়ান্ত করার পরই বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে দেন নীতীশ। আগে জমি শক্ত করে নিয়েছিলেন নীতীশ। তারপর চমক দিয়ে সরকার পতনের ঘোষণা। আর এই জমি শক্তি করার প্রক্রিয়াই চলছিল বিগত দু’ মাস ধরে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রাক্তন মন্ত্রী জানিয়েছেন, নীতীশ ও লালুর মধ্যে ১৫ দিন আগেই চুক্তি হয়েছিল। তিনিই জানিয়েছেন, দুই মাস ধরে তিন দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গোপনে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে।

তবে বিজেপিও নীতীশের গতিবিধির উপর কড়া নজর রেখেছিল। গতকাল বিজেপির তরফে জানানো হয় তাঁরাও জেডিইউ-র সঙ্গে জোটে থাকতে চান না। তাঁরা আশাবাদী আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিহারে ভাল ফলাফল করবে। তবে প্রথম থেকেই নীতীশের আরজেডি-র প্রতি ঘেঁষা চোখে পড়েছিল বিজেপির। এদিকে গত ২২ এপ্রিল রাবড়িদেবীর বাসভবনে ইফতার পার্টির পর লালু যাদবের বড় ছেলে তথা আরজেডি বিধায়ক তেজ প্রতাপ যাদব দাবি করেছিলেন শীঘ্রই বিহারে সরকার গঠন করতে চলেছে আরজেডি। উল্লেখ্য, সেই ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন নীতীশ কুমারও। অর্থাৎ, তলে তলে যে পরিকল্পনা দু’মাস ধরেই হয়েছে তার ইঙ্গিত স্পষ্ট।